ঢাকাWednesday , 4 April 2018
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জয়পুরহাটে চারটি নদীতে এখন ফসলের চাষবাস 

Link Copied!

পুলক সরকার, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
থই থই পানি। তাতে বাদাম তুলে চলছে নৌকা। কোথাও বা জাল দিয়ে মাছ ধরছেন জেলে। তীরে কলসি কাঁখে কুলবধূ। আবার হয়তো নদীর দুই পার সংযোগকারী সেতুর নিচে বয়ে যায় কুলকুল জলধারা। এই তো নদীর চিড়ন্তন রূপ। কিন্তু তা না হয়ে যখন জলহীন নদীর বুকে চাষ হয় ফসল, আর সেতু হয়ে পরে অপ্র্রয়োজনীয়, তখন তাকে কি নদী বলা যায় ? তারপরও ছোট যমুনা, তুলশী গঙ্গা, হারাবতী ও শ্রী নদী এখন জয়পুরহাটের নাম সর্বস্ব নদী।
জয়পুরহাটে চার নদীর চিত্র এখন এমনই প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পলি জমে নদীগুলোর বুকে এখন ফসলের মাঠ। সেখানে চাষাবাদ হচ্ছে ধান, মিষ্টি আলুসহ নানা ফসল। চরছে গরু-ছাগল। খেলার মাঠ বানিয়ে তাতে মেতে উঠছে শিশু-কিশোরের দল।
এই মরা নদীই আবার দুঃখের কারণ হচ্ছে বর্ষায়। উজান থেকে নেমে আসা বর্ষার পানি নামতে পারে না ভাটিতে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে নদীর পানি দুই কূল ছাপিয়ে জনপদে ঢুকে সৃষ্টি করছে জলাবদ্ধতার।  প্রতি বছর অস্বাভাবিক বন্যায় ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে হাজার হাজার মানুষ।
জেলা ত্রাণ ও কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, বর্ষাকালের বন্যায় প্রতি বছর প্রায় ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। সেই হিসাবে গত ১২ বছরে ক্ষতির পরিমান ২৪০০ কোটি টাকা।
অথচ নদীগুলো সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। প্রতি বছর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে নদী খননের প্রস্তাব পাঠালেও কোনো পদক্ষেপ নেই সরকারের। নদীগুলোতে পানিপ্রবাহ সৃষ্টি করতে না পারলে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে এ এলাকায় মরু পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় পানি বিশেষজ্ঞরা।
ভারতীয় সীমানার অভ্যন্তরে সৃষ্টি হয়ে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে জয়পুরহাট জেলায়  প্রবেশ করেছে ছোট যমুনা, তুলসীগঙ্গা, চিরি ও হারাবতি নদী। একসময় সারা বছর পানিতে ভরা থাকত নদীগুলো। নৌকা চলত, মাঝির গলায় গান উঠত। সড়কপথের চেয়ে নদীপথ ব্যবহৃত হতো বেশি। পার্শ্ববর্তী জেলার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল এই নদীগুলো।
এখন নদীপথ নেই- না বর্ষায়, না শুষ্ক মৌসুমে। বর্ষায় যে পানি আসে তা বরং মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়। উজান থেকে নেমে আসা পানি ধারণ করতে পারে না ভরাট নদী, ফলে কূল ছাপিয়ে সৃষ্টি হয় বন্যা আর জলাবদ্ধতা। আবার শুষ্ক মৌসুমে নদী খটখটে। সবুজে ভরে যায় তার বুক। বোরো মৌসুমে নদীর বুকে গভীর নলকূপ বসিয়ে সেচকাজ করে কৃষক।
১৯৮২ সালে তৎকালীন সরকারের আমলে তুলসীগঙ্গা নদী খনন কাজ শুরু হলেও পরে অজ্ঞাত কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। বাকি তিনটি নদী জন্মের পর কোনোদিনই খনন করা হয়নি বলে জানায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বিভাগ।
জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বিভাগের  উপসহকারী প্রকৌশলী  আপেল মাহমুদ জানান, যমুনার, তুলসীগঙ্গার,  হারাবতির, চিরির,  খননের জন্য  চারটি নদী ১৩৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে পক্রিয়াধীন রয়েছে। এখন তা পাস হলে নদীগুলোকে আগের মত ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
পানি উন্নয়ন বিভাগে কর্মরত পানি বিশেষজ্ঞরা জানান, নদী খনন করে পানিপ্রবাহ সৃষ্টি করতে না পারলে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে এ অঞ্চলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। স্থায়ী মরুভূমিতে পরিণত হবে জয়পুরহাটসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।