এদিকে হঠাৎ করে কফ সিরাপের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও গেছে বেড়ে। কিন্তু ফেনসিডিলের তুলনায় কম হওয়ায় মাদকাসক্তরা তাতেও খুশি। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধের দোকানদারা বাড়তি লাভের জন্য গণহারে তা বিক্রি করছেন।
নেশা হিসেবে কফ সিরাপের আশঙ্কাজনক বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। কফ সিরাপ সেবনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তারা বলছেন, নিয়মিত অতিরিক্ত কফ সিরাপ সেবনকারীর মস্তিস্ক বিকৃতি ও শ্বাস-প্রশ্বাস ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিন দিন পঞ্চগড়ের মাদকসেবীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সম্প্রতি ধরপাকড়, দাম বেড়ে যাওয়া ও সহজলভ্য না হওয়ার কারণে ফেনসিডিলের দাম অনেক চাড়া।
শহরের বাস টার্মিনাল, ট্রাক টার্মিনাল, জালাসী মোড়, হারিভাসা, টুনির হাট বেহারী, কাজির হাট,বোড বাজার , ভজন পুর , গোয়াল ঝার ,তেতুঁলিয়া,সালবাহান, জগদল সহ আশপাশ এলাকাসহ শহরের প্রায় শতাধিক এলাকায় নেশার জন্য মাদকসেবীরা এ সিরাপ সেবন করছে।
সূত্র জানায়, আগে ফেনসিডিলের দাম যেখানে প্রতি বোতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ছিল, এখন তা ৮০০ টাকা থেকে ১ হাজায় টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। তাও অনেক সময় মিলছে না। অন্যদিকে এক বোতল ফেন্সিডিল খেলে যে নেশা হয়, মাত্র ৩০ টাকায় দু’টি কফ সিরাপ পান করলে একই নেশা পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেনসিডিলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে তুষকা, ফেনারগান, ডি-প্রোটিন, এক্সপ্রোটিন, প্যানাডিল, হিসটাসিন, অফকফ, ড্রাইডিল, অডোকফ ও প্যাথিড্রিল সিরাপ।
এছাড়া ফ্লোরাজেপাম, সেডিল, সোবানাল, টুইনাল, কেনোবার, গার্ডিনাল, এমিটাল, সানড্রেক্স, ফ্লোরাপাম, ট্রায়াজোনাল, লোবাজিপাম, এটিভান, ভ্যালিয়াম রিলাক্সেন নেশা হিসেবে ব্যবহার করছে আসক্তরা।
অভিযোগ রয়েছে, শহরের ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই এসব কফের সিরাপ নেশাখোরদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে শহরের এলাকার মামুন নামে ফার্মেসি ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্যারাসিটামল, কফের সিরাপ এ জাতীয় ওষুধের ক্ষেত্রে আমরা বেশিরভাগ সময়েই চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখতে চাই না’।
তিনি বলেন, ‘নেশাখোর সন্দেহ হলে আমরা ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কফের সিরাপ বিক্রি করি না।’
মাদকাসক্তরা ড্রাগের খাতায় এসব কফের সিরাপ যুক্ত করলেও এর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোনো অভিযান নেই।