ঢাকাThursday , 11 October 2018
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লালমনিরহাটে বিলুপ্ত হচ্ছে বাংলার নিপুণ কারিগর, বাবুই পাখির বাসা

Link Copied!

রাশেদুল ইসলাম রাশেদঃ জেলা প্রতিনিধিঃ
 “বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুড়ে ঘরে থাকি কর শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অস্ট্রালিকার পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে”। কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী কবিতার নায়ক আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর বাবুই পাখি আজ বিলুপ্তির পথে।
লালমনিরহাটে  আগের মত বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা আজ আর তেমন চোঁখে পরে না। বিশেষ করে সীমান্তঘেষা এলাকাগুলোর আনাচে-কানাচে তালগাছের পাতায় পাতায় দেখা যেত বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান গ্রাম বাংলার সেই চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা। খড়ের টুকরো, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ ও কাঁশবনের লতাপাতা দিয়ে উচু তাল গাছে চমৎকার আকৃতির বাসা তৈরি করত বাবুই পাখিরা। বাবুই পাখির বাসা যেমন দৃষ্টিনন্দন তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়ে বাতাসে টিকে থাকে তাদের বাসা। বাবুই পাখির শক্ত বুননের এ বাসা টেনেও ছেড়া কঠিন।
বাবুই পাখি একাধারে শিল্পী, স্থপতি ও সামাজিক বন্ধনের প্রতিচ্ছবি। এরা এক বাসা থেকে আর এক বাসায় যায় পছন্দের সঙ্গি খোঁজতে। সঙ্গি পছন্দ হলে স্ত্রী বাবুই পাখিকে সাথী বানানোর জন্য কত কিছুই না করে। পুরুষ বাবুই নিজের প্রতি আকর্ষন করার জন্য খাল-বিল ও ডোবায় গোসল সেরে ফুর্তিতে নেচে নেচে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে।
এর পর উঁচু তাল গাছ, নারিকেল গাছ বা সুপারি গাছের ডালে বাসা তৈরির কাজ শুরু করে। বাসা তৈরির অর্ধেক কাজ হলে কাংখিত স্ত্রী বাবুইকে ডেকে দেখায়। বাসা পছন্দ হলেই কেবল পুরো কাজ শেষ করে । বাসা পছন্দ না হলে অর্ধেক কাজ করেই নতুন করে আরেকটি বাসা তৈরির কাজ শুরু করে। অর্ধেক বাসা তৈরি করতে সময় লাগে ৫/৬দিন। স্ত্রী বাবুই পাখির বাসা পছন্দ হলে বাকিটা শেষ করতে সময় লাগে ৪দিন। কেননা তখন পুরুষ বাবুই মহা আনন্দে বিরামহীন ভাবে কাজ করে। স্ত্রী বাবুই পাখির প্রেরনা পেয়ে পুরুষ বাবুই খুবই শিল্পসম্মত নিপুণ ভাবে বাসা তৈরি করে। স্ত্রী বাবুই ডিম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুরুষ বাবুই খুঁজতে থাকে আরেক সঙ্গিকে। পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ৬টি পর্যন্ত বাসা তৈরি করতে পারে।
অর্থাৎ এরা ঘর সংসার করতে পারে ৬ সঙ্গির সঙ্গে। তাতে স্ত্রী বাবুই এর না নেই। প্রজনন প্রক্রিয়ায় স্ত্রী বাবুই ডিমে তা দেওয়ার ২ সপ্তাহের মধ্যেই বাচ্চা ফুটে। ৩ সপ্তাহ পর বাবুই বাচ্চা বাসা ছেড়ে উড়ে যায়। বাবুই পাখির প্রজনন সময় হলো ধান ঘরে উঠার মৌসুম। স্ত্রী বাবুই দুধধান সংগ্রহ করে এনে বাচ্চাদের খাওয়ায়। বাবুই পাখি তাল গাছে বাসা বাধে বেশী। রাতের আধারে পাখি শিকারীদের জালে বাবুই পাখি আটক হয়ে বিক্রি হচ্ছে শহরের পাখি শিকারিদের দোকানে । ফলে একদিকে যেমন হারিয়ে যেতে বসেছে বাবুই পাখি, অন্যদিকে বিলুপ্ত হচ্ছে বাবুই পাখির দৃষ্টি নন্দন বাসা।
এছাড়াও ঝাঁকে ঝাঁকে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে উড়ে আসা এসব বাবুই পাখির বিলুপ্তির প্রধান কারণ হচ্ছে ফসলে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।