ঢাকাSaturday , 30 November 2019
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লোভ থেকে জড় হয় কামনা-বাসনার উদয়: ভক্তির পথে পতনের প্রথম ধাপ

Link Copied!

উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■: বর্ষার মৗসুমে জলের সাথে তারা চলে আসলো একটি নুতুন জমিতে, সুখেই কাটছিলো তাদের সংসার, কিছুদিন পরেই জল নেমে গেলো, আটকা পড়ে গেলো টাকি মাছ দুটো জমির ভিতর, আসন্ন বিপদ বুঝতে বাকি রইলো না তাদেও, মাছটি বললো-হায় এখন কি হবে আমাদের? আমরা তো জলের অভাবে মরে যাবো স্বামী মাছটি বললো-ঈশ্বরের কৃপা থেকে নিরাশ হয়ো না, তিনি নির্ধারন করে রেখেছেন কিভাবে আমরা মারা যাবো, তার উপর ভরসা রাখো, এদিকে ঐ জমিতে এক রাখাল আসলো ঘাস কাটতে মাছ দুটো দেখতে পেয়ে ধরে নিয়ে আসলো, তার মাকে দিলো রান্না করতে, রাখালের মা বাড়ীর উঠানে বসে বটি নিয়ে আসলো মাছ কুটতে, এবার স্ত্রী মাছটি কাঁদতে কাঁদতে বললো-এবার কি হবে? এখনতো আমাদের শরীরকে কেটে টুকরো টুকরো করা হবে,স্বামী মাছটি আবারো একই কথা বললো, ধৈর্য্য ধারন করতে বললো এদিকে রাখালের মা পিচ্ছিল মাছ ধরতে না পেরে ছাই আনতে ঘরে গেলো, ঠিক তখন একটি চিল এসে ছোঁ মেরে নিয়ে গেলো মাছ দুটো এখন স্ত্রী মাছটি আরো ভয় পেয়ে বললো-এবার কে বাঁচাবে আমাদের? স্বামী মাছটি বললো- এতোগুলো বিপদ থেকে যে ঈশ্বর আমাদের বাঁচালেন তিনি বাঁচাবেন, ভরসা হারিয়ো না, এরপর চিলটি যখন নদীর পাশে বিশাল গাছটির দিকে যাচ্ছিলো তখন অন্য একটি চিল এসে মাছের জন্য মারামারি শুরু করলো, আর তখন ঠিক বিশাল নদীর মাঝামাঝিতে এসে মাছদুটো পড়ে গেলো পাখির পা থেকে, এভাবেই তারা ছোট বিল থেকে এসে পড়লো বিশাল নদীতে ধৈর্যের পুরস্কার পাওয়ায় মাছদুটো ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালো দুজনই বললো শিক্ষা: মৃত্যু সকলেরই আসবে, আজ না হয় কাল হবেই। কিন্তু সকল অবস্থাতেই ঈশ্বরের উপর ভরসা রাখতে হবে কোন কোন বিপদ, মুক্তির উছিলা মাত্র বনের ভিতর, এক হরিনীর সময় হলো সন্তান জন্ম দেয়ার। তাই সে বনের ধারে যেয়ে নদীর পাশে ঘাসজমিতে সুন্দর একটি জায়গা খুজে বের করে নিলো সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য। সময় কিছু পার হলো, তার প্রসব বেদনাও উঠলো। এসময় হরিনীটির চারপাশে শুরু হলো বিপদ। হরিনীটি যখন উপরে তাকালো, দেখলো ঘন মেঘে আকাশ ছেয়ে যাচ্ছে। সে যখন জংগলের দিকে তাকালো, দেখলো ঘন জংগলে হঠাৎ দাবানল শুরু হয়েছে। এর মাঝে সে টের পেলো তার সামনে এক ক্ষুধার্ত সিংহ তার দিকে এগিয়ে আসছে। আর পেছনে ফিরে দেখলো এক শিকারী তার দিকে তীর নিশানা করে আছে। এখন সে কি করবে? দিশেহারা সময়টিতে দাবানল, নদীর স্রোত, ক্ষুধার্থ সিংহ আর নির্দয় শিকারী দিয়ে চারদিক দিয়ে ঘিরে থাকা হরিনীটি তাই চুপচাপ কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে ভাবলো। তারপর সে তার সব বিপদ আপদ অগ্রাহ্য করে সিদ্ধান্ত নিলো সে তার সন্তান জন্ম