ঢাকাTuesday , 7 November 2023
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নাকের ডগায় রাস্তা সম্প্রসারণে দুই কোটি টাকার রাস্তায় দায়সারা কাজ

Link Copied!

 

জাহিদ হাসান জীবন, সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

সময়ের সাথে বাড়ছে জনসংখ্যা। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ধরণের পরিবহনের সংখ্যা। চাহিদার প্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সড়ক সম্প্রসারনের উদ্যোগ। কিন্তু দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার তদারকির অভাবে একেবারে নাকের ডগায় যাচ্ছে তাই কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এভাবে কাজ করলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সবচেয়ে ব্যস্ত এই সড়কটি টেকসই হবে না বলে ঠিকাদারের এমন কাজকে ‘স্বপ্নময় সুন্দরগঞ্জের রাস্তা সংস্কারে দায়সারা কাজ বলে মন্তব্য স্থানীয়দের।

এ দিকে, মেয়াদ শেষের পর বর্ধিত মেয়াদেও কাজ শেষ না হওয়ায় বাতাসে ভেসে বেড়ানো ইটের গুঁড়োয় সয়লাব হচ্ছে স্থানীয়দের ঘরবাড়ি, বিছানাপত্র এবং ফুল, ফল ও সবজি বাগান। ফলমূল ও সবজি গাছে ওই গুঁড়ো লেপটে থাকায় এর প্রভাব পড়েছে ফলমূল ও সবজির ফলনের ওপর। লালচে ধুলোবালি নাকে মুখে ঢুকে শিশু, নারী ও বয়স্করা ভুগছেন সর্দিকাশি ও এলার্জিতে। অপরিকল্পিতভাবে রাস্তায় ইট রাখায় এর আগে বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে তরতাজা এক যুবকের।

জানা যায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন আরএসডি মীরগঞ্জ-পীরগাছার পাওটানা জিসি-এর মীরগঞ্জ বাজার থেকে বসুনিয়ার মোড় পর্যন্ত ১ দশমিক ৮২ কিলোমিটার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজের দায়িত্ব পায় দীপা মেডিকেল স্টোর নামে গাইবান্ধার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারিতে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে গাইড ওয়াল নির্মাণের মধ্যদিয়ে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু পানি দিয়ে কিউরিং করা হয়নি তাতে। ফলে ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে মীরগঞ্জ সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সামনের সেই গাইড ওয়াল।
পরে পশ্চিম পাশের তিন ফুট খনন জায়গায় পুরো রাস্তায় গভীর রাতে ফেলা হয় দূরের ইটভাটায় মিশ্রিত করে আনা পরিত্যক্ত ইটের টুকরা মিশ্রিত বালু। যার বেশিরভাগই ছিল বালু, সাথে ছিল আস্ত ইটও।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফসলি মাঠের ফাঁকা জায়গার মাটি না কেটে বরং রাস্তার ঢাল থেকে মাটি কেটে দুই ধার বাধায় রাস্তাটি ঢালু না হয়ে খাড়া হয়েছে। ফলে গর্তে পরিণত হয়েছে ঢালের বিভিন্ন জায়গা। তথ্য মতে, উভয় পাশে ২ ফুট করে ধার বাধার কথা থাকলেও বাধা হয়েছে কোথাও ১ ফুট, কোথাও বা দেড় ফুট আবার বা রাস্তার ধারই নেই। বস্তার ওপর মাটি দিয়ে বাধা হয়েছে কোনো কোনো ঝুঁকিপূর্ণ পুকুর পাড়। ফলে ভারি বর্ষণ কিংবা ভারি পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে রাস্তাটি টেকসই হবে কি না- এ নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতের গভীর আঁধারে আবার ভাটা থেকে ২ ও ৩ নাম্বার ইটের টুকরা মিশ্রিত করে এনে ফেলা হয়েছে রাস্তায়। শ্রমিকদের দেখা গেল রাস্তায় বিছানো ৩ নাম্বার ইটের টুকরার ওপর ২ নাম্বার ইটের কিছু কিছু টুকরা ছিটিয়ে দিতে। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একেবারে নাকের ডগায় এভাবে চোখে ধুলো দিয়ে অত্যন্ত নি¤œমানের কাজ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। তারা দুষছেন ঠিকাদারের পাশাপাশি তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদেরও।

মাস কয়েক আগে রাস্তাটির পশ্চিম পাশের সম্প্রসারণে ব্যবহৃত ইটের খোয়া এবং বালু মিশ্রণের পরিমাণ ও মান ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে এসেছিলেন স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর, গাইবান্ধার ল্যাব টেকনিশিয়ান আশীষ কুমার। মান ঠিক আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, আপনি যা দেখতে পাচ্ছেন, ঠিক আমিও তাই দেখতে পাচ্ছি। পরে প্রথমে রাস্তার ধারে ফেলানো পরিত্যক্ত ভাঙা ইটের টুকরা যাতে বালুর পরিমাণ বেশি ছিল তার ধারণকৃত চিত্র দেখালে মান নিয়ে আর কিছু বলতে চাননি ওই ল্যাব টেকনিশিয়ান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির অপর এক অংশীদার আব্দুল্লাহ আল রাকিব বলেন, বিভিন্ন ভাটা থেকে ইট আনার কারণেই এই অবস্থা হয়েছে।
কাজে অনিয়ম নিয়ে তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আনারুল ইসলাম বলেন, না দেখে কিছুই বলতে পারবো না। পরে বিকেলে এলজিইডি থেকে জনক নামে একজনকে দেখতে পাঠালে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন তিনি।

নির্বাহী প্রকৌশলী, গাইবান্ধা মো. ছাবিউল ইসলামের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে কথা বলতে চেয়ে মুঠোফোনে সংক্ষিপ্ত বার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।