ঢাকাFriday , 5 April 2019
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কমলনগরে সরকারি খাল দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান

Link Copied!

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার পাটওয়ারীহাট ইউনিয়নের খায়েরহাট বাজার সংলগ্ন সরকারের খাস খতিয়ানের খাল দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রাজুর বিরুদ্ধে। দল ও চেয়ারম্যানের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধমকির মাধ্যমে চর ফলকন মৌজার পাটওয়ারী হাট ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে জোর পূর্বক অন্যের দখলীয় জমি দখল করে ঘর নির্মাণ এবং নামে বেনামে ভূয়া নথি তৈরিসহ এ সব অপকর্ম করছেন তিনি। কেউ প্রতিবাদ করলেই হয়রানিমূলক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। যার কারনে ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা ভুক্তভোগীরা। এতে আতঙ্কে রয়েছে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে প্রায় দু’কোটি টাকা মূল্যের সরকারের জায়গা উদ্ধারের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবরে উচ্ছেদের জন্য আবেদন দিলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না উপজেলা প্রশাসন। উচ্ছেদের জন্য আবেদনের খবর পেয়ে রাজু চেয়ারম্যান ও তার লোকজন ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস ছাত্তারকে মামলায় জড়ানোসহ বিভিন্ন হয়রানির হুমকিও দেন। দলের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জায়গা দখলসহ তাঁর সকল অপকর্মের কারণে স্থানীয় ও উপজেলা আওয়ামীলীগহ বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতা কর্মীদের মাঝে অসন্তোস দেখা দিয়েছে।
চরফলকন স্থানীয় ভূমি অফিসের তথ্য সূত্রে জানা যায়, পূর্ব চরফলকন মৌজার ৪০৮২ দাগে ১২.৭৬ একর খাস জমি। যেটি শ্রেণিতে খাল । ওই দাগের ৬৪ শতাংশ খাস জমি চেয়ারম্যান এডভোকেট নুরুল আমিন রাজু তার স্ত্রী শিরিন আমিন মুক্তার নামে দলিল করে নেয়। খাস জমি হওয়া সত্ত্বেও আইনপেশায় নিয়োজিত থাকার সুবাদে রাজু চেয়ারম্যান জালিয়াতির মাধ্যমে এ দলিল করে বলে জানা যায়।
তাছাড়া ৪০৮২ দাগের ১.৪৪ একর জমি আবু ছায়েদ, পিতা আব্দুল জলিল নামে ২০০১ সালের একটি বন্দোবস্ত নথি পাওয়া যায়। এ আবু ছায়েদ চেয়ারম্যানের ফুফাত ভাই হওয়ায় কৌশলে চেয়ারম্যান জাল জালিয়াতি করে তার নামে বন্দোবস্ত নিয়ে পুরো জমি দখল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, সরকারের ১নং খতিয়ানের খাস জমির বিরাট অংশ রাজু চেয়ারম্যান তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতজনের নামে ভূয়া নথি করে রেখেছেন। বিভিন্ন সময় সেই নথির সুবাদে মানুষের দীর্ঘদিনের বসতভিটা ও দোকানঘরে মালিকদের বিভিন্ন অজুহাতে টাকা দাবি করে এবং টাকা না দিলে তার লোকজন দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করেন। এ সব বিষয়ে অতিষ্ট হয়ে ভুক্তভোগীরা জাল জালিয়াতি তৈরিকৃত নথি বাতিলের জন্য গত বছরের ১ জুলাই জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে তা তদন্ত দেয় চরফলকন ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে। তদন্ত শেষে অনিয়মের সত্যতা পেয়ে স্থানীয় ভূমি অফিস ওই বছরের ২২ অক্টোবর প্রতিবেদন দেয় এবং লাল পতাকার খুঁটি লাগিয়ে দিয়ে ভূমিটি তাদের নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু রাতের আঁধারে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে সেই লাল পতাকা ও খুটি তুলে ফেলে এবং ওই বিরোধকৃত জায়গা থেকে কয়েক লক্ষ টাকার গাছ কেটে নিয়ে যায় এবং বিরাট অংশ দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেন।
চরফলকন ইউনিয়নের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা (তহসীলদার) আব্দুস সাত্তার বলেন, এটা সরকারি খাস জমি এবং শ্রেণীতে খাল। তাই এ জমি বন্দোবস্ত বা বিক্রি করার কারো সুযোগ নেই। ক্ষমতার অপব্যবহার ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমেই চেয়ারম্যান এটি অবৈধভাবে দখল করছে। সরকারের এ ভূমি উদ্ধারের জন্য বার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছি। রাজু চেয়ারম্যান ক্ষমতার দাফট দেখিয়ে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকিও দিচ্ছে। বিষয়টি আমি আমার উর্ধ্বতন মহলকে অবগত করছি। আমি আশা করছি খুব শীঘ্রই অবৈধভাবে দখল হওয়া সরকারের জায়গা উদ্ধার করা হবে।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাস্টার নুরুল আমিন জানান, নীতিগতভাবে আওয়ামীলীগ দখলের রাজনীতি করেনা। কেউ যদি দলের প্রভাব খাটিয়ে অন্যের জায়গা দখল করে সেটা একান্তই তার ব্যাক্তিগত। তবে দখলের রাজনীতিকে আমি মনে প্রাণে ঘৃণা করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রাজু দাবী করেন যে জায়গাতে আমি দখল আছি সেটা পিএস এমআরতে আমি মালিক। পরে সরকার খাস করার কারণে আমি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে আমার নামে রায় করিয়ে নিয়েছি। তাছাড়া ওই দাগে জমি ১২.৭৬,আমার জমি হলো ৬৪ শতাংশ। খালি আমার ৬৪শতাংশ নিয়ে ঝামেলা করছে তহসীলদার। বাকি জমির ব্যাপারে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তসীলদার আমার কাছে টাকা দাবি করায় আমি তাকে রাগ হয়েছি।
কমলনগর উপজেলা সহকামি কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, দখলের বিষয়টি শুনে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছি। সরকারের এক ইঞ্চি জায়গাও কেউ দখল করে রাখতে পারবেনা সে যত বড় প্রভাবশালী হউক। খুব শীঘ্রই ওই জায়গা উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হবে।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।