সফিকুল ইসলাম শিল্পী, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: সকালে ঘন
কুয়াশায় মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় কাগজের কার্টন,
টায়ার ও কাগজে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যায় ছিন্নমূল মানুষকে।
এমন বৈরী পরিবেশে বিপর্যস্ত উত্তরের সীমান্ত জেলা ঠাকুরগাঁও।
কাঁপছে শিশু থেকে বৃদ্ধ। ঠাণ্ডার কারণে চরম বিপাকে খেটে খাওয়া নিম্ন
আয়ের মানুষ। একদিকে পৌষের হাড়কাঁপানো শীত, আরেকদিকে ক্ষুধা। তীব্র শীতে
দুই যন্ত্রণায় আয়—রোজগারের অভাবে নীরবে মানবেতর জীবন দেশের উত্তরের
জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে রাণীশংকৈল উপজেলাসহ আসপাশের উপজেলা গুলোতেও শীতের
তীব্র মাত্রা বেড়েছে। বেড়েছে ঘন কুয়াশা। উত্তরের হিমেল বাতাসে রাতে
বাড়ছে শীতের তীব্র অনুভ’তি। ঘন কুয়াশার কারণে সকালে সড়কে চলা
যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাণীশংকৈল উপজেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিতে নেমে
আসে। যা এই শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে ধারণা করছেন অনেকেই।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য মতে সকাল ৬টায় জেলার
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকালে ঘন কুয়াশায় ঢেকে পড়ে
রাণীশংকৈলের গ্রাম ও শহর । এ সময় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে মানুষের
পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনের উপস্থিতি ছিলো কিছুটা কম। কোথাও কোথাও
বিভিন্ন যানবাহনের হেডলাইট জ্বালিয়ে যান চলাচল করতে দেখা গেছে।
ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে সময়মতো কাজে যেতে পারছে না শ্রমিকরাও। বিপাকে
পড়েছেন কৃষকরাও। তারাও ঠাণ্ডায় ক্ষেতে কাজ করতে পারছেন না সময়মতো। এমন
কথায় জানালেন আগুন পোহাতে পোহাতে সিরাজ আলী নামে এক কামলা শ্রমীক।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শীতে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি,
শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধরা।
শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
এলাকার সচেতন মহল বলছেন, হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীত ও কুয়াশা। কনকন শীতে
হাত—পা যেনো অবশ হয়ে আসছে। ছেলে—মেয়েরাও ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারছে
না। নিম্ন আয়ের লোকজন শীতবস্ত্রের অভাবে এ শীতে কাহিল হয়ে পড়ছে।
পাড়া—মহল্লা ও রাস্তাঘাটের শীতার্তরা আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের
চেষ্টা করছে। সবচেয়ে কষ্টে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষগুলো। গরম কাপড়ের
অভাবে হাঁড় কাপানো এই শীতে রাত পার করাটায় যেন দায় হয়ে পড়েছে অসহায়
মানুষের।