“ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি”
কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা এলাকায় বনভূমির পাহাড় কাটতে গিয়ে আবদুল খালেক (১৮) নামের এক যুবক মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু বরণের ১০ দিন পার হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেনি নিহতের পরিবার। নিহত আবদুল খালেক প্রবাস ফেরত যুবক।গত কয়েক বছর পূর্বে সে বাংলাদেশে চলে আসে।তার বাবা আবদুর রহমান এখনও স্ব-পরিবারের প্রবাসে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে,থাইংখালী বাজারের পশ্চিম পাশের বাসিন্দা,পালংখালী ইউপির সাবেক মহিলা মেম্বার খুরশিদা বেগম ও আবদুর রহমান দম্পতির ছেলে জুয়েল এবং তার নেতৃত্বে হোছন,নুরুল আলম ও ছৈয়দ হোছন দীর্ঘদিন ধরে বনভূমির পাহাড় থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করে আসছিল।জুয়েলদের তেলখোলার চাকমা পাড়ায় উক্ত মাটি কাটার পয়েন্টে প্রতিদিনের মত অন্য শ্রমিকদের সাথে জুয়েলের ডাকে আবদুল খালেকও যায়।৪টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু মিশ্রিত মাটি কাটছিল শ্রমিকরা।
২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হটাৎ পাহাড়ের উপরীভাগের মাটি এসে আবদুল খালেকের গায়ে চাপা পড়ে। অন্য শ্রমিকরা উদ্ধার তৎপরতা চালাতেই ঘটনাস্থলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আবদুল খালেক (১৮)।খবর পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে,ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে মৃতদেহ তার চাচা এরশাদ সহ আত্নীয়স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করে।
নিহত আবদুল খালেকের বয়োবৃদ্ধ দাদী ও চাচা এরশাদ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন সাবেক মহিলা মেম্বার খুরশিদা বেগমের ছেলে জুয়েলের মাটি কাটার কাজে মাটিচাপায় আবদুল খালেক মারা গেছে।জুয়েলের পক্ষ থেকে অদ্যাবধি কোন ধরণের খোঁজ খবর নেওয়া হয়নি।কোন ধরনের সহানুভূতি পর্যন্ত দেখাইনি।উল্টো জুয়েল হুমকি-ধমকি দিয়ে বলে বেড়াচ্ছে, মামলা করলে খবর আছে!থাইংখালী স্টেশনে কেউ উঠতে পারবিনা।
এ দিকে জুয়েল গংয়ের মাটি কাটার পয়েন্টে আবদুল খালেক মৃত্যুর আগে অজ্ঞাত এক রোহিঙ্গার মৃত্যও ঘটেছে বলে জানা গেছে।জুয়েল সিন্ডিকেটের নির্বচারে পাহাড় কর্তনের ফলে আশপাশের প্রায় অর্ধশতাধিক চাকমা পরিবারের অস্তিত্ব বিলীনের পথে।এ বিষয়ে জানতে জুয়েলের ব্যবহ্নত নাম্বারে একাধিকবার কল দেওয়া হয়,কিন্তু মোবাইল বন্ধ থাকাতে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
৬ নং ওয়ার্ডের তেলখোলা বাজারে দেখা হয় ইউপি সদস্য তোফায়েল আহমদের।এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুয়েলের পয়েন্টে মাটিচাপায় মারা গেছে আবদুল খালেক।সেদিন আমি নিজেও পুরো রাত নির্ঘুম থেকে কক্সবাজার,থানা এবং থাইংখালীতে কেটেছে লাশের সাথে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেই বাড়ি ফিরেছি।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম.গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পাহাড়ের মাটি চাপা পড়ে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনাটি শুনেছি,তবে বিস্তারিত জানি না।
উখিয়া রেঞ্জের থাইংখালী বনবিট কর্মকর্তা রাকিব হোসাইন এ প্রসঙ্গে বলেন,জনবল সংকট, তাই অভিযানে যাওয়ার খবর আগে থেকেই পেয়ে যায়, পাহাড়খেকোরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ইতিমধ্যেই ১২ জন পাহাড়ি মাটিখেকোর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সনজুর মোরশেদ বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসি।ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে নিহত আবদুল খালেকের আত্নীয়স্বজনদের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করেছি।নিহতের পরিবার অভিযোগ দিলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হইবে।