মোঃ আলী হাসান: পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে প্রগতি সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিঃ নামের একটি সমিতির বিরুদ্ধে গ্রামের সাধারণ মানুষদের ঋণের ফাঁদে ফেলে সর্বশান্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সমিতিটি সদস্যদের মাঝে ঋণ দেওয়ার সময় কৌশলে ব্যাংকের চেক, ৩শ টাকার ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষরসহ কারো কারো ক্ষেত্রে জমির দলিল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এটিকে কাজে লাগিয়েই ঐ সমিতিটি সদস্যদের নেওয়া ঋণের টাকা সুদে আসলে পরিশোধ করলেও সমিতির নিকট সদস্যদের দেওয়া সেই ফাঁকা ব্যাংক চেক ও ষ্ট্যাম্পে ইচ্ছেমত টাকার অংক বসিয়ে পুণরায় ঋণ পরিশোধের চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। অনেকর বাড়ীতে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে গিয়ে টাকা পরিশোধের ভয় দেখিয়ে ও মামলা করার হুমকি দিয়ে আসে। তাদের অত্যাচারে অনেকেই বাড়ী থেকে ঢাকায় পালিয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে ভূক্তভোগী উপজেলার বয়রা গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদ মন্ডলের পুত্র ফজলুর রহমান, নন্দীগ্রামের দিলদার রহমানের পুত্র আবু রায়হান নওশাদ ও ডোলপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র এনামুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন।
ভূক্তভোগী বয়রা গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, ২০১৮ ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করি। ঐ সময় আমার নিকট থেকে অগ্রণী ব্যাংক, আওলাই শাখার ৩টি ফাঁকা ব্যাংক চেক ও ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। আমি প্রতি মাসে নিয়মিত কিস্তি দেই। তাতে আমার ১ বছরেই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু আমি প্রতি মাসে ২৮ হাজার টাকা করে ৩ বছরে ১০ লক্ষ ৮ হাজার টাকা পরিশোধ করি। এর পরও আমাকে অফিসে ডেকে আমার কাছে আরো ৫ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা পাওনা আছে দাবী করে জোর করে আবার ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়।
একই উপজেলার নন্দীগ্রাম এর আবু রায়হান নওশাদ বলেন, ২০১৮ সালে ৫লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহন করি। এপর্যন্ত কিস্তিতে ৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করি। এর পরও আমার নিকট আরো ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে।
তিনি আরো বলেন, অগ্রণী ব্যাংক আওলাই শাখার ৩টি ফাঁকা চেক, জমির দলিল, ৩শ টাকা ফাঁকা ষ্ট্যাম্প স্বাক্ষর ও সহ নিয়েছিল। যাএখন আর ফেরৎ দিচ্ছে না।
ডোলপাড়া এনামুল ইসলাম বলেন, ঐ সমিতি থেকে ৫০ হাজার ঋণ নিয়েছিলাম। প্রতিমাসে কিস্তিতে টাকা পুরশোধ কররেও আরো ৩৫ হাজার টাকা দাবী করে। না দিলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করবে হুমকি দিয়েছে। এদের অত্যাচারে আমি ঢাকায় পালিয়ে এসেছি।
এ বিষয়ে প্রগতি সার্বিক সমবায় সমিতি লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মানিকের নিকট মোবাইলে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমাদের বিষয়ে একটি ষড়যন্ত্র। পরে আপনার সঙ্গে দেখা করে কথা বলব বলে মোবাইল সংযোগ বিছিন্ন করেন। পরে ফোন দিলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেন না।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা লুৎফুল কবির ছিদ্দিকী বলেন, কোন সমিতি ঋণে নামে সদস্যদের থেকে ফাঁকা ব্যাংকের চেকের পাতা, দলিল ও সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিতে পারবেন না। তবে সদস্যরা লিখিত অভিযোগ করলে অভিযুক্ত সমিতির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।