ঢাকাSunday , 12 April 2020
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সবাইকে বলে তেরাণ দেয়, খালি হামাকে কিচ্ছু দেয়না’ 

Link Copied!

জাহিদ হাসান জীবন, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
পঁচাশি বছর বয়সী বৃদ্ধা বোলো বেওয়া। বয়সের ভারে লাঠিতে ভর দিয়ে কোন মতো চলাফেরা করেন, দু’চোখে কম দেখেন অনেক আগ থেকেই। কানেও কম শোনেন তিনি। বৃদ্ধ বয়সে শরীরে নানা রোধব্যাধি বাসাও বেঁধেছে। তাঁর অভাবের সংসারে দেখার মতো কেউ নেই। দেশ স্বাধীনের পরের দূর্ভিক্ষের সময় স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়েই কেটে গেছে তাঁর ভরা যৌবন। জীবনে সুখ কি তা বুঝতে না পারলেও দুঃখের সীমা জানা নেই এই বৃদ্ধার। স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে ধরেন সংসারের হাল। ছেলে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। এ থেকে যা আসতো তাই দিয়ে অভাবের সংসার চালাতেন। ছেলের সংসারেই তিন বেলা খাবার জুটতো বোলো বেওয়ার। কিন্তু বিধিবাম! বছর বিশেক আগে দুরারোগ্য ব্যধিতে মারা যায় একমাত্র ছেলে। স্বামী-সন্তান হারানোর পর বড্ড নিঃস্ব এ বৃদ্ধা। তখন তিনি বাঁচার তাগিদে একমাত্র মেয়েসহ বেঁচে ভিক্ষাবৃত্তি। বয়সের ভারে হাঁটার শক্তি হারিয়ে বিছানা শয্যায়। আরেক দিকে খাদ্য সংকটের সাথে যুক্ত হয়েছে নানা রোগ-ব্যাধি। ক্রমান্বয়ে বাকশক্তিও যেন লোপ পাচ্ছে এই বৃদ্ধার। এখন আর ভিক্ষাও করতে পারেন না। তার মেয়ে ভিক্ষা করে যা আনে তাই দিয়ে চলছে সংসার। খেয়ে না খেয়েই দিন চলে তাঁর।
এমন দূর্বিসহ জীবনের তিক্ত গল্প বর্ণনা করছিলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের পঁচাশি বছর বয়সী বৃদ্ধা বোলো বেওয়া। শুধু তাই নয়। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন মেয়ের সংসারে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। ঘরে এক মুঠো দানা নেই যা দিয়ে চুলো জ্বালাবেন তাঁরা। এই দূর্দিনে দিনে এক বেলা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে এই বৃদ্ধার পরিবারে। ওই বৃদ্ধা উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা গ্রামের মৃত হোসেন আলীর স্ত্রী।
অসহায় বোলো বেওয়া বলেন, ‘মোর দুনিয়াত এখন বেটি (মেয়ে) ছাড়া কাইয়ো নাই। কাম করবার পায় না। মোর বেটিটেও ভিক্ষা করি সংসার চলায়। তারে এলা সংসার চলেনা, মোক নিয়ে ওই বিপদত আছে। ঘরোত কোনো চাউল নাই যে আন্দি (রান্না) খামো। কদ্দিন থাকি এক বেলা ভাত খায়া আছোম। এদেন করি না খায়া থাকলে নে মরি যামো। হামরা দুইটে মায়-ছায় ভিক্ষা করি খাই। সবাইকে বলে তেরাণ (ত্রাণ) দেয়, খালি হামাকে কিচ্ছু দেয়না।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।