এমসাঈদ : যশোরের শার্শার বাগআঁচড়ায় জোহরা খাতুন(৩৪) নামের এক গৃহবধূর রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে।সে বেনাপোল পোর্ট থানার বালুন্ডা গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে ও বাগআঁচড়া সাতভাই পাড়া এলাকার রিপন হোসেন স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, দীর্ঘ ১৭ বছর আগে শার্শার বাগআঁচড়া এলাকার মোসলেম গাজীর ছেলে রিপনের সঙ্গে বালুন্ডা গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে জোহরা খাতুনেরর বিয়ে হয়।বিয়ের পর থেকে স্বামী রিপন যৌতুকের দাবিতে ব্যাপক নির্যাতন করতে থাকে।প্রায়ই রিপনের চাহিদামত যৌতুক মেটাতে হতো জোহরার পিতামাতাকে।
যৌতুক না পেলে রিপন ক্ষিপ্ত হতো এবং স্ত্রী জোহরার উপর অমানুষিক নির্যাতন করতো।এনিয়ে পারিবারিক ভাবে ও গ্রাম্য শালিসে বহুবার মিমাংসা করা হয়েছে।এরই মধ্যে জোহরা একটি পুত্র সন্তানের মা হলে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা ব্যাপক ভাবে বেড়ে যায়।
বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে জোহরার বাপের বাড়ীর লোকজন ব্যাপক টাকা খরচ করে রিপনকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে ২বছর আগে বাড়ী এসে আবারো স্ত্রী জোহরার উপর যৌতুকের দাবীতে ব্যাপক নির্যাতন করতে থাকে। জোহরা মারধোর সহ্য করতে না পেরে কয়েকবার বাপের বাড়ীতে চলে যায়।রিপন আবার হাতে পায়ে পড়ে বিচার শালিস করে নিজ বাড়ীতে ফিরিয়ে আনে।
কিন্তু কয়েকদিন ভালো থাকার পর আবার শুরু হয় নির্যাতন। এর মধ্যে এক বছর আগে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। দিন দিন যৌতুকের দাবীতে রিপনের নির্যাতন বাড়তে থাকে।সেই নির্যাতন শেষ হয় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে।এ সময় প্রতিবেশীরা ঘরের আড়ার সাথে উড়না দিয়ে ঝুলানো লাশ উদ্ধার করে।
নিহত জোহরার ছেলে হৃদয়(১৩) বলেছেন,কাল রাতে আব্বা আমার মাকে খুব মেরেছে।নিহত জোহরার মা মেহেরুন জানান,আমরা আমাদের বড় মেয়ের জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে দান সামগ্রী দেওয়ার পরও আমার মেয়ের উপর যৌতুকের জন্য ব্যাপক নির্যাতন করে।রিপন যখন আমার মেয়েকে মারধর করে তখন রক্ত রক্ত হয়ে যায়।এরপরেও আমরা তার ছোট বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে আবার স্বামীর বাড়ীতে পাঠিয়ে দিই।কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওরা আমার সোনাকে মেরে টাঙিয়ে রেখেছে।
নিহত জোহরার পিতা নুর ইসলাম অভিযোগ করেন আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকে রিপন ব্যাপক মারপিট করে এবং শেষ পর্যন্ত মেরে ঘরে টাঙিয়ে রেখেছে।সদ্য মাতৃহারা হৃদয়(১৩) ও সুমাইয়া(০১) কে দেখে শত শত মানুষ শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ছেন। লাশের সুরতহাল কারী এস আই সাজ্জাদুর রহমান বলেন সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের শরীরে অসংখ্যা আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা।
এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।