গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য জননেতা অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের করোনা কালীন দৈনন্দিন কর্মকান্ড সমূহ তুলে ধরা হলো। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবের আগে তিনি মাসে ১০ দিনের বেশী গোবিন্দগঞ্জে থাকতেন আর বাকি প্রায় ২০ দিন ঢাকায় তার পরিবারের সাথে থাকতেন। স্ব-পরিবারে ঢাকায় থাকার একমাত্র কারন ছেলের পড়াশুনা। তিনি সবাইকে প্রায় বলতেন ঢাকায় আমার ভালো লাগে না, গোবিন্দগঞ্জ আমাকে খুব টানে। সরকার লকডাউন ঘোষণার সময় তিনি গোবিন্দগঞ্জে ছিলেন এবং সেই থেকে আজ অবধি গোবিন্দগঞ্জে আছেন। তিনি লকডাউনের প্রথম সপ্তাহ থেকে নিজ উদ্যোগে গরিব, শ্রমিক ও দিনমজুরদের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। সরাসরি তার কাছে কেউ সহায়তা চাইতে গেলে তিনি পকেট থেকে নগত অর্থ দিচ্ছেন। এছাড়া এই দুঃসময়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের সবসময় খোঁজখবর রাখছেন। নিয়মিত সবার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন।
সাবেক এই সাংসদ তার নিজ এলাকা গোবিন্দগঞ্জে ধাপে ধাপে তালিকা ধরে ত্রাণ বিতরণ করছেন। এসব ত্রাণের সব ব্যয় তিনি নিজে বহন করছেন। তবে কিছু সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ব্যক্তিগত ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানেও তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। বর্তমানে তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি শক্ত হাতে দলের হাল ধরেছেন। অবসর সময় কাটছে কৃষি কাজ, হাসমুরগী পালন, মৎস্য চাষ, পশুপালন, বাগান পরিচর্যা ও দেখাশুনার মাধ্যমে। একটু সুযোগে পেলেই ছুটে যাচ্ছেন তার বাগানবাড়িতে। তার বাগানবাড়িতে ৮ জন শ্রমিক মাসিক বেতনে কাজ করে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় বাগানে আম, লিচু, পেয়ারা, পেপে সহ নানা জাতের দেশী-বিদেশী ফলের গাছ আছে।
বিনা আমন্ত্রণে সাংবাদিকরা তার বাগানবাড়িতে প্রবেশ করে দেখেন তিনি শ্রমিকদের সাথে বাগানে কাজ করছেন। যেসব গাছের লিচু পাড়া শেষ হয়েছে সেসব গাছ পাঞ্চিং করছেন। বাগান পরিদর্শনকালে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, আমি রাজনীতির পাশাপাশি কৃষিকাজে বেশ মনোযোগ দিয়েছি। এখন ব্যবসা ও কৃষি থেকে আসা টাকা দিয়েই দল চালাতে হচ্ছে। আর পরিবার চালানো তো আছেই। তিনি সাংবাদিকদের সম্পূর্ণ বাগানবাড়ি ঘুরিয়ে দেখান। তার সাথে কথা বলে জানা যায় প্রতি বছর তিনি কৃষি থেকে ৩০ লক্ষ টাকার বেশী আয় করেন। এবার শুধুমাত্র লিচু বিক্রি করে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। ভবিষ্যতে তিনি কৃষি পরিধি আরও বাড়াতে চান।
সাবেক এই সাংসদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কলা বলে জানা যায়, তারা এই করোনা পরিস্থিতিতে তাকে নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন আছে। নিয়মিত ব্যক্তিগত অফিসে বসছেন, নেতাকর্মীদের সাথে দেখা করছেন, ত্রাণ দিতে ছুটে যাচ্ছেন, আবার কৃষিকাজের খবর রাখছেন এমতাবস্থায় সবসময় নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা সম্ভব হয় না। পরিবারের সদস্যরা তাকে ব্যক্তিগত সুরক্ষার কিছু পরামর্শ প্রদান করলেও তিনি সেগুলোর ধারে কাছে দিয়ে যাচ্ছেন না। তার মেয়ে গোবিন্দগঞ্জের সরকারি কলেজের প্রভাষক কাশফী আজাদ বলেন, আমার বাবা একজন রাজনীতি প্রেমী ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। তাই আমাদের সবার উচিৎ সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে তার সাথে সীমিত পরিসরে ও সংক্ষিপ্ত সময়ে সাক্ষাৎ করা। তাতে আমরা নিজেরা ভালো থাকবো, আবার তাকেও ভালো রাখতে পারবো।