মোঃ আলী হাসান, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও বর্তমান করোনা ভাইরাস বিস্তারের প্রভাবে শ্রমিক সংকট ও আর্থিক ক্ষতির আতঙ্কে দিন গুনছেন স্থানীয় কৃষকরা। তারা বলছেন, এবার শ্রমিক সংকট আর প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ধানের দাম নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। অপরদিকে রয়েছে কালবৈশাখী ঝড়ের ভয়। সঠিক সময়ে ধান কাটতে না পারলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা। তাই ধান পেকে আসার সাথে সাথে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন ইরি-বোরো চাষিদের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে চলতি বোরো মৌসুমে এবার ১৯ হাজার ৯শ ২৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিট জাতের চারা রোপণ ১ হাজার ৮শ হেক্টর এবং উফসি জাতের চারা রোপণ ১৮ হাজার ১শ ২৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে হাইব্রিট জাতের ৯হাজার ৪শ ৬৬ মেঃটন চাল এবং উফসি জাতের ৮২ হাজার ১শ ৬ মেঃটন চাল।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার পূর্ব অঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় ইরি-বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। এবং সেখানে কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে উপজেলার অধিকাংশ ক্ষেতের ধান না পাকলেও শীষ বের হওয়া শেষে দানা বাঁধতেও শুরু করেছে। আবার কোন কোন ক্ষেতের ধানের শীষ হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।
কৃষকরা জানান, এ মৌসুমে তেমন কোন রোগ বালাই দেখা না দেওয়াই ইরি-বোরো ধান অনেক ভালো হয়েছে। দু এক সপ্তাহের মধ্যেই ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে পুরোদমে। কিন্তু দুশ্চিন্তা ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া নিয়ে। প্রতি বছর রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম নীলফামারীসহ অন্যান্য জেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিক আসতো। বর্তমান করোনার ভাইরাস প্রভাবের কারণে এবার শ্রমিক আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তবে সরকার বলছেন ধান কাটার শ্রমিক করোনা পরিস্থিতির আওতার বাহিরে থাকবে। যেহেতু ইতোমধ্যেই রংপুর বিভাগে প্রায় শতাধিক করোনা রোগী সংক্রমিত হয়েছে, সেহেতু তাদের আসাটাও কতটা নিরাপদ হবে সে বিষয়ে রয়েছে উৎকন্ঠা। তারপরও স্বাস্থ্যগত বিষয়ে রয়েছে দারুন ঝুঁকি।
উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের আটাপাড়া গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ধানের ফলন খুব ভাল হয়েছে। প্রতি বছর ধান কাটা মারাই করতে ডোমার থেকে শ্রমিক আসত। এবার আসবে কিনা বলতে পাচ্ছি না।। তাছাড়া ধানের দাম নিয়েও একটা উৎকন্ঠা রয়েছে’।
উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের কৃষক মাসুদ রানা বলেন, ‘জমিতে ভালো ধান হলেও বর্তমান চলমান করোনা পরিস্থিতি ও কালবৈশাখী ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি নিয়ে আমি শঙ্কিত। যে কোন সময় ঝড় কিংবা শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দুশ্চিন্তা শেষ হবে না’।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান জানান, পাঁচবিবি উপজেলায় এমাসের ১৫ তারিখের পর থেকে পুরোদমে ইরি-বোরো কাটা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হবে। একারণে এ উপজেলায় শ্রমিক সংকটের কোন সম্ভাবনা নাই। তিনি আরো বালেন, উপজেলায় ইতিমধ্যে সরকার ভূর্তকি মূল্যে ৪টি কম্বাইন হারভেষ্টার দেওয়া হয়েছে, আরো একটি শ্রীঘ্রয় দেওয়া হবে। কৃষকরা যাতে সূলভ মূল্যে এবং সহজেই ধান কাটতে পারে।
সম্পাদক: রিমন রাজভর /নির্বাহী সম্পাদক:রেজুয়ান খান রিকন / নর্থ বেঙ্গল প্রাইভেট লি: / ১৩৫# কুঠিবাড়ি, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা।
স্বত্ব ©২০১৭- ২০২৩ এনবি নিউজ একাত্তর