ঢাকাSaturday , 18 August 2018
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাথরাইল ইউনিয়ন ভূমি অফিস যেন মধুর হাড়ি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবু সাদেকের বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ

Link Copied!

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ॥টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আবু সাদেকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঘুষ দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দেশের ভূমি অফিস গুলোতে দুর্নীতির দৌরাত্ম্য নতুন নয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ঘুষ বাণিজ্য এখনও দূর হয়নি। খারিজ ও বিভিন্ন ধরনের ফরম নিতে ভূমি অফিসে ঘুষ দিতে হয়। আর কোন তথ্য জানতে গেলে ‘জমির এ কাগজ নাই, ঐ কাগজ নাই’। কাগজ ঠিক করে আনেন। জায়গার মালিক কি করেন। আর কেউ কাগজপত্র ঠিক করে নিয়ে গেলেও তাকে সরকারি নির্ধারিত ফ্রি’র চেয়ে প্রায় কয়েকগুন বেশি টাকা দিতে হয় ভূমি কর্মকর্তা মো. আবু সাদেককে। টাকা দিলে কাজ হবে তা না হলে নিজের কাজ নিজেই করে নেন বলে জানায় এই ভূমি কর্মকর্তা।
জানা যায়, পাথরাইল ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবু সাদেক প্রায় দুই বছর ধরে এ ভূমি অফিসে দায়িত্ব পালন করছেন। আর তিনি যোগদানের পর থেকেই যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছেন। এলাকার সাধারণ মানুষ ভূমি কর্মকর্তা আবু সাদেক এর কাছে খারিজ করতে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা নিচ্ছে। আবার লোক বুঝে অনেকের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যেখানে খারিজ করতে সরকারি নির্ধারিত ফ্রি ১১৫০ টাকা লাগে সেখানে ভূমি কর্মকর্তা নিচ্ছেন প্রায় কয়েকগুন অতিরিক্ত টাকা। আবার কেউ যদি তার চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার সাথে খারাপ আচরণ করে থাকে এ কর্মকর্তা।
অপরদিকে সাধারণ মানুষ তার কাছে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া গেলে বিভিন্ন কায়দা-কৌশল করে হয়রানি করে থাকে। আর অতিরিক্ত টাকা দিলেই খারিজ এর কাগজ পাওয়া যায়। টাকা ছাড়া কোনো কাজ করে না এই ভূমি কর্মকর্তা আবু সাদেক। এ অফিসে টাকা হলে সব হয়। টাকা না দিলেই সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের বিভিন্ন বাহানায় হয়রানি করে থাকে। এছাড়া মোটা অংকের টাকা দিলেই জমির খতিয়ান পাওয়া যায়। এতে করে জমির প্রকৃত মালিকরা পড়ছেন নানা জটিলতায়।
সরেজমিন অনুসন্ধানে এ প্রতিবেদক বরটিয়া এলাকার একটি জমির কাগজপত্র নিয়ে খারিজ করাতে গেলে ওই ভূমি কর্মকর্তা কাগজপত্র দেখে ১৫ হাজার টাকায় কাজ করবেন বলে জানায়। পরবর্তীতে অনেক অনুরোধ করার পর তিনি ১০ হাজার টাকায় খারিজ করাতে রাজি হয়। পরে এ প্রতিবেদক সরকারি ফ্রি ১১৫০ টাকা কিন্তু আপনি ১০ হাজার টাকা নিচ্ছেন বিষয়টি বুঝলাম না একটু বলবেন কি? জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, সরকারি ফ্রি তো থাকবেই। সরকারের কাছে তো ওই টাকা জমা দিতে হবে। আর আমাদের এ খারিজ করার জন্য অনেক জায়গায় যেতে হয়। অনেক কাগজপত্র খুজে বের করে সকল কাগজ পত্র যাচাই-বাছাই করে ভূমি কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যেতে হয়। এতে তো অনেক খরচ হয়। আর আপনি যদি পারেন বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে ঘুরে কাজ করে নিয়ে আসেন।

পরে এ প্রতিবেদক ওই ভূমি অফিস থেকে চলে আসেন। কিছুক্ষন পর আবার ওই ভূমি অফিসে যায় এবং তার পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন অতিরিক্ত টাকা বা ঘুষ নেই না। আপনি যদি পারেন আমাকে প্রমান দেন। পরবর্তীতে এ প্রতিবেদক একটি ভিডিও ফুটেজ ও অডিও রেকর্ড তাকে দেখানোর পর সে শুধু বলেন যদি কোন ভাবে আমার বিষয়টি মিমাংসা করা যায় তাহলে করেন। আপনারা যেভাবে বলবেন আমি তাই করবো। তবে আমার বিষয়টি দেখবেন। আর যদি নিউজ করে আমাকে বদলি বা বহিষ্কার করতে পারেন তাহলে যা খুশি করেন। পরে এ প্রতিবেদক ভূমি অফিস থেকে চলে যায়। এরপর থেকেই নিউজটি প্রকাশ না করার জন্য শুরু হয় বিভিন্ন মহলের তদবির।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ২ বছর ধরে আবু সাদেক পাথরাইল ভূমি অফিসে কর্মরত আছে। সে এখানে যোগদান করার পর থেকে যা খুশি তাই করে যাচ্ছে। কোন জমির খারিজ করাতে গেলে তিনি বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেন। আর যে খারিজ গুলোর কাজ করেন তার জন্য তাকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। সরকারি যে ফ্রি আছে তা সে অনুসরণ করে না। কারো কাছ থেকে ৫ হাজার আবার কারো কাছ থেকে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকাও নেয়। আমরা এ ভূমি কর্মকর্তার অপসারন চাই। সরকার এ ভূমি কর্মকর্তা আবু সাদেকের এমন বিচার করুক যে অন্য কোন ভূমি কর্মকর্তা যেন এ ধরনের কাজ করতে সাহস না পায়।
ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, রিফাতসহ আরো অনেকেই বলেন, আমরা জমির খারিজ করানোর জন্য পাথরাইল ভূমি কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা চায়। এর নিচে তিনি খারিজের কাজ করতে পারবেন না। তাকে ৩ হাজার টাকায় একটি খারিজ করতে অনুরোধ করা হলেও সে ৬ হাজার টাকার নিচে কোন কাজ করতে পারবেন না বলে জানায়। ওই কর্মকর্তা এ এলাকার আরো অনেকের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে খারিজের কাজ করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা বেশি টাকা দিতে রাজি হয়নি বলে আমাদের কাজ হয়নি।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে অন্য এলাকায় এ ধরনের আরেকটি ঘটনা আমি শুনেছি এবং তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আমি পাথরাইল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. আবু সাদেকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।