ঢাকাTuesday , 1 August 2023
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জয়পুরহাটে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে

Link Copied!

পুলাক সরকার, স্টাফ রিপোর্টরঃ
০১ আগষ্ট/২৩
জয়পুরহাটে সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের সগুনা গোপিনাথপুর সৃজনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি নুরুন্নবীর একক স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির কারনে প্রায় দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর পড়ালেখার অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
নুরুন্নবী ওই ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের মৃত অছির উদ্দীন মন্ডলের ছেলে। তিনি ১৯৮৬ সালে সৃজনী নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গঠন করেন। যার রেজিঃ নং- জয়-১/৮৬। এর পর সংগঠনটির ২৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। সরেজমিনে দেখা যায় কমিটির অধিকাংশ ব্যক্তি  নুরুন্নবীর আত্মীয়-স্বজন।
সংগঠনটির গঠনতন্ত্রে সৃজনীকে স্কুলটির মালিকানা দেখানো হয়েছে। নুরুন্নবী ১৯৭৩ সালে সরকার হতে সগুনা গোপিনাথপুর মৌজায় ১.৫০ একর জমি লিজ গ্রহণ করেন। এই লিজ নেওয়া জমি ১৯৮৯ সালে সৃজনী উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণে হস্তান্তর করেন। ১৯৯৪ সালের ১লা জানুয়ারী প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভূক্ত হয়।
১৯৯০ সালে কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চারুকলায় নিজ বড় ভাই দশম শ্রেণী পাশ নুরুল ইসলামকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। তার স্বাক্ষরে পরবর্তী প্রধান শিক্ষকসহ ৪ জন সহকারী শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করেন। কিন্তু তাদের বেতন না দেওয়ায় একযোগে স্কুল থেকে চলে যায়। এরপর একই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে পরবর্তী নিয়োগ দেন।
১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হলে নুরুন্নবী সৃজনী সংগঠনের পদাধিকার বলে স্কুল পরিচালনা কমিটিরও সভাপতি হতে পারবেন মর্মে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে আসেন। তখন থেকেই তার উদ্ধত্য ও স্বেচ্ছাচারিতা বৃদ্ধি পায়।
তিনি এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের ভাতা, টাইম স্কেল, অবসরভাতা, কল্যাণ ভাতা শীটে স্বাক্ষর প্রদান করেন নি। ফলে শিক্ষকদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। ১৯৯০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ২১ জনকে প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেন।
স্কুলের রেজুলেশন খাতা, সাধারণ তহবিলের পাশবই, চেক, এফডিআর, প্রতিষ্ঠান পরিচালনার এমন কার্যকরী কাগজপত্রাদী প্রতিষ্ঠানে না রেখে নিজের কাছে রাখেন। আবার বিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড নিজের অধীনে রাখতে এমপিও ভুক্ত অফিস সহকারী অমূল্য চন্দ্রকে প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় ৫ই আগস্ট ২০১৮ সালে সাময়িক বরখাস্ত করে তার স্থলে নুরুন্নবীর ভাতিজা নিয়াজ  হোসেন বলাকাকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেন।
এছাড়াও  নুরুন্নবীর প্রতিষ্ঠিত সৃজনী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি স্কুলের উন্নয়নে কোন রকম কাজ করেনি। অন্যান্য শিক্ষক, বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও জনপ্রতিনিধিরা প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে এগিয়ে আসলে তাদেরকে মিথ্যা মামলায় জড়ান। এমন মামলার সংখ্যা ২৬ টি। পরবর্তীতে মামলাগুলো ভিত্তিহীন হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত সবকটি মামলা খারিজ করেন।
অফিস সহকারী অমূল্য চন্দ্র সরকার জানান, চাকরীতে ফিরতে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন সৃজনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি নুরন্নবী । আমি তা প্রত্যাখ্যান করি। পরবর্তীতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্মরাণাপন্ন হই। তারা আমাকে পুর্ণবহাল ও বেতন ভাতা প্রদানের নির্দেশ দেন।
২০০৬-২০০৭ অর্থ বছরে শিক্ষকদের বিল শিটে নুরুন্নবী স্বাক্ষর না করায় শিক্ষকগণ অদ্যবধি ১৬ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা বেতন উঠাতে পারেননি। এছাড়াও তার ভাতিজা বলাকার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বেতন, সেশন ফি, ফরম ফিলাপ ফি, রেজিঃ ফি আদায় করে ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত স্কুলের ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।
২৮ ফেব্রয়ারী ২০১৭ সালে সৃজনী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর হতে অনুমোদন পান। কিন্তু আজ পর্যন্ত অধিদপ্তরের শর্ত পূরণ করে কোন কমিটির অনুমোদন করা হয় নি। সৃজনীর গঠনতন্ত্রে সৃজনী নামক সংগঠনের ললিতকলা একাডেমী ও গ্রন্থাগার পরিচালনার কমিটি দেখানো হলেও এর কোন অন্তি নেই।
এসব বিষয়ে স্কুলটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে  তিনি বলেন, অভিযোগ সমূহ সত্য বলে প্রতীয়মান হলেও বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পক্ষের নিকট তদন্তে দাবী রাখে।
সাবেক প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ জানান, আমার সময় অফিস সহকারী অমূল্য চন্দ্র বরখাস্ত হয়েছে কিনা  তা এ মূহুর্তে মনে পরছে না।
জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক জানান, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রথম বিএ/বিএড মান সম্পন্ন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পর তার মাধ্যমে অন্যান্য শিক্ষক/কর্মচারী নিয়োগে যেতে পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রমে নিয়মনীতির অনুসরণ করতে হবে। যদি কোন শিক্ষক বা কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত হন তবে তিনি হাজিরা খাতায় সই করে স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানেই থাকবেন।
প্রধান শিক্ষক বা কমিটি শিক্ষার্থীদের টাকা উত্তোলন করলে তাৎক্ষনিক ব্যাংক একাউন্টে জমা দিতে হবে। কমিটি বা কেউ ইচ্ছাকৃত হয়রানীর জন্য শিক্ষক বা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন না।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ সালেকুল ইসলাম জানান, মেয়াদ শেষে যদি  কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নতুন করে কমিটির অনুমোদন না নেন। সংগঠনের শর্তসমূহ পূরণ না করে। তবে সংগঠনটির কোন বৈধ্যতা থাকে না। আমরা সংগঠনটিকে নিস্ক্রীয় হিসেবে ধরে নিই। সৃজনী সম্পর্কে এমন অভিযোগ পেলে সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিলের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত সুপারিশ করবো।
এসব বিষয়ে নুরুন্নবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।