মোঃ মালিক মিয়া, কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পৌষ সংক্রান্তি উৎসব আজ সোমবার। এ উৎসবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে তৈরি হয় নানা ধরনের পিঠা পুলি ও সুস্বাদু খাবার। শীতের সকালে খড়কুটো জ্বালিয়ে
চুঙ্গা পিঠা পুড়ার শব্দে অনেকের ঘুম ভেঙেছে এছাড়াও। এর একটি বড় অংশ হচ্ছে বাজার থেকে বড় আকারের মাছ কিনে খাবার তৈরি করা। ফলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় মুন্সীবাজার, শমশেরনগর,ভানুগাছ , আদমপুর বাজার শহীদ নগর বাজারে বসেছে বিরাট মাছের মেলা। ফলে গতকাল রবিবার সকাল ৮ টা থেকে বিভিন্ন জাতের বড় আকারের মাছ সাজিয়ে বসেন মাছ বিক্রেতারা। বাজারের আসা ক্রেতারা জানান, এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বাজারে নানা জাতের বড় আকারের মাছ উঠে। দাম বেশি হলেও পরে দরাদরি করে কিনে নিতে হয় শমশেরনগর বাজারের মাছ বিক্রেতা বকুল মালাকার, নয়ন মালাকার ,অনন্ত মল্লিক
বলেন, পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রায় ৫ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরনের মাছ সংগ্রহ করেছি। আমাদের সংগ্রহের মধ্যে ১৮ কেজি ওজনের বোয়াল যার দাম হাঁকাছেন ৩০ হাজার টাকা। ১০ কেজি ওজনের বাঘ মাছের দাম হাঁকাছেন ২২ হাজার টাকা
আদমপুর, শহীদনগর, মুন্সি বাজার, ভানুগাছ শমসের নগর এ বাজার গুলোতে মাছ ক্রয় করতে আসা,অশোক দেব, রণজিৎ মল্লিক জানান, পৌষ-সংক্রান্তি উৎসব উপলক্ষে প্রতিবছর মাছের মেলা বসে জেলাজুড়ে। এ উপলক্ষে বছরে একদিন বড়বড় বিভিন্ন জাতের মাছ দেখা যায়। যে যার মতো করে এক বাজার থেকে অন্য বাজার ঘুরে দাম দেখে মাছ ক্রয় করছেন। আমরাও মাছ ক্রয় করেছি। মুন্সিবাজার মাছ আড়ৎদার তাহির আলী জানান,বর্তমানে দেশি মাছের সরবরাহ অনেকটাই কমে গেছে। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে এখন চাহিদা অনুযায়ী মাছ সরবরাহ করতে হয়। তিনি আরোও জানান মাছের মেলা আগামী কাল সোমবার পর্যন্ত
চলবে। সরেজমিন মেলায় উঠেছে বোয়াল, বাঘ, কাতল, চিতল, রুই, বাঘাইড়, কাতলা ও চিতলসহ নানা প্রজাতির মাছ। এ মেলায়। ছোট আকারের মাছের দাম হাকানো হয় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের মাছের দাম হাঁকানো হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আর বড় সাইজের মাছের দাম ৫০ থেকে ১ লাখ টাকাও হাঁকানো হয়। ক্রেতাদের কেউ কেউ জানান, মেলায় নানা জাতের বড় আকারের মাছ উঠলেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের সাথে দাম দরাদরি করে মাছ কিনে নিতে হচ্ছে। এদিকে শীতের সকালে খড়কুটো জ্বালিয়ে সারারাত চুঙ্গাপুড়ার দৃশ্যও তাই দেখা গেছে।বিশেষ করে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব পৌষ সংক্রান্তির সময়। দুই থেকে তিন ফুট বাঁশ দিয়ে। এগুলো স্থানীয়ভাবে ‘চুঙ্গার বাঁশ’ নামে পরিচিত।দুধ, চিনি, নারকেল, কনডেস্ট মিল্ক, চালের গুঁড়া, কাজু, বাদাম, পেস্তা বাটা ও কুঁচো দিয়ে পিঠা তৈরি হয়। হয়ে গেলে তা চোঙ্গার ভেতরেই চোঙ্গা থেকে আলাদা হয়ে যায়। চুঙ্গা পিঠা পোড়াতে খড়ের প্রয়োজন।ধান কাটার পর পড়ে থাকা খড়ের স্তূপে আগুন দিয়ে তৈরি করা হয় এই পিঠা । এ বাঁশগুলো কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ, আদমপুর, মুন্সীবাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে দেখা যায়
পিঠা তৈরী করার জন্য মুন্সীবাজারে ডলুবাঁশ নিতে আসা নিবাস চন্দ, এবং আব্দুল হান্নান ছিনু মিয়া বলেন,আসলে সব সময় তো এই জিনিসগুলো পাওয়া যায় না। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে এগুলো খুব কম পরিমান বাজারে উঠেছে। তবে আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগে প্রচুর দেখা যেতো।