মোঃ আলী হাসান: পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ রাত তখন পৌনে ২ টার মতো। সন্তান প্রসবের ব্যাথায় কাতর ছিল প্রসুতি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রাধাবাড়ি গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে আরিফা আক্তার। শত চেষ্টা করেও বাড়িতে যখন সন্তান জন্মদিতে অপারগতা প্রসুতির। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঠিক তখনি যেন আসমান ভেঙে মাথায় পড়ার উপক্রম বাবা আমিনুলের।
সকল বাঁধা অপেক্ষা করে মেয়েকে হাসপাতালে নিতে এলাকার প্রতিটি রিকশা ভ্যান, ইজি-পাওয়ার চালকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কেউ রাজি হয়নি হাসপাতালে যেতে। কারন প্রসুতির ছোটভাই স্বাধীন গত ৯ এপ্রিল নারায়নগঞ্জ থেকে বাড়ি আসলে থানা পুলিশ হোম কোয়ারাইন্টের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় তার বাড়ির দড়জায়। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মিরা স্বাধীনের করোনা ভাইরাস নির্ণয়ে তার নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী পাঠিয়েছে। মেয়ের বাবা বলেন, সোমবার গভীর রাতে মেয়ের এ অবস্থায় যখন কেউ এগিয়ে আসেনি তখন অবশেষে থানা পুলিশকে ফোনে ঘটনা জানালে একটু পরেই আমার বাড়িতে থানার ওসি মনসুর রহমান এসে হাজির হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফোনে কথা বলে এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন। জয়পুরহাট পদ্মা ক্লিনিকে মেয়েকে ভর্তি করালে ভোর রাতে মেয়ের একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করে। মেয়ের বাবা আমিনুল বলেন, থানার ওসির এমন মহানুভবতার জন্য আমার মেয়ে এতবড় একটা বিপদ থেকে রক্ষা পেল এজন্য আল্লাহ নিকট তাঁর জন্য প্রাণ খুলে প্রার্থনা করি ওসি’র যেন ভালো হয়। থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনসুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাত দু’টার দিকে একটা ফোন আসে এবং কিছু বলার আগেই শুধু কাঁদে এক পর্যায়ে তাঁকে সান্তনা দিয়ে বলি কি সমস্যা বলেন। কান্না জড়িত কন্ঠেই রাধাবাড়ি এলাকার আমিনুল তাঁর মেয়ের ঘটনা খুলে বলেন। আমি গাড়ি নিয়ে দ্রুত তাঁর বাড়িতে যাই এবং মহিপুর ও জয়পুরহাট হাসপাতালে যোগাযোগ করে এ্যাম্বুলেন্স ডেকে প্রসুতিকে জয়পুরহাট পাঠানোর ব্যবস্থা করি। পর দিন সকালে মেয়ের বাবা ফোনে তাঁর মেয়ের একটা ছেলে সন্তান হওয়ার সুখবর দেয় এবং মা-ছেলে ভালো আছে এটাও জানায়।
এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।