শ.ম.গফুর,উখিয়া(কক্সবাজার) প্রতিনিধি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ দূত স্যাম ব্রাউনব্যাক বলেছেন, পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
দেশে ফিরে গিয়ে রোহিঙ্গা মুসলিমরা পূর্ন ধর্মীয় স্বাধীনতা যাতে ভোগ করতে পারে সেই দিকও খেয়াল রাখছে ট্রাম্প সরকার। বুধবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শণ কালে জাতি সংঘ শরনার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর পরিচালিত ট্রানজিট পয়েন্ট অন্তবর্তীকালিন কেন্দ্রে সংবাদিকদের সাথে তিনি এসব কথা বলেন।এ সময় বিশেষ দুতের সফর সঙ্গী বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাস্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাট বলেন, সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ড হতে ৫ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা পরিবার মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি সম্প্রতি সম্পাদিত বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় পড়েনা।রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শণকালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রিত বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী পুরুষের সাথে একান্তে আলাপের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা জাতিগত বৈষম্যের শিকার হয়েছে। তারা সেখানে স্বাধীনভাবে ধর্মীয় কর্মকান্ড চালাতে বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সেখানকার রাখাইন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ বাচাঁতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এমনকি অসংখ্য যুবক, যুবতী, শিশু, বয়োবৃদ্ধ লোকজন হত্যার শিকার হয়েছেন। ধষর্ণের শিকার হয়েছেন কিশোরী ও যুবতীরা।
এর আগে বিশেষ দূত স্যাম ব্রাউনব্যাক সকাল ১১ টার দিকে তুমব্রু সীমান্তের কোনার পাড়া নো-ম্যান্স ল্যান্ডে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করার কথা জানিয়ে স্যাম ব্রাউনব্যাক বলেন, আগে মিয়ানমার সরকারকে নিরাপদ পরিবেশ তৈরী করতে হবে। লুণ্ঠিত বাড়ী ঘর, ধন সম্পাদ ফিরিয়ে দিতে হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এসব সুবিধা দেওয়া হলে রোহিঙ্গারা স্ব-ইচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যাবে।মার্কিন বিশেষ দূত স্যাম ব্রাউনব্যাক বিকেলে কুতুপালং মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শণ করেন এবং, মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসা শিক্ষক, ধর্মীয় নেতাদের সাথে কথা বলেন।স্যাম ব্রাউনব্যাক ১৩ এপ্রিল থেকে তুরস্ক সফর শেষ করে আজ সকালে কক্সবাজার আসেন। কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং, মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প, তুমব্রু নো-ম্যান্স ল্যান্ড পরিদর্শণ শেষে ২০ এপ্রিল বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে শুরু হওয়া মিয়ানারের সেনাবাহিনীর অভিযানে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনলেও তা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। এপারে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বার-বার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করছেনা মিয়ানমার।