ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাাম) প্রতিনিধি ঃ কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ভুয়া ওয়ারিশ পরিচয়ে উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার একমাত্র বোন এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ৩নং ওয়াডের শিমরবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মৃত ইদ্রিস আলীর পুত্র হযরত আলী ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। হযরত আলীর নাম ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা তালিকা বই নং-১৮, ক্রমিক নং-৪০৬৮৬ ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০০৫ সালের বেসামরিক গেজেটের ৩৭৯৯ নং পৃষ্ঠায় গেজেট নং-১২৯৯, ক্রমিক নং-০৩১৬০৪০৪২২-এ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। শহীদ হযরত আলীর পিতা-মাতা দেশ স্বাধীনের পূর্বেই মারা যান। শহীদ হযরত আলী ছিলেন অবিবাহিত। তার একমাত্র বোন রহিমা বেগম। আর কোন ওয়ারিশ না থাকলেও তার বিমাতা ভাই তোরাব আলীর মেয়ে সুফিয়া বেগম একমাত্র ওয়ারিশ কন্যা পরিচয়ে কুচক্রি মহলের যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করে আসছে।
অভিযোগকারী রহিমা বেগম জানান, যুদ্ধে আমার ভাই হযরত আলী শহীদ হয়। যুদ্ধের সময় আমার মা-বাবাও মারা গেছেন। আমার ভাই হযরত আলী কোন বিয়ে করেননি। নিকটতম ওয়ারিশ হিসেবে একমাত্র আমিই আছি। অথচ কিছু অসাধু ব্যক্তির সহযোগিতায় গোপনে আমার বিমাতা ভাই তোরাব আলীর মেয়ে সুফিয়া বেগম শহীদ হযরত আলীর কন্যা পরিচয়ে ভাতা উত্তোলন করছে। এছাড়াও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নেবার জন্য সুফিয়া বেগম তার পিতা-মাতা ও বয়স সংশোধনের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করছে। এমন ঘটনা জানার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছি। অভিযুক্ত সুফিয়া বেগমের বক্তব্য জানতে তার স্বামীর মোবাইলে একাধিকাবার ফোন দেয়া হলে কেউ ফোন রিসিভ করেনি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লিখিত অভিযোগ না থাকায় ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। এখন যেহেতু অভিযোগ হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জামাল হোসেন জানান, শহীদ হযরত আলীর ওয়ারিশ হিসেবে (কন্যা পরিচয়ে) সুফিয়া বেগম নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা উত্তোলন করছেন। এই বিষয়ে একটি অভিযোগের অনুলিপি আমার কাছে এসেছে। মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা প্রদান বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি আরও জানান মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলে বিধি মোতাবেক তার স্ত্রী ভাতা পাবেন, স্ত্রী না থাকলে বাবা-মা ভাতা পাবেন, বাবা-মা না থাকলে সন্তানেরা ভাতা পাবে, এছাড়া অন্য কারো ভাতা পাবার সুযোগ নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহমেদ মাসুদ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, তদন্ত পূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।