ঢাকাSunday , 20 May 2018
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুড়িগ্রামে সোয়াশ’ বছরের পুরোনো পাবলিক লাইব্রেরীতে পাঠক নেই – অনিয়মের অভিযোগ

Link Copied!

রুহুল আমিন রুকু,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
প্রায় ১শ ২৩ বছরের পুরোনো কুড়িগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরী। পাকা ভবন রয়েছে। বই সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। এরমধ্যে অনেক দুর্লভ বই আছে। প্রতিদিন ২টি সংবাদপত্র রাখা হয়। আসবাব পত্র আছে। সরকারি অনুদান আসে। লাইব্রেরীর সামনে দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ভাড়াও তোলা হয় নিয়মিত। আছে পরিচালনা কমিটি। একজন খন্ডকালীন লাইব্রেরিয়ান নিয়মিত সকাল-বিকাল লাইব্রেরীর দরজা খোলেন এবং বন্ধ করেন। আছে বই পড়ার জন্য কোলাহল মুক্ত নিরিবিলি পরিবেশ। শুধু পাঠক নেই। আছে গাছ কাটাসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ।
বিগত ১৮৯৫ সালে কুড়িগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরীটি স্থাপিত হয়। খাতা কলমে সদস্য সংখ্যা ১৬০ জন। প্রতিষ্ঠাকালীণ সময় থেকে বিগত ১৫ বছর আগে পর্যন্ত সময়ে হওয়া এই সদস্যরা এখন নিস্ক্রিয়। তারা কেউ এখন আর লাইব্রেরীতে আসেননা। নিয়ম অনুযায়ী চাঁদাও দেননা। ক্যাটালগার না থাকায় বইগুলোর ক্যাটালগভিত্তিক তালিকা নেই। নেই সাজানো। ফলে পচ্ছন্দের বই খুঁজতে সময় চলে যায়। পড়ার সময় থাকে না। এজন্য পাঠকরা পাঠাগারে আসতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এই হচ্ছে জেলার সবচেয়ে পুরোনো পাবলিক লাইব্রেরীর ধুঁকে ধুঁকে চলার চালচিত্র।
লাইব্রেরীতে নয়ন সরখেল নামের একজন খন্ডকালীণ লাইব্রেরীয়ান আছেন। তিনি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপর ১টা পর্যন্ত এবং বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত লাইব্রেরীর দরজা খোলেন-বন্ধ করেন। তাকে মাসে ২ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয়।
তিনি জানান, মাঝে মধ্যে ১০/১৫ জন পাঠক সংবাদপত্র পড়তে আসেন। এছাড়া আর কোন পাঠক আসেননা। লাইব্রেরীর সামনে ১০টির মতো দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেখান প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকার মতো ভাড়া আসে। এটাই নিয়মিত আয়ের একমাত্র উৎস। এছাড়া সরকারি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুদান মাঝে মধ্যে পাওয়া যায়।
এলাকার অধিবাসী এবং ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর ইসলাম রজব জানান, লাইব্রেরীতে কোন পাঠক আসেন না। নিয়মিত কোন সদস্য নেই। তারপরও ঘরে বসে ঘুরে ফিরে কয়েক জনকে নিয়ে পরিচালনা কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আর পাঠাগারের সাধারন সম্পাদক বদল নেই। আছেন প্রায় দু’যুগ ধরে। এরমধ্যে আবার ২টি ইউক্লিপটাস ও ১টি মেহগুনি গাছ গত ১৬ এবং ১৭ মে কাটা হয়েছে। কেন এবং কিভাবে এ গাছগুলো কাটা হলো-জানতে চাইলে ধমক খেতে হয়েছে। এছাড়া লাইব্রেরী চত্বরটি এখন পাইকারদের কাটা গাছ এবং ট্রাক, কার্ভাড ভ্য্যান ও পিকআপ রাখার স্ট্যান্ডে পরিণত করা হয়েছে।
পরিচালনা কমিটির সদস্য কাজিউল ইসলাম জানান, অনেক আগে অনুষ্ঠিত সভায় গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে গাছগুলো কাটার আগে সভাপতিকে অবগত করা উচিত ছিল।
পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা একেএম সামিউল হক নান্টু জানান, গাছ কাটার কথা তিনি জানেন না। তাছাড়া সভা নিয়মিত হয়না। ফলে লাইব্রেরীর হালনাগাদ তথ্য তার জানা নেই।
লাইব্রেরীর সাধারন সম্পাদক মোঃ শাহাবুদ্দিন দাবি করেছেন ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত সভায় গাছ ৩টি কাটার অনুমোদন নেওয়া আছে। এগুলো দিয়ে ঘর ও আসবাবপত্র মেরামত করা হবে। পরিচালনা কমিটির সর্বশেষ সভা বিগত ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, ১৯৮৪ সালে লাইব্রেরীয়ান হিসেবে এখানে যোগ দেন। এরপর ১৯৯৬ সালে থেকে সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
পদাধিকার বলে লাইব্রেরীটির সভাপতি হচ্ছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক সরকারি কাজে জেলার বাইরে থাকায় বিগত ১৩ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম সেলিম। তিনি পাবলিক লাইব্রেরীর গাছ কাটার ব্যাপারে কেউ তাকে কোন কিছু অবগত করেননি।
এদিকে রোববার ফিরে এসেছেন জেলা প্রশাসক মোছাঃ সুলতানা পারভীন। তিনি জানান, এখানে নতুন এসেছেন। লাইব্রেরীটি সম্পর্কে বিশদ জানেন না। এখন লাইব্রেরীটির পাঠক সংখ্যা বাড়িয়ে সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।