মোঃ সুমন আলী খাঁন,নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় রাস্তা সংস্কারের নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে করগাঁও ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান এর বিরুদ্ধে। এছাড়া রাস্তা সংস্কারের নামে এলাকাবাসীর কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে ও সংস্কার করা হয়নি বরং রাস্তা যেমন ছিলো তেমনই আছে। একদিকে রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করছে। অপরদিকে রাস্তার নামে সরকারী বরাদ্ধ ও এলাকাবাসীর টাকায় সঠিক কাজ না হওয়ায় এলাকায় সমালোচনা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবর অভিযোগ দেয়া হলে ও কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। ওই উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামের মোঃ তছর উদ্দিনের পুত্র মোস্তাহিদ আহমেদ গত ১৮ ই এপ্রিল তার দেয়া অভিযোগে উল্লেখ করেন, একই গ্রামের মৃত আব্দুল করিম মিয়ার পুত্র ইউপি সদস্য মোঃ মিজানুর রহমান সম্প্রতি সময়ে দুটি প্রকল্প কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন। এরই মধ্যে একটি হচ্ছে গুমগুমিয়া গ্রামের রাস্তায় মাঠি ভরাট ও সৌরবিদ্যুত প্রদান, যেমন গুমগুমিয়া গ্রামের জামিনী সড়কের হেলাল মিয়ার জমি হতে আব্দুল মুকিত মিয়ার জমি পর্যন্ত রাস্তার মাটি ভরাটের কাজ ও সৌরবিদ্যুৎ প্রদানের প্রকল্প যার বরাদ্ধ এসেছিল ২ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। এতে তিনি প্রকল্পের সভাপতি হয়ে কাজের দায়িত্ব সমজিয়ে নেন। কিন্তু তিনি ওই রাস্তায় কোন মাটি ভরাট করেননি। এখনো লোকজন কাদা ভেঙ্গে অতি কষ্টে চলাচল করতে হচ্ছে। এমনকি এলাকার গরীব ও অসহায় লোকজন সৌরবিদ্যুত পাননি। প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান কোন কাজ না করে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছেন। অপরদিকে গুমগুমিয়া উত্তর জামে মসজিদ হতে ওই গ্রামের নুরুল হক মিয়ার বাড়ি রাস্তায় মাটি ভরাটের জন্য বিগত ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের প্রকল্প বরাদ্ধ আসে ২ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা। তিনি ওই কাজের ও বাস্তবে কোন মাটি ভরাট কাজ করেননি। বরং তিনি রাস্তার কাজ না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশা লোকদের কাছ থেকে জানা গেছে, ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান গুমগুমিয়া উত্তর জামে মসজিদ হতে ওই গ্রামের নুরুল হক মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজের বরাদ্ধ আসার পর ও তিনি ওই এলাকার ২৫/৩০ জন লোকের কাছ থেকে জন প্রতি ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করে প্রায় লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করে তাঁর পকেটস্থ করেছেন। লোকজন আরো জানান, মেম্বাকে ওই রাস্তার মাটি ভরাটের জন্য টাকা চাদা দিলে ও কোন সংস্কার হয়নি। তাই যেমন ছিল তেমনি রয়েছে রাস্তার চিত্র। এ ব্যাপারে গুমগুমিয়া গ্রামের আব্দুল মতিন মিয়ার পুত্র সবুজ আহমেদ বলেন, রাস্তা সংস্কারের জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে এবং তার চাচা দিয়েছেন ৩ হাজার টাকা। একই গ্রামের হাফেজ আব্দুল হান্নানের পুত্র আকিক মিয়া বলেন তার কাছ থেকে মেম্বার মিজানুর ৩ হাজার টাকা নিয়েছেন, সাবেক ইউপি সদস্য সজ্জাদুর রহমান বলেন, তার জানামতে ওই রাস্তার জন্য মেজর সুরঞ্জন দাশ দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা। কিন্তু মেম্বার চল-ছাতুরি করে রাস্তার জন্য টাকা বরাদ্ধ আসার পর ও এলাকার সহজÑসরল লোকদের সাথে প্রতারনা করে টাকা আত্মসাত করেছেন। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানের সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বরাদ্ধের টাকা পেয়ে কোন দুর্নীতি করেননি। যাহা করেছেন সঠিক করেছেন। এলাকার সচেতন মহল মনে করেন সরকারের দেয়া বরাদ্ধের দুটি প্রকল্পের ৫ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা ও এলাকাবাসীর দেয়া টাকা গেল কোথায়? এবং কেন কাজ হল না? ওই রাস্তা সংস্কারের কাজের দুর্নীতি না অন্য কিছু সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি ও আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগি ও সচেতন মহল।