ঢাকাTuesday , 3 April 2018
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রোহিঙ্গা সংকট:উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় সাড়ে ৩লাখ মানুষ সংখ্যালঘু

Link Copied!

শ.ম.গফুর,উখিয়া(কক্সবাজার) প্রতিনিধি: কক্সবাজার জেলায় স্থানীয় চাহিদার তুলনায় বছরে ৩৪ হাজার টন উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপন্ন হতো। নতুন করে প্রায় সাত লাখেরও বেশী রোহিঙ্গার চাপে জেলার খাদ্য পরিস্থিতি আমূল পাল্টে গেছে। বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি, কৃষিজমিতে চাপসহ নানা কারণে কক্সবাজারে এ বছর প্রায় দেড় লাখ টন খাদ্য ঘাটতি হবে বলে অনুমান করছে জাতিসংঘ। স্থানীয় বাজারে খাদ্যপণ্যের দামে এরই মধ্যে ঘাটতির প্রভাব দেখা যাচ্ছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।সংকট মোকাবেলায় প্রণীত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের সূত্র ধরে জাতিসংঘ জানিয়েছে, অল্প সময়ে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা আসায় কক্সবাজারে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রায় অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ বাংলাদেশীর বসবাস। যে সাতটি ইউনিয়নের আওতায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তাদের আশ্রয়স্থল, সেখানে বাংলাদেশী আছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার, যারা এরই মধ্যে স্থানটিতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে।জাতিসংঘ সূত্র জানায়, সরকারি উদ্যোগে কক্সবাজারে যে সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছিল, তা এখন শ্লথতার ঝুঁকিতে রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়নের পরিবর্তে অবনমন শুরু হয়েছে। এ কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্যও সাহায্য জরুরি হয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় মানুষকে বাজার থেকে পণ্য সংগ্রহে বেগ পেতে হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গারা একই বাজারে কেনাকাটা করে। একদিকে কক্সবাজারে খাদ্য উৎপাদন কমেছে, আবার বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এর ফলে স্থানীয় পরিবারগুলোর অন্ন সংস্থানের ব্যয় বেড়েছে। এদিকে রোহিঙ্গার ঢল নামায় এসব পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা ও আর্থিক সম্ভাবনাও কমেছে। আগে থেকেই কক্সবাজারে স্থানীয় অধিবাসীর ১৭ শতাংশ দরিদ্র ছিল। এবার দারিদ্র্যের চাপ আরো বাড়ছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, রোহিঙ্গারা আসায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কারণে বাইরের মানুষের যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনের ব্যয় বেড়েছে, যার কারণে তাদের মুনাফার পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। পণ্য পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা সড়কে যানজট, ভাড়া বৃদ্ধি এবং যাতায়াত ও পরিবহনে বিলম্ব হওয়াকে দায়ী করছে। স্থানীয় বাজারে খাদ্যপণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও খাবার প্রস্তুতের জন্য জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে আগের চেয়ে ৫৫ শতাংশ বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। জ্বালানি কাঠের জন্য বেগ পেতে হচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকেও। প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গার চাপ ও দেশ-বিদেশের মানুষের আগমনে বাজারে ক্রেতা বাড়ছে। এতে করে পণ্যের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। কক্সবাজারে খাদ্য উৎপাদনে বছরে ৩৪ হাজার টন উদ্বৃত্ত হতো। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে জেলাটি চলতি বছর দেড় লাখ টন খাদ্য ঘাটতিতে পড়তে যাচ্ছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ।সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলার অধিবাসীদের নগদ আয়ের অন্যতম উৎস দিনমজুরি, কৃষিকাজ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা। স্থানীয় শ্রমিকের বেশির ভাগই অদক্ষ। টেকনাফ ও উখিয়ার বেশির ভাগ মানুষ মাছ ধরে, মজুর খেটে এবং কৃষিকাজ, সুপারি ও পানের চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত থাকায় অতি দরিদ্রদের দিনমজুরির ওপর ভরসা করতে হয়। এদের বিরাট অংশ মাছ ধরার শ্রমিক, বন্দরের খালাসি, নির্মাণ ও অন্যান্য কাজে মিস্ত্রির জোগালির কাজ করে থাকে। রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে এসব কাজের মজুরি কমে গেছে। ক্যাম্প থেকে বের হয়ে রোহিঙ্গারাও নির্মাণ, কৃষি, মৎস্য আহরণ ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় মজুর হিসেবে শ্রম দিচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিয়মিত মজুরির প্রায় অর্ধেক দামে তারা শ্রম বিক্রি করছে।জাতিসংঘ মনে করছে, প্রাকৃতিক ও কৃষিসম্পদ কমে যাওয়া, শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়া এবং আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ঝড় ও ভূমি ধসের ঘটনার জেরে কক্সবাজার জেলায় দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব কারণে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রতি এক ধরনের ক্ষোভ তৈরি হতে শুরু করেছে।সূত্র জানায়, সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘের এবারের পরিকল্পনায় রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে স্থানীয় ও রোহিঙ্গাসহ মোট ১৩ লাখ মানুষের জন্য ৯৪ কোটি মার্কিন ডলার অর্থায়নের চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।