এনবি নিউজ একাত্তরঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের নেশা জাতীয় মাদকদ্রব্য ইয়াবা সেবনকারীরা দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ট্যাবলেট চোরাই পথে নিয়ে এসে নেশা হিসেবে ব্যবহার করত। কিন্তু বাজারে এর চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় এবং প্রশাসনের নজরদারি বেশি হওয়ায় সম্প্রতি মাদকব্যাবসায়ীদের পক্ষে ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আসা কঠিন হয়ে পড়েছে।আর যাও টুকটাক আসছে তারও মূল্য বেশি।
ফলে সেবনকারীদের যখন নেশার মাত্রা বেড়ে যায় তখন ইয়াবা না পেয়ে এসকেএফ ওষুধ কোম্পানির ব্যাথানাশক ট্যাপেন্টা ট্যাবলেটটি নেশা হিসেবে ব্যবহারে শুরু করে। তারা ইয়াবার বিকল্প হিসেবে এখন এ ট্যাবলেট সেবন করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সেবনকারী বলেন, ট্যাপেন্টা ট্যাবলেট সেবন করলে ইয়াবা ট্যাবলেটের মতোই নেশা হয়।ইয়াবার মত নেশা হওয়ায় অনেক মাদকসেবি এখন ব্যাথানাশক টাপেন্টা ট্যাবলেট গ্রহণের দিকে ঝুঁকেছে।
অনেকে ট্যাপেন্টা ট্যাবলেট সেবনে ঝুঁকে পড়ায় সম্প্রতি বাজারে ব্যাথানাশক ট্যাপেন্টা ট্যাবলেটের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেক অসাধু ঔষধ ফার্মেসিয়ান ঔষধ বিক্রির নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কোনো প্রকার ব্যাবস্থাপত্র ছাড়াই বেশি দামে ব্যাথানাশক এ ট্যাপেন্টা ট্যাবলেট বিক্রি করছে।
অনুসন্ধানে জানা যায় বর্তমানে ৫০ মিলিগ্রাম একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৫০ থেকে ৭০ টাকা এবং ১০০ মিলিগ্রাম একটি ট্যাবলেটের মূল্য ৭০ থেকে ১৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।যার কোম্পনি মূল্য ৫০ মিলিগ্রাম প্রতি ট্যাবলেটের দাম ১২ টাকা এবং ১০০ মিলিগ্রাম প্রতিটি ট্যাবলেটের দাম ২২ টাকা।
এমনি উচ্চ মুনাফালোভী ব্যাবস্থাপত্র ব্যাতীত যত্রতত্র নেশাখোরদের হাতে ট্যাপেন্টা তুলে দেওয়ার অভিযোগে এক ঔষধ ফার্মেসিয়ানকে গোবিন্দগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের আভিযানিক দল।এ ক্যাম্প হতে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যায় জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের একটি চৌকস অপারেশনাল দল কোম্পানী অধিনায়ক লেঃ কমান্ডার তৌকিরের নেতৃত্বে রবিবার(০৬-সেপ্টেম্বর) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ বাজারে অভিযান পরিচালনা করে ৭শ’ পিচ ট্যাপেন্টা ট্যাবলেটসহ এক ব্যাক্তিকে আটক করেছে।
র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্প সুত্র জানায় ইতোপূর্বে জয়পুরহাট হতে আটককৃত কয়েকজন মাদক ব্যাবসায়ীকে জিজ্ঞাসা বাদে জানা যায় তাদের অনেকে গোবিন্দগঞ্জ বিভিন্ন ফার্মেসী দোকান থেকে ট্যাবলেট ক্রয় করেন।
আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত ব্যাক্তি স্বীকার করে নেশাজাতীয় ট্যাপেন্টা ট্যাবলেট অবৈধভাবে সংগ্রহ পূর্বক গাইবান্ধা জেলা ও পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদকসেবী ও মাদক কারবারীদের নিকট সরবরাহ করে আসছিলো।
এঘটনায় তার বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ অনুসারে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে র্যাব।
এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা যায় ঔষধের বাজারজাত ও ব্যবসায়ী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে বিক্রি ও এ সমস্থ ট্যাবলেট নেশা হিসেবে গ্রহণ করায় সম্প্রতি কিছু ব্যাথা নাশক ট্যাবলেট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের তফসিলভুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায় ব্যাথা নাশক টাপেন্টাডল জাতীয় ওষুধ মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করায় একে ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এসিআই এর লোপেন্টা, স্কায়ারের পেন্টাডল, অপসোনিনের টাপেন্টাডল, এসকেএফ এর ট্যাপেন্টা যেগুলোতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০১৮ ‘খ’ ৬৫ ধারা মোতাবেক আইনে মামলা দায়ের করা যাবে বলে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।