ঢাকাSaturday , 30 September 2023
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রামু সহিংসতার ১১ বছর আজ-ফিরেছে সম্প্রীতি, সাক্ষীরা জানেনা আসামি কারা

Link Copied!

নীতিশ বড়ুয়া, রামু (কক্সবাজার) : কক্সবাজারের রামু উপজেলার বৌদ্ধপল্লিতে হামলার ১১  বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর  ইতিহাসের বর্বর ধ্বংসলীলা চালানো হয়েছিল এই জনপদে। এ ঘটনায় শত বছরের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বড় ধরনের ফাটলের সৃষ্টি হয়েছিলো।
>>> শেখ হাসিনার সরকারের আন্তরিকতায় ধ্বংসস্তুপের মাঝে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধ বিহার। বৌদ্ধ পল্লীর হারানো ঘরগুলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। সে সাথে শত বছরের হারানো সম্প্রীতি আগের জায়গায় ফিরে এসেছে বলে মনে করছেন রামুর সচেতন মহল।
>>> তবে রামু সহিংসতার ১১ বছর পরও বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়ায় স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ হতাশ। মামলার চার্জশিট দাখিল নিয়েও তারা অসন্তোষ।
>>> বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে চিহ্নিত অনেক মানুষ মামলার আসামি হয়নি, আবার নিরপরাধ অনেকেই আসামি হয়েছে। মামলার তদন্তেও অনিয়মের কথা বলছেন অনেক বৌদ্ধ নেতা।
>>> জানা যায়, এ ঘটনার পর কক্সবাজার আদালতে ১৯ টি মামলা হয়। তৎমধ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির করা মামলাটি আপোষে নিষ্পত্তি হয়। পুলিশের দায়েরকৃত ১৮টি মামলায় আসামি করা হয় ১ হাজার ২০ জনকে। যারা বর্তমানে সবাই জামিনে আছে ।
>>> রামুর বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু ও কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের সহকারী পরিচালক (আবাসিক) প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, মামলার প্রক্রিয়াটি আরও যাচাই-বাছাই জরুরি। এতে যেসব নিরীহ লোক হয়রানির শিকার হচ্ছে, তাদের বাদ দিয়ে প্রকৃত দোষীদের আসামি করে বিচারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
>>> রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, কক্সবাজারবাসির জন্য রামুর ঘটনাটি গ্লানিকর ব্যাপার ছিল। এ ঘটনায় ১৯ মামলার মধ্যে ১টি মামলা আপোষ হয়েছে। বাকিগুলোর সাক্ষী চলছে। অনেক কষ্ট করে কয়েকটি মামলার সাক্ষী করিয়েছি। ইনশাআল্লাহ এ মামলাগুলো আমরা শেষ করতে পারবো। মামলার সাক্ষীরা একটু গড়িমসি করলেও আমরা রামু, উখিয়ার বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রেখেছি, বাকি সাক্ষীদের এনে মামলাগুলো নিষ্পত্তি করতে। তিনি বলেন, যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মানবতারনেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি ও নান্দনিক মন্দির করে দিয়েছেন, তারা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি।
>>> কয়েকটি মামলার সাক্ষীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রামুতে সহিংস ঘটনায় আমাদের নাম সাক্ষীর তালিকায় থাকলেও তা আমরা জানতামনা। মামলার নোটিশ পেয়ে আদালতে হাজির হই। মুলত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে ঘটনার সময় আমরা ভয় ও আতংকিত ছিলাম। ঘটনা কারা ঘটিয়েছে আমরা তা দেখিনি।
>>> রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার  ফাহমিদা মুস্তফা বলেন, বর্তমানে রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায় খুবই ভালো আছে। তাদের মধ্যে আবারও সেই শতবছর আগের সম্প্রীতি ফিরে এসেছে। যে ঘটনা ঘটেছে, তার ক্ষত এখন আর নেই। সবকিছু বদলে গেছে। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা প্রয়োজন, সব করছি।
>>> উল্লেখ্য যে, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে গুজবের জেরে রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয় একদল দুর্বৃত্ত। ভাঙচুর করা হয় শত বছরের মূর্তি ও মন্দির। আগুনের লেলিহান শিখায় চাপা পড়ে যায় রামুর ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। পুড়ে যায় ১২টি বৌদ্ধবিহার, ২৬টি বসতঘর। পাশাপাশি আরও ছয়টি বৌদ্ধবিহার এবং শতাধিক বসতঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়।
>>> পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে উখিয়া ও টেকনাফে আরও চারটি বৌদ্ধবিহারে হামলা চালানো হয়। এতে পুড়ে যায় এসব বিহারে থাকা হাজার বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।
>>> এ ঘটনায় রামু, উখিয়া ও টেকনাফে ১৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রামু থানায় আটটি, উখিয়ায় সাতটি, টেকনাফে দুটি ও কক্সবাজার সদর থানায় দুটি মামলা রেকর্ড হয়।
>>> এদিকে এ সহিংস ঘটনাকে স্মরণ করে রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদ দিনব্যাপী কর্মসূচী পালন করছে। কর্মসূচীর মধ্যে বুদ্ধপূজা, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, অষ্টপরিস্কারসহ মহাসংঘদান, শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন, অতিথি ভোজন, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা। অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির সভাপতি কেতন বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক বিপুল বড়ুয়া আব্বু মেম্বার সকলকে অংশ নেয়ার আহবান জানান।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।