আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি। আজ বিশ্বব্যাপী পালিত হবে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘৯ম বিশ্ব রেডিও দিবস।’ এবারের প্রতিপাদ্য “রেডিও এবং বৈচিত্র্য।” বিশ্ব রেডিও দিবস উদযাপনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে একটি অনুসরণীয় মডেল দেশ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে বিশ্ব রেডিও দিবস পালিত হচ্ছে। এতে অংশ নেয় বাংলাদেশ বেতার, প্রাইভেট এফএম এবং কমিউনিটি রেডিওগুলো। বাংলাদেশে বর্তমানে ২২টি প্রাইভেট এফএম এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। এছাড়া, বাংলাদেশ বেতার ১২টি আঞ্চলিক বেতার কেন্দ্র এবং ৩৫টি এফএম পরিচালনা করছে। পাবলিক সার্ভিস ব্রডকাস্টিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ বেতার যেমন অনুষ্ঠান ও খবর সম্প্রচার করছে; তেমনি বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, ভয়েস অব আমেরিকা, এন এইচ কে, রেডিও তেহরান, রেডিও চায়না ও অন্যান্য বিদেশি মাধ্যমেও বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে পারছি। আবার দেশে সাম্প্রতিক কালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সম্প্রচার করছে শহরভিত্তিক বেসরকারি এফএম রেডিও। সব মিলিয়ে রেডিওর প্রচার দিনে দিনে প্রসারিত হচ্ছে।
বিশ্বে প্রথম রেডিও আবিষ্কারই হয়েছিল ১৮৯৮ সালে। রেডিওকে স্যালুট জানাতে ২০১১ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব রেডিও দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। এই দিনটিকে বাছা হয়েছিল কারণ, ১৯৪৬ সালে এই দিনেই রাষ্ট্রপুঞ্জ রেডিও প্রথম আন্তর্জাতিক সম্প্রচার করেছিল। স্পেনের রেডিও অ্যাকাডেমি ২০১০ সালে প্রথম ১৩ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব রেডিও দিবস হিসেবে উদযাপন করার পরিকল্পনা করেছিল। তারপর ২০১১ সালে ইউনেস্কো ১৩ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব রেডিও দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
যুক্তির উৎকর্ষতায় যন্ত্রটি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। অথচ এক সময় দেশ-বিদেশের খবর জানার একমাত্র মাধ্যমই ছিল রেডিও। কারও বাড়িতে একটি রেডিও থাকলে তার আলাদা খাতির করা হতো। অনেকে আবার বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ি থেকেও যৌতুক হিসেবে রেডিও নিতো। সে সময় কারো বাড়িতে একটি রেডিও থাকলে গ্রামের মানুষ দল বেঁধে জড়ো হতো খবর শুনতে। তবে কালের বিবর্তনে এখন রেডিও শোনার মানুষের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। তবে এর ব্যতিক্রম হিসেবে এখনো কিছু মানুষ আছেন যারা খবর শুনতে রেডিও’র উপর নির্ভশীল। তাদেরই একজন বাগেরহাটের ডা. হরিপদ দত্ত জানান, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা খবর শোনার একমাত্র মাধ্যমেই ছিল রেডিও। যে খবর শুনে লাখ লাখ বাঙ্গালি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উজ্জ্বীবিত হয়েছিল। এ ছাড়া তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণও সরাসরি রেডিওতে শুনে লাখো বাঙ্গালি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।’
বিশ্ব বেতার দিবস-২০২০ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ বেতার দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে। বাংলাদেশ বেতার আজকের কর্মসূচীর বিস্তারিত তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নোটিশ আকারে প্রকাশ করেছে। ডাউনলোড লিংকঃ shorturl.at/lsEGP
এই সম্পর্কিত খবর
এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।