ঢাকাMonday , 16 April 2018
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গা এফতার সেদেশের গুপ্তচর

Link Copied!

শ.ম.গফুর ঘুমধুম সীমান্ত থেকে ফিরে এসে: স্বপরিবারে মিয়ানমার ফেরত যাওয়া এফতার আহমদ ছিলেন দেশটির সেনাবাহিনীর গুপ্তচর।সে মিয়ানমার বাহিনীর হয়ে কাজ করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গাদের অভিযোগ,এফতার আহমদ অন্যান্য রোহিঙ্গার সঙ্গে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। তিনি এপারে থেকে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকটের সরকারি-বেসরকারি খবর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে পাচার করতেন। গতিবিধি সন্দেহজনক হলেও তিনি কী করতেন তা ধরতে পারেনি রোহিঙ্গা ও স্থানীয় প্রশাসন। রোহিঙ্গা নেতা অজুহাত দেখিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদিনই এফতার আহমদ যোগাযোগ করতেন বলে জানিয়েছেন তুমব্রুতে বসবাসরত রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা।বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু কোনারপাড়ার নো-ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রয় নিলেও তিনি ভাড়া থাকতেন স্থানীয় ঘুমধুম ইউপির মহিলা মেম্বার ফাতেমা বেগমের বাড়িতে। নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নিলেও এফতারের অবস্থান ছিল মিয়ানমারের পক্ষে। এ কারণেই ধরা পড়ার আগে তিনি স্বপরিবারে ফেরত গেছেন বলে মনে করছেন রোহিঙ্গারা।তুমব্রু সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে থাকা রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ মাষ্টার,মৌ: আরেফ বলেন, ‘রাতের আঁধারে চুরি করে মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া এফতার রাখাইনের মংডু শহরের বলিবাজার এলাকার তুমব্রু রাইট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান (ওয়াক্কাট্রা) ছিলেন। তার সঙ্গে রাখাইনের সেনাবাহিনী ও মগদের দহরম মহরম সম্পর্ক ছিল। এ কারণে তিনি বারবার চেয়ারম্যান (ওয়াক্কাট্রা)হতেন। এরপরও আমাদের সঙ্গে কেন জানি তিনিও পালিয়ে নো-ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রয় নেন। তবে নো-ম্যানস ল্যান্ডে বেশি দিন থাকেননি তিনি। ক্যাম্পের পাশে স্থানীয় মীর আহমদের (মহিলা মেম্বার ফাতেমার স্বামী) ইউপি মেম্বারের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সঙ্গে ছিল তার স্ত্রী সাজেদা বেগম (৪৫), মেয়ে শাহেনা বেগম (১২), ছেলে তারেক আজিজ (৭), মেয়ে তাহেরা বেগম (১০) এবং গৃহকর্মী শওকত আরা বেগম (২৩)।’তিনি আরও বলেন, ‘রবিবার সকালে জানতে পারি তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে মিয়ানমারে ফেরত গেছেন এবং ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ডও (এনভিসি) নিয়েছেন।’রোহিঙ্গা এই নেতা বলেন, ‘এফতার বাড়ি ভাড়া নিলেও তিনি নো-ম্যানস ল্যান্ডে আমাদের সঙ্গে বেশিরভাগ সময় থাকতেন। আমাদের সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা বলতেন। মাঝে মধ্যে আড়ালে গিয়ে মিয়ানমারের মোবাইল নম্বরে যেন কার সঙ্গে কথা বলতেন। একদিন তাকে প্রশ্ন করতেই উত্তর দেন, ইয়াঙ্গুনে তার আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলছেন। এখন বুঝতে পারছি তিনি আমাদের সঙ্গে থেকে গুপ্তচরের কাজটি করেছেন।’আরেক রোহিঙ্গা নেতা মো:আমিন বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই এফতার চেয়ারম্যানকে সন্দেহ করে আসছিলাম। তার চলাফেরা ও গতিবিধি ছিল অন্যরকম। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ায় তার অবস্থান পরিষ্কার হয়ে গেল। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসার আগেই তিনি মিয়ানমারে চলে গেছেন।ঘুমধুম ইউপির চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান,এফতার মিয়ানমারে চলে গেছে টিভির শিরোনামে দেখেছি এবং লোকমুখে
শুনেছি।ঘুমধুম ইউনিয়নের ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য ফাতেমা বেগম বলেন, ‘প্রথমে মানবিক কারণে আমার বাড়িতে এফতার চেয়ারম্যানকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। তার গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় সাড়ে ৩ মাস থাকার পর আমার বাড়ি থেকে চলে যেতে বলি। পরে তুমব্রু নো-ম্যানস ল্যান্ডে ঝুপড়িঘর বানিয়ে থাকতো। রবিবার সকালে শুনেছি তিনি মিয়ানমারে চলে গেছেন।’রাতের আঁধারে সীমান্ত পার হয়ে কীভাবে ৫ সদস্যের পরিবার মিয়ানমারে ফেরত গেল তা নিয়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-এর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কক্সবাজার বিজিবি’র বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তার মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।তবে, কক্সবাজার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘বাংলাদেশে ১২টি ক্যাম্পে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আছে। সেখান থেকে একটি পরিবারকে তুলে নিয়ে মিয়ানমার কী বোঝাতে চায় তা বোধগম্য নয়। এটা প্রত্যাবাসনের আওতায় পড়ে না। তুমব্রু সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে ৬ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে। ওই রোহিঙ্গা পরিবারগুলো প্রত্যাবাসনের আওতায় পড়ে না। এজন্য মিয়ানমার সরকারকে আগে থেকেই বলা হচ্ছে ওই পরিবারগুলাকে ফেরত নেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা সবাইকে ফেরত না নিয়ে শুধু একটি পরিবারকে নিয়ে গেছে।’শনিবার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে পরিবারের ৫ সদস্যকে নিয়ে মিয়ানমারে ফেরত গেছেন এফতার আহমদ। গভীর রাতে সবার অজান্তে মিয়ানমার সীমান্তের ঢেকিবনিয়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারের ফেরত যান মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহযোগিতায়।প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৪ আগস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতার পর বাংলাদেশে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। এসব রোহিঙ্গা উখিয়া ও টেকনাফের শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, রাখাইনে অস্থায়ী আশ্রয় শিবির তৈরির কথাও জানিয়েছে দেশটি। ইতোমধ্যে এসব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত দিতে ইউএনএইচসিআর-এর সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়েছে।কবে নাগাদ প্রত্যাবাসন শুরু কেঊ নিশ্চিত নয়।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।