ঢাকাMonday , 18 December 2023
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তিস্তাপাড়ের মানুষের মুখে ফুটেছে হাসি ব্রীজ নির্মান সমাপ্ত হলে দীর্ঘ বঞ্চনার গল্প যাবে মুছে!

Link Copied!

জাহিদ হাসান জীবন , সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) গাইবান্ধা প্রতিনিধি: 
তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের দীর্ঘ বঞ্চনার গল্প মুছে দেবার পালা এবার। নদীগর্ভে বিলীন হবে না তিস্তার দু’পাড়। ফিরে পাওয়া জমিতে ফসল চাষ করে ভাঙা কোমরে শক্তি যোগাবার আশায় বুক বেঁধেছে নদী ভাঙা মানুষ। ভাটির অঞ্চল কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার যোগাযোগ ব্যবসা বাণিজ্যেও ঘটতে যাচ্ছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। উত্তরের দুই জেলায় আশির্বাদ হয়ে ধরা দেয়া আশা জাগানিয়া তিস্তা সেতুর গল্প।
চিলমারীর কথা উঠলেই এখনো মনে নাড়া দেয় ভাওয়াইয়ার চিরচেনা অকৃত্রিম সুর। কল্পনায় চলে আসে ধুলো উড়িয়ে মেঠো পথে। চাকায় শব্দ তুলে ছুটে চলা। পণ্যবাহী গরুর গাড়ি চলার দৃশ্য। গাড়োয়ানের পথপানে চেয়ে আকুতির এ সুর উত্তরের সংস্কৃতি ও জনজীবনের প্রতিচ্ছবি। ‘যেদিন গাড়িয়াল উজান যায়। নারীর মন মোর পইরা রয় রে। ওকি গাড়িয়াল ভাই। হাকাও গাড়ি তুই চিলমারী বন্দরে।
যোগাযোগ, অবকাঠামো, অর্থনীতিসহ দিনবদলের ধারা যারা দেখেছেন, উভয় কালের সাক্ষী হয়ে আছে তাদের চোখ, পরিমল মজুমদার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলনে, আমাদের শৈশবের প্রারা¤ভ থেকে দেখেছি রাত দুটা ও তিনটা পর্যন্ত এখানে হাট লাগতো এবং আশে পাশের মানুষ এসে এখান থেকে জিনিসপত্র কিনে নিয়ে তারা কেচা করতো। সেগুলো আসতো গাইবান্ধা থেকে।
এপারে গাইবান্ধা আর ওপারে কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দর। দুই জনপদের মাঝে বিভক্তির রেখা টেনে বয়ে চলেছে তিস্তা। তারপরও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে থেমে থাকেনি যোগাযোগ। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাহন ছিলো গরুর গাড়ি। কালের বিবর্তনে গরুর গাড়ির সাথে সাথে যোগাযোগের সেই ভোগান্তিকেও এবার বিদায় জানাবার পালা। নদী শাসনের ফলে জেগে উঠবে হাজারো একর ফসলি জমি। তাইতো তিস্তা সেতু শুধু সেতু হিসেবে নয় তিস্তাপাড়ে ধরা দিয়েছে আশীর্বাদ হয়ে।
২০১৪ সালে সেতুটির ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারিতে কাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৩১টি পিলারের মধ্যে ৩০টি পিলারই দৃশ্যমান। আর ৩১টি স্প্যানের মধ্যে বসেছে ১৮টি। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর উভয়পাড়ে ২ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক, ৫ কিলোমিটার নদী শাসন ও ৮৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ হবে। সব মিলিয়ে এ প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৭০ ভাগ।
স্থানীয় বাসিন্দা জামাল উদ্দিন জানান, তিস্তা ব্রীজটি হওয়ায় নদী শাষন করা হয়েছে। দু’পারে জেগে উঠেছে ফসলী জমি। এখন আর নদী ভাঙ্গন হচ্ছে না। চর জেগে উঠায় হাজারো মানুষ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে।
তিস্তা সেতু নির্মাণে ৮৮৫ কোটি টাকার পুরোটাই অর্থায়ন করছে সৌদি ফান্ড ফর ডেভলপমেন্ট। আর এই সেতুটি নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন লিমিটেড। আগামী বছরের ৩০ জুন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আশা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের।
মালেক উদ্দিন জানান,  তিস্তা সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে চিলমারী থেকে ঢাকার দুরত্ব দেড়শ’ কি:মি: কবে আসবে।
গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, সড়ক ও সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জানান, এ কাজের বর্তমান অগ্রগতি এবং এর গুনগতমান সন্তোষজনক। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের যে প্রত্যাশা সঠিক সময়ে সেই প্রত্যাশা পূরণ হবে।
ছাবিউল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গাইবান্ধা জানান,  রাস্তার কাজগুলো অনেকদুর এগিয়েছে, বড় দুটি প্যাকেজের কাজ শেষ হয়েছে। আর যেটি সবচেয়ে বড় প্যাকেজ ধাপেরহাট-সাদুল্যাপুর সংযোগ সড়কের কার্পেটিং কাজ চলমান।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের পাঁচপীর হয়ে সদরের ল²ীপুর দিয়ে সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাটে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সাথে যুক্ত হবে কুড়িগ্রাম জেলা। এতে রাজধানীর সাথে কুড়িগ্রামের দূরত্ব কমবে ১৩২ কিলোমিটার।
এলজিইডি’র ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এই সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে বর্ষাকালে নৌপথের ঝুঁকি আর শুষ্ক মৌসুমে দূর্গম বালুচর পাড়ি দিয়ে আর যোগাযোগ করতে হবে না কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা কিংবা রাজধানীর সাথে। এমনিভাবে পরিবর্তন ঘটবে এই এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যেও।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।