কুলেন্দু শেখর দাস,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার উত্তর ইউপির সাচনা গ্রামে শতবছরের পুরোনো শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দিরের নামে রেকডীয় ভূমি অবৈধ দখলদারদের
কবল থেকে উদ্ধার ও মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্যদের হুমকি দামকীর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টায় সাচনা শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দির পরিচালনা কমিটি ও গ্রামবাসির
আয়োজনে মন্দির প্রাঙ্গণে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এতে দুই শতাধিক গোপাল ভক্ত নারী পূরুষরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন সাচনা শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দির পরিচালনা কমিটি সহ সাধারন সম্পাদক ভজন পাল।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন,জামালগঞ্জ উপজেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হরেন্দ্র তালুকদার।
গ্রামের মুরুব্বী নারায়ন রায়,উপজেলা হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি পূর্ণেন্দু ঘোষ চৌধুরী, জগন্নাথ জিউর
মন্দির পরিচালনা কমিটির সহ সভাপতি সুধীর রায়, সহ সভাপতি জয়বেন্দ্র পাল,ডা. পি সি সরকার।
হিমাংশু চৌধুরী,রুনু বণিক ও জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক জ্যোতির্ময় রায় মণি প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দরা তাদের লিখিত বক্তব্যে বলেন,সাচনা মৌজার ৩৩১ খতিয়ানের ৪৬৪২ দাগের ২৮ শতক,৪৬৭২ দাগের ৯ শতক চারা ভূমি নিয়ে
মোট ৩৭ শতক ভূমি সাচনা গ্রামের শংকর চন্দ্র সরকারের ছেলে মন্তোষ চন্দ্র
সরকার ১৮ শতক এবং এই দুই দাগে ১৪ শতক বাড়ি ও ৫ শতক চারা ভূমিসহ মোট ১৯ শতক জায়গা
শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দিরের নামে রের্কড বিদ্যমান।
শ্রী শ্রী গোপাল মন্দির পাক বিট্রিশ আমল থেকেই ধর্মীয় সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
এরমধ্যে ১৪ শতক রেকডীয় জায়গাটুকু বর্তমানে
শ্রী শ্রীসৎসঙ্গ অধিবেশন কেন্দ্রের একটি অংশদখলের পায়তাঁরায় লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
বাকি ৫ শতক জায়গাতে শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দির স্থাপন করে পরিচালনা কমিটির সদস্যরা নিত্যসেবা দিয়ে আসলেও দখলদার পক্ষ এলাকার
কিছু সুযোগ সন্ধানীরা বহিরাগতদের এনে তাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দামকী দিয়ে আসছে।
এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর শ্রী শ্রী গোপাল মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক প্রদীপ পুরকায়স্থ বাদি হয়ে হুমকিদাতা সাচনা গ্রামের গিরিধারী পাল, অজিত রায়,দ্বীজরাজ পাল
জামালগঞ্জ উত্তর ইউপি সচিব প্রদীপ রায়,অসীম সরকার,রামানন্দ পালসহ
অঞ্জাতনামা আরো ১০/১৫জনকে বিবাদি করে জামালগঞ্জ থানায় একটি জিডি করা হয়। যার জিডি নং-১০৮১,তারিখ ২৭/১১/২০২২ইং ।
এদিকে গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ইং তারিখে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ দেব ও পুলিশ প্রশাসন নিয়ে
শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দির পরিদর্শনে আসেন। এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মন্দির ভাঙ্গার নির্দেশ প্রদান করলে
মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ভাঙ্গার কারণ জানতে চাইলে তিনি তাদেরকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে সাচনা গ্রামের শত শত গোপাল ভক্তরা মন্দির প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করলে
মন্দির ভাঙ্গার নির্দেশ প্রত্যাহার করলে ও মন্দিরের চতুরদিকে বাশঁ দিয়ে ভক্তদের প্রবেশ বন্ধ করে দেন এবং মন্দিরে প্রতিদিনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
অবিলম্বে শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দিরের দখলকৃত ভূমি উদ্ধার ও হুমকিদাতাদের গ্রেপ্তারের জন্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ সুপারের নিকট দাবী জানান।
এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব প্রদীপ রায়ের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ দেব জানান
এখানে শ্রী শ্রী গোপাল জিউর মন্দির পরিচালনা কমিটি ও শ্রী শ্রী অনুকূল ঠাকুরের এই দুটি পক্ষ আছে তারা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন।
এখানে যেন আইন শৃংখলার অবনতি না হয় সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে
গোপাল জিউর মন্দিরে আপাতত সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।