রুহুল আমিন রুকু,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ঃ
চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামের উলিপুরে আমন ধানে মারাতœক ভাবে ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষককূল দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এতে ধান চাষীদের সোনালী স্বপ্ন ভেস্তে যেতে বসেছে। লাখ লাখ টাকার ধানের ক্ষতি পুষতে কৃষকরা হিমসিম খাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ফলে, বেশী বিপাকে পড়তে হবে প্রান্তিক ও বর্গা চাষিদের। চাষাবাদের জন্য মহাজনের কাছ থেকে ঋণে নেয়া টাকা পরিশোধ করবে কীভাবে এই দুশ্চিন্তা যেন ধেয়ে ধরেছে তাদের মাঝে। এদিকে ছত্রাক আক্রমণের কথা বারবার জানার পরও সময় মত কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাগণ ক্ষেত পরিদর্শনে না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কৃষকরা। উপজেলার পৌরসভাসহ ১৩ ইউনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চলের আক্রান্ত আমন ধান ক্ষেতে দেখা যায় পরিপূর্ণভাবে থোর আসা বা ধান পাকার আগেই ছত্রাক ও নেকব্লাস্টে আক্রান্ত অধিকাংশ ধান শীষগুলো সাদা এবং পাতা মোড়ানো হয়ে গেছে। হাতে নিয়ে ঘষা দিলে শুধু চিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। ক্ষেতের আক্রান্ত ধান গাছলো কেটে ফেলার সময় উপজেলায় দলদলিয়া ইউনিয়নের উত্তর দলদলিয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ চাষি আব্দুর রশিদের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘১ সপ্তাহ আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও ক্ষেত পরিদর্শনে আসেননি। আর যদিও আসেন ততদিনে অধিকাংশ ফসল নষ্ট হয়ে পরে। অবশিষ্ট যা ধান থাকছে তা খরচ মিটাতে হিমসিম খেতে হবে। আর মহাজনের কাছ থেকে নেয়া ঋণের টাকা তো আছেই। মোট কথা তাতে ক্ষতি ছাড়া লাভের কিছুই থাকবে না। একই কথা জানালেন, থেতরাই ইউনিয়নের কিশরপুর গ্রামের ধান চাষী রফিকুল ইসলাম, আবুল হোসেন, মকবুল হোসেন ও কেবারত আলীসহ আরো অনেকে। তারা জানান মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা বছরেও ১ দিন পরিদর্শনে আসেন না। ফলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ থেকে বঞ্চিত তারা। নদী বিচ্ছিন্ন উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মাস্টার পাড়া গ্রামের প্রন্তিক চাষী হাবিবুল ইসলাম, আজিমুদ্দিন, মজনু মিয়া, মহব্বত আলী, ছোমেদ আলী, ওমেদ আলী ও বাহাদুর আলীর গড়ে প্রায় ২০ একর জমিতে ছত্রাক দেখা দেওয়ায় তাদের অধিকাংশ ফসল বিনষ্ট হয়েছে। এ ব্যাপারে দলদলিয়ার ৬ নং ব্লোকে উপসহকারী কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন জানান তার ব্লোকে এ ধরনের আক্রান্তের পরিমান কম। কারণ সঠিক সময় উন্নত বীজ ও জমিতে পর্যাপ্ত পটাসীয়াম প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে যে যে জমিতে এর লক্ষন দেখা দিয়েছে সময় মত সে জমিতে নেকব্লাস্ট নাশক ট্রপার/দিপা ইত্যাদি ঔষধ স্প্রে করা হয়েছে। এবারে সরকারের ধান ক্রয়ে লক্ষমাত্রা অর্জন না হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।