ঢাকাSunday , 20 May 2018
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নবীগঞ্জে শতহাত লম্বা বাড়িতে থাকতেন শুধুই পুত্রবধূ ও শ্বাশুড়ি

Link Copied!

মোঃ সুমন আলী খাঁন, হবিগঞ্জ সংবাদদাতা: হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আলোচিত বউ-শ্বাশুড়ি হত্যাকান্ডের তিন দিনের মাথায় পুলিশ রহস্য উদঘাটন করলেও এখন আলোচিত ওই বাড়ি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। শতহাত লম্বা ওই বাড়িতে কোন পুরুষ বসবাস করতেন না। শুধু মাত্র মালা বেগম ও রুমি বেগমই বসবসা করতেন বিশাল ওই বাড়িতে। ৬টি রুম ও বিশাল একটি বারান্দা বেষ্টিত ওই বাড়িটির কোন সীমানা দেয়াল নেই। যে কারণে বাড়ির আশ-পাশ দিয়ে অবাধে চলাফেরা করতে কারোই কোন অসুবিধা হতোনা। বাড়ির দক্ষিণ পাশ বিভিন্ন গাছপালায় ভরপুর। মনোরম পরিবেশ সবুজ-শ্যামল ঘেরা পাকা ধানের ফসল বাড়ির উত্তর দিকে বারান্দা থেকে দেখা যায়। জানা যায়, এই বাড়িতে প্রায় দেড় বছর যাবত বসবাস করে আসছেন রাজা মিয়ার স্ত্রী ও লন্ডন প্রবাসী আখলাক চৌধুরীর মা মালা বেগম (৫২) ও স্ত্রী রুমি বেগম (২২)। সবসময় নিরব পরিবেশ বজায় থাকতো। বাড়িতে রয়েছে দুটি গেইট। যার উত্তর পাশের গেইট সবসময় তালা দিয়ে বন্ধ করা থাকে এবং অপর গেইটও তালা দিয়ে বন্ধ করে রাখা হতো। সবসময় ভয় কাজ করতো তাদের মধ্যে। সেজন্যই অপরিচিত কেউ আসলে গেইট খুলে দিতেন না মালা বেগম ও পুত্রবধূ রুমি বেগম। তারা গৃহবন্ধীদের মতো জীবনযাপন করলেও হাসিখুশি ও সুখে শান্তিতেই থাকতেন সব সময়। সুখ চিরস্থায়ী নয় আর সেটাই বাস্তব রূপে রূপান্তরিত হল। যা বর্তমানে শুধুই স্মৃতি। প্রসঙ্গত, গত (১৩ মে) রবিবার রাতে ওই উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের সাদুল্লাপুর গ্রামে নির্মম ভাবে খুন হন প্রবাসীর স্ত্রী রুমি বেগম ও মা মালা বেগম। একই গ্রামের ফুরুক মিয়া চৌধুরীর বাড়ির কাজের ছেলে আবু তালেব ও বখাটে জাকারিয়া আহমেদ শুভ’র হাতে প্রাণ হারাতে হয় তাদের। উল্লেখ্য, প্রবাসীর স্ত্রী গৃহবধূ রুমী বেগমকে ধর্ষণ করাকে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। রুমি বেগমের স্বামী লন্ডনে থাকেন। দুই বছর পূর্বে আখলাক চৌধুরীর সাথে বিয়ে হয় তার। হত্যাকান্ডের কয়েকদিন পূর্বে লন্ডন প্রবাসী স্বামী আখলাক চৌধুরী তার এক বন্ধু রিপনকে মোবাইলের একটি কাভার কিনে তার স্ত্রী রুমি বেগমকে দিতে বলেন। রিপন ব্যস্ত থাকায় গত ১১ মে তার ভাই জয়কে দিয়ে এই কাভার রুমি বেগমের বাড়িতে পাঠান। জয় মোবাইলের কাভার নিয়ে যাওয়ার সময় ওই এলাকার জাকারিয়া আহমেদ শুভ নামে এক বখাটের সাথে পরিচয় হয়। তখন জয়ের সাথে বখাটে শুভও রুমিদের বাড়িতে যায়। জয় মোবাইল কাভারটি রুমি বেগমকে দিলে সেটি তার পছন্দ না হওয়ায় ফেরত দেন। এ সময় রুমি বেগমকে দেখে বখাটে শুভ তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। শুভ জানতে পারে রুমি বেগমদের বাড়িতে অপরিচিত কেউ গেলে গেট খুলে দেয়া হয় না। একই গ্রামের ফুরুক চৌধুরীর বাড়িতে কর্মরত শ্রমিক তালেব মিয়া মাঝে মধ্যে ওই বাড়িতে গিয়ে কাজ করেন। এরই সুবাধে শনিবার (১২ মে) শুভ তালেব মিয়ার সাথে দেখা করে তাকে মোবাইলে থাকা পর্নোগ্রাফী দেখায়। এরপর তারা পরিকল্পনা করে রবিবার (১৩ মে) রাতে গিয়ে লন্ডন প্রবাসীর স্ত্রী রুমি বেগমকে ধর্ষণ করবে। রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় ওই বাড়িতে গিয়ে প্রথমে তালেব মিয়া প্রবাসীর মা মালা বেগমকে দাদী সম্বোধন করে ডাক দেয় এবং গেইট খুলতে বলে। গেইট খুলার পর তালেব মিয়ার সাথে শুভও ভেতরে চলে যায়। তখন মালা বেগম ওই ছেলের পরিচয় জানতে চাইলে শুভ’র হাতে থাকা ছোরা দিয়ে মালা বেগমকে আঘাত করার চেষ্টা করে। মালা বেগম দৌড়ে ঘরে গেলে পিছনে গিয়ে তারা দুইজন তাকে ওড়ানা দিয়ে বেধে ফেলে এবং ছোরা দিয়ে আঘাত করতে থাকে। তার শোর-চিৎকার শুনে পাশের ঘরে থাকা গৃহবধূ রুমি বেগমও চিৎকার শুরু করেন। এ সময় শুভ রুমি বেগমকেও ছোরা দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করলে রুমি বেগম দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসলে তালেব মিয়াও তার পিছু নিয়ে উঠানে এসেও আঘাত করে। ঘটনার সময় ওই বাড়ির পাশে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুছা’র বাড়িতে মিটিং ছিল। সেখান থেকে লোকজন চিৎকার শুনে এসে রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় তাদের দুজনকে দেখতে পান। এত বড় ঘটনার পর তালেব মিয়া এবং শুভ তাদের ব্যবহৃত ছোরা এবং রক্তমাখা কাপড় ধূয়ে স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় চলাফেরা করে। তাদেরকে গ্রেফতার করে তিনদিন ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রবাসীর স্ত্রী রুমিকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে ঘরে প্রবেশ করে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যাকান্ড ঘটায় বলে আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে জানায় বখাটে শুভ ও তালেব। গত বৃহস্পতিবার (১৭ মে) সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় আসামীরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় জাকারিয়া আহমেদ শুভ ও আবু তালেব। পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।