দিবে। বিপদ আপদ যদি ঘটে ঘটুক। সেটির দায়িত্ব সে বিশ্বাসী মনে চোখ বুজে ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দিলো সাথে সাথে কিছু মিরাকল ঘটলোঃ-কালো মেঘে ঢাকা আকাশে তুমুল ঝড় বৃস্টি শুরু হলো। সেই সাথে প্রচন্ড বজ্রপাতে শিকারীর চোখ অন্ধ হয়ে গেলো। অন্ধ শিকারী তীর ছুড়ে দিলো। সেই তীর হরিনীর পাশ কেটে সিংহের মাথায় আঘাত করলো। তুমুল বৃস্টির জলে জংগলের আগুন নিভে শান্ত হয়ে গেলো। হরিনীটি একটি সুস্থ ও সুন্দর শাবকের জন্ম দিলো। আমাদের জীবনেও এরকম কিছু সময় আসে। চারদিক থেকে বিপদ, নিন্দা, হতাশা আর অসহযোগিতা চেপে ধরে আমাদের। কখনো কখনো এই খারাপ সময় এত শক্তিশালী মনে হয় যে আমরা পরিস্থিতির কাছে হার মেনে যাই। আতœহত্যার কথাও চিন্তা করি। অথচ এটি ভুল। আর সেটা আমরা এই হরিনের গল্প থেকেই শিখে নিতে পারি। যখন হরিনীটির চারপাশে এত বিপদ ছিলো, তবু জীবন মৃত্যু যাই আসুক, সে বিপদের আশংকায় নিজের লক্ষ্য থেকে একবিন্দু সরে যায়নি। সে তার কাজ, অর্থাৎ সন্তান জন্ম দেয়াতেই নিজের সব মনযোগ দিয়েছে। আর তখন বাকী সব বিপদ আপদ সৃস্টিকর্তা নিজে সমাধান করে দিয়েছেন। যখন হতাশা গ্রাস করে, নিজের উপর বিশ্বাস উঠে যায়, তখনো ঈশ্বরের প্রতি অগাথ বিশ্বাস রাখবেন। জীবনের লক্ষ্যে স্থির থাকবেন। আর কখনো লক্ষ্য থেকে একবিন্দু পিছপা হবেন না। মনে রাখবেন, আপনি যত বড় ঝড়ের মাঝেই থাকুন, যত নিঃ সঙ্গই আপনি নিজেকে ভাবুন না কেন, সৃস্টিকর্তা কখনো আপনাকে ছেড়ে যাননি, সর্বদা আপনার কাছেই আছেন। মনে রাখবেন, সৃস্টিকর্তা কখনো ঘুমান না এবং কোন তন্দ্রাও তাকে স্পর্শ করেনা, সব সময় তিনি আপনাকে দেখছেন এবং আপনার কোন প্রার্থনা তিনি অপূর্ণ রাখবেন না…. শ্রীগীতায় ভগবান বলেছেন- কাম, ক্রোধ, লোভ নরকের দ্বার। কামঃ- কামকে ভগবান সর্বগ্রাসী বলে আখ্যা দিয়েছেন। কাম থেকে ক্রোধ উৎপন্ন হয়, ক্রোধের ফলে বুদ্ধি নাশ হয়, আর বুদ্ধি নাশ হওয়ার ফলে তার সর্বনাশ হয়-গীতা। কাম বর্ষবর্তী হয়ে এক রমনীর দিকে দৃষ্টিপাত করায় মহাপ্রভু হরিদাস ঠাকুরকে নিজ পার্শ্বদ থেকে পরিত্যাগ করেছিলেন। ক্রোধঃ- ক্রোধ হচ্ছে তমোগুণের প্রতীক। ভগবান শ্রীগীতায় বলেছেন- তমোগুণ সম্পন্ন জীবদের আমি জন্ম জন্মান্তরে পশু যোনিতে নিক্ষেপ করি। আমরা যে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন জীবন ধারন করবো মৃত্যুর পর কামনা-বাসনা অনুযায়ী আমরা সেরকমই একটা দেহ লাভ করবো। তাই আমরা যদি কৃষ্ণ কেন্দ্রিক জীবন ধারণ করি তাহলে অন্তিমে আমরা কৃষ্ণকেই লাভ করবো, এতে কোন সন্দেহ নেই। লোভঃ- লোভ হচ্ছে ভক্তি পথে পতনের প্রথম ধাপ। লোভ থেকে জড় কামনা-বাসনার উদয় হয়। এই জড় কামনা-বাসনাগুলোই হচ্ছে জড় জগতের বন্ধনের মুল কারন। এর ফলে জন্ম জন্মান্তরে বার বার ঘুরে ঘুরে এই জড় জগতেই আমাদের ফিরে আসতে হবে। এমন জীবের ক্ষেত্রে ভগবৎধাম প্রাপ্তি প্রায় অসম্ভবই বলা চলে।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।