মোঃমনিরুজ্জামান ভুরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম)-
ভুরুঙ্গামারী উপজেলার কৃষকরা দিনকে দিন গম চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ফলে গম চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছেনা । উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে এ বছর ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে মোট ২২৩৬ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গম চাষ হয়েছে মাত্র ১৩৩২ হেক্টর জমিতে । বিগত বছর ২৫৭০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলে ২০১৫ হেক্টর জমিতে গম চাষ করেছিলেন কৃষকেরা। তিন দিক থেকে ভারত বেষ্টিত দেশের উত্তরের এই উপজেলায় এক সময় আউশ, আমন ও ইরি-বোরো ধানের সাথে পাল্লা দিয়ে কৃষকরা গম চাষ করতেন । গম কাটার মৌসুমে চৈতালি হাওয়ায় গমের সোনালী শীষ দোল খেত মাঠে মাঠে। সে সব এখন শুধুই স্মৃতি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে – সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে প্রকৃত কৃষকদের নিকট থেকে সরকারি ভাবে গম ক্রয় না করা, কৃষি বিভাগ থেকে সময়মত প্রয়োজনীয় পরামর্শ ,দিকনির্দেশনা ও সহায়তা না পাওয়া এবং গমের ন্যায্য মুল্য না পাওয়ার কারনে কৃষকরা গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন । উপজেলা সদরের নলেয়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান গত বছর প্রায় ৫ বিঘা জমিতে গম আবাদ করেছিলাম। ৬৫০ টাকা দরে গম বিক্রি করে কোন মতে উৎপাদন খরচ তুলতে পেরেছি। তাই এবার মাত্র এক বিঘা জমিতে গম আবাদ করেছি । সরকারি ভাবে সরাসরি প্রকৃত কৃষকদের নিকট থেকে গম ক্রয় করলে কৃষক গমের ভাল দাম পাবেন বলে তিনি মনে করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অমূল্য কুমার সরকার বলেন –সরকারি ভাবে গম ক্রয়ের কোন নির্দশনা না থাকায় তা সংগ্রহ করা হয় নাই। এ বছর সরকারি ভাবে গম ক্রয়ের নির্দেশনা আসলে তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে । উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদুর রহমান এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন- গম চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও জমি কিন্ত পতিত নেই। বারমাসি বিভিন্ন সবজি, আলু, ভূট্টা ও আখ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। কৃষকদের সহযোগিতা না করার বিষয়টি সঠিক নয়। আমি নিজে ব্যক্তিগত ভাবে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছি । এছাড়া উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষনিক মাঠে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন যাতে কৃষকের কোন সমস্যা না হয় ।