ঢাকাMonday , 27 May 2019
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো  এস,এস,সিতে জি,পিএ-৫  পেয়েও কি মানুষ হবার স্বপ্ন পূরণ হবে অদম্য মেধাবী ইশরাত আক্তারের 

Link Copied!

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি-
তাঁতে কাপড় বুনে মেয়ের লেখাপড়ার খরছ চালিয়েছেন মা রেজিয়া বেগম। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার তিলকপুর গ্রামের মণিপুরী মুসলিম(পাঙান)সম্প্রদায়ভুক্ত হতদরিদ্র  আফরোজ উদ্দিন ও রেজিয়া বেগমের তিন সনতানের মধ্যে সবার ছোট ইশরাত আক্তার  এ বছর এস,এস,সি পরীক্ষায় দয়াময় সিংহ উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ -৫ পেয়েছে। চা দোকানী বাবা অনেক কষ্টে তার অন্য সনতানদের লেখাপড়া চালিয়ে যখন হাঁপিয়ে উঠছেন তখন মেয়ের এ রকম ভালো ফলাফলের খবর তাকে অকৃত্রিম আনন্দ যুগিয়েছে। এ খবরে এলাকায় আনন্দের ঢল নামলেও ইশরাতের পরিবারে মেধাবী মেয়ের ভবিষ্যত আর স্বপ্ন পূরন  নিয়ে আশংকার বাতাস বইছে। প্রচন্ড অভাবের কারণে বড় ভাইয়ের মতো ইশরাতের ও উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন ধুলিস্মাৎ এখন। নুন আনতে পানতা পুরায় সংসারে অদম্য মনোবল আর কঠোর অধ্যাবসায়ে পিএসসি ও জেএসসিতেও জিপিএ ফাইভ লাভ করেছিলো ইশরাত। তার স্বপ্ন ছিলো লেখাপড়া করে সে প্রতিষ্ঠিত হবে।কিন্তু তার সে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।মেয়ের স্বপ্নপূরণে কলেজে পড়ার সাধ মেটাবেন কিভাবে সে চিনতায় অস্থির  মা রেজিয়া বেগম চোখের পানি ফেলে এ প্রতিবেদককে জানান, হতদরিদ্র সংসারের কষ্টের কাহিনী। একটুকরো ভিটে আর ঘাম ঝরিয়ে পরিশ্রম করার শক্তি  ছাড়া যাদের আর কিছুই নেই,তাদের আছে শুধু স্বপ্ন ,মানুষের মতো মানুষ হবার স্বপ্ন।ইশরাত  কান্নাজড়িত কন্ঠে তার এ পর্যন্তে এগিয়ে আসার গল্প শোনায়।  সে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে আর্তমানবতার সেবা করতে চায়।কিন্তু চরম দারিদ্রতা তার সে স্বপ্ন পূরণে কঠিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো ইশরাত আশায় বুক বেঁধে কতো কষ্ট করে প্রতিদিন ৯/১০ ঘন্টা করে লেখাপড়া করে এ ফলাফল অর্জন করেছে। আজ শুধু চরম দারিদ্র্যের কঠোর কষাঘাতে ভেঙে যাচ্ছে স্বপ্নবাণ ইশরাতের মানুষ হবার স্বপ্ন। বাবা আফরোজ উদ্দিনের কথা, সংসারের ভরণপোষন চালাতে হিমশিম খাচ্ছি আর পারছি না। কিন্তু মা চান তার ছোট সন্তান লেখাপড়া করুক,মানুষ হয়ে মানুষের সেবা করুক। কাপড় বুনার মজুরী দিয়ে ফরম ফিল-আপের টাকা যোগাড় করে দিয়েছিলেন মা। হতদরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারের মেধাবী সনতান ইশরাত  জরাজীর্ণ একটি কুঁড়ে ঘরে বাস করে প্রতিমুহুর্তে দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকলেও মা বাবা আর  শুভানুধ্যায়ীদের প্রেরণায় এতোদুর লেখাপড়া চালাতে পিছপা হয়নি। কিন্তু অভাগা বাবা মায়ের সাধ আছে,সাধ্য নেই অবস্থায় কতোদুরই যেতে পারবে তারা। হয়তো তার মেধার আলোয় আলোকিত হবে হয়তো অল্পশিক্ষিত কোন বরের রান্নাঘর।অথবা কোন এন,জি,ওর  প্রি-প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষার্থীদের স্বরবর্ণ,নামতা শিখাতে বা ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমে  হিসাব দিতেই ব্যত থাকবে।ভূলে যাবে মানুষ  হওয়ার স্বপ্ন। নুন আনতে পানতা ফুরায় সংসারের ভাত-কাপড়ের চাহিদা মিটাতে হিমশিম অবস্থা যাদের,কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানকে পড়ানো তাদের জন্য ভাঙা ঘরে ছেড়া কাঁথায় আকাশছোঁয়া স্বপ্ন বৈকি।কিন্তু অপ্রতিরোধ্য দারিদ্র্যের সুকঠিন বাধা ডিঙিয়ে এত টুকু পথ যারা পাড়ি দিতে পেরেছে,শাণিত মেধার মঙ্গল আলোয় স্বপ্ন পূরণের দৃঢ় প্রত্যয়ে তারা এগিয়ে যাবেই।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।