এনবি নিউজ একাত্তর-
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে স্কুলছাত্র আশিকুর রহমান সাম্য (১৪) হত্যা মামলার রায়ে অভিযুক্ত ১৩ জনের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যুদন্ড ও ৮ জনের প্রত্যেকের ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং একলাখ টাকা জরিমানা আদাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক। রায় ঘোষনার সময় আদালতের কাঠগড়ায় আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন,শাহারিয়া রিহৃয়, রাকিবুল হাসান সজিব ও মাহমুদুল হাসান জাকির। অপর সাজাপ্রাপ্ত ৮ জন হলেন, মাছুদ রানা, আলামিন, রাবেয়া বেগম, শিমুল মিয়া, তহিদা আকতার রুনা, আলামিন, জাহাঙ্গির আলম ও জয়নাল আবেদিন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি শফিকুল ইসলাম বলেন,‘ এর আগে, গত ৬ই জানুয়ারি গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক আদালতে উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।’
তিনি বলেন, পৌর মেয়র এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সরকারের একমাত্র ছেলে আশিকুর রহমান সাম্য (১৪) হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। সাড়ে চার বছর পর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হল। এ মামলায় গোবিন্দগঞ্জে ৪০ দিন এবং গাইবান্ধা জেলা জজ আদালতে ১৭ দিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এই মামলায় এ পর্যন্ত ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার মোট ১১ আসামির মধ্যে ৬ আসামি জেলহাজতে রয়েছে এবং বাকি ৫ আসামি জামিনে ছিলেন। এদিকে, মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল হালিম এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলেন,তারা উচ্চ আদালতের আশ্রয় নিবেন।
প্রসঙ্গত, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আশিকুর রহমান সাম্য ২০১৫ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর ঈদুল আযহার আগের দিন নিখোঁজ হয়। পরদিন ২৫শে সেপ্টেম্বর গোবিন্দগঞ্জের বর্ধনকুঠি বটতলা কমিউনিটি সেন্টারের পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সাম্য’র বাবা ১১ জনকে আসামি করে স্থানীয় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পৌর কাউন্সিলর জয়নাল আবেদিনকে প্রধান আসামি করা হয়। স্কুলছাত্র সাম্য হত্যার পর তার বিচারের দাবিতে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে সাম্যর স্বজন, সহপাঠী ও এলাকাবাসী। এমনকি হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠে সাম্য মঞ্চ।
নিহতের বাবা পৌর মেয়র আতাউর রহমান সরকার রায় ঘোষণার পর আবেগ আপ্লুত হয়ে বাকী আসামীদেরও সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতে আপিলের ঘোষণা দিয়েছেন।