ঢাকাMonday , 20 May 2019
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জাবিতে ‘শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ’ নিয়ে বিতর্ক, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

Link Copied!

সাঈদ বিন ইসলাম,জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত ‘শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ’-এ নতুন করে যোগ করা দুইটি ধারা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিকরা বলছেন শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ করতেই ধারা দুটি যুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ‘শৃঙ্খলাঅধ্যাদেশ’-এর বিতর্কিত ধারা বাতিল করতে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট,ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব সহ বেশ কয়েকটি সংগঠন থেকে প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এ সব সংগঠন থেকে শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে নতুন অধ্যাদেশ প্রণয়নের দাবি করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে উচ্চ আদালত এক রায়ের পর্যবেক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খখলা বিধিকে ‘দুর্বল ও সেকেলে’ উল্লেখ করে তা হালনাগাদের পরামর্শ দেয়। শৃঙ্খলাবিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করতে ওই বছরের ১৬ মে তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেনকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়। ওই কমিটির হালনাগাদ করা শৃঙ্খলা বিধি গত ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাদেশ হিসেবে অনুমোদন পেয়েছে।

সংশোধিত অধ্যাদেশের ৫-এর (ঞ) নাম্বার ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনও ছাত্র/ছাত্রী অসত্য এবং তথ্য বিকৃত করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনও সংবাদ বা প্রতিবেদন স্থানীয় / জাতীয়/ আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে / সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ / প্রচার করা বা উক্ত কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না।’
৫-এর (থ) নাম্বার ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনও ছাত্র/ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর উদ্দেশে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টানেটের মাধ্যমে কোনও অশ্লীল বার্তা বা অসৌজন্যমূলক বার্তা প্রেরণ অথবা উত্ত্যক্ত করবে না।’

অধ্যাদেশ মতে, ধারা দুটির ব্যত্যয় ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে ‘অসদাচরণ’ বলে গণ্য হবে। এজন্য লঘু শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরু শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার উর্ধ্বে যেকোনও পরিমাণ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

আইনজীবি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশের আচরণবিধি অংশে উল্লেখিত ৫(ঞ) এবং ৫(থ) ধারা দুটি বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৯ চিন্তা ও বিবেকের স্বধীনতা ও বাক স্বধীনত এবং অনুচ্ছেদ ৪০ পেশা বৃত্তির স্বধীনতা পরিপন্থী। স্বধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বধীনতার উপর হুমকি হতে পারে এই ধারা।
অসত্য, তথ্য বিকৃতি, আশালীন বার্তা বা অসৌজন্যতামুলক বার্তার কোন সংজ্ঞা কিংবা ব্যাখ্যা না থাকবার কারণে ধারা দুটি নিপীড়নমূলক হয়ে উঠতে পারে এবং উঠবে এটাই স্বাভাবিক। এছাড়া বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে অসত্য কিংবা বিকৃত তথ্য প্রকাশ বা ছড়ানোর বিষয়ে যথাযথ আইন রয়েছে। এরপরেও এই ধরনের ধারা সংযোজন আপাত:দৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কিছু গোপন করবার কিংবা গোপন রাখবার প্রয়াস।

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব এর সভাপতি মো. মূসা বলেন, ‘এ অধ্যাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা এবং সংবাদকর্মীদের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। এর ফলে অন্যায়ের প্রতিবাদ বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি অসৎ উদ্দেশ্য সাধনকারীদের সুযোগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।’

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন,‘এই ধারা গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বধীনতা সংকুচিত করা চেষ্টা। আমি এই প্রেক্ষিতে সবাইকে ফের জাকসু নিয়ে সরব হতে বলব। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ করার প্লাটফরম নাই। জাকসু থাকলে এইসব বিষয় প্রশাসনের সাথে বসে সমাধান করা যেত।’

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘সংযোজিত ধারা প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের কন্ঠ চেপে ধরার অপচেষ্টা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি বিরুদ্ধে যাতে শিক্ষার্থীদের কথা না বলে সে লক্ষ্যে এই ধারা তৈরী করা হয়েছে। এই ধারা শিগগিরই সংশোধন করার দাবি জানাই।’

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন বলেন, শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ প্রণয়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট পর্যালোচনা করার সুযোগ হয়নি। নতুন বর্ষের প্রবেশিকা অনুষ্ঠানকে সামনে থাকায় তাড়াহুড়া করে অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পক্ষের আপত্তি থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সংশোধন করা যেতে পারে।’

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।