ঢাকাTuesday , 14 January 2020
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জবির শহীদ মিনারকে অক্টোপাসের সাথে তুলনা!

Link Copied!

জবি সংবাদদাতাঃ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শহীদ মিনারকে অক্টোপাস আকার উল্লেখ করে এর পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা অক্টোপাসের সাথে শহীদ মিনারের তুলনাকে শহীদ মিনার অবমাননার সামিল হিসেবে দেখছেন।
গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করে একদল শিক্ষার্থী। মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ক্যাম্পাসে যে অক্টোপাস আকারের শহীদ মিনার আছে সেটি কি শহীদ মিনার আসলে শহীদ মিনার না বসার স্থান তাও অনেকে জানে না। এটিকে বসার স্থান ভেবে অনেকে জুতা নিয়ে উপরে ওঠে, সন্ধ্যার পর অনেকে আড্ডাবাজি করে, এমনকি এর ভিতরে বিভিন্ন ধরণের অসামাজিক কার্যকলাপও চোখে পড়ে। যার ফলে ভাষা শহীদদের প্রতিনিয়ত অবমাননা করা হচ্ছে।
স্মারকলিপিতে, ২১ শে ফেব্রুয়ারির পূর্বেই বর্তমান শহীদমিনার পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে শহীদ মিনার করার দাবি জানানো হয়।
তবে শহীদমিনারকে অক্টোপাসের সাথে তুলনাকে শহীদমিনার অবমাননা হিসেবে দেখা শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি কে এম মুত্তাকি বলেন, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে শহীদ মিনার পরিবর্তনের প্রয়োজন নাই, কেননা এটা স্পর্শকাতর একটা বিষয়, কেননা বিভিন্ন জনের বিভিন্নমত চলে আসবে। শহীদ মিনারকে অক্টোপাসের সাথে তুলনা করা অশোভনীয়, শহীদ মিনারের সাথে শহীদদের বিষয় চলে আসে। শহীদদের সাথে অক্টোপাস একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক।
ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মোনায়েম হোসেন বলেন, শহীদ মিনার যখন করা হয় একটা বিষয়কে সামনে রেখে করা হয়। কালের পরিক্রমায় এটি পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে কিন্তু শহীদ মিনারকে কোনো কিছুর সাথে তুলনা করে সড়িয়ে দেয়া ঠিক না । শহীদ মিনারকে অক্টোপাসের সাথে তুলনা করা অবশ্যই অবমাননা, শুধুমাত্র শহীদমিনারকেই নয়, আমাদের শহীদদের অবমাননা করা হয়েছে, কাজটা ঠিক হয়নি।
জবিতে চলমান ৭দফা আন্দোলনের সংগঠন তাওসিব মাহামুদ সোহান বলেন, বর্তমান শহীদ মিনারের একটা ইতিহাস ঐতিহ্য আছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সতন্ত্র শহীদ মিনার আছে । তারা দাবি করেছে জুতা নিয়ে উঠলে শহীদ মিনার অবমাননা হয়, কিন্তু তারা যে শহীদ মিনারকে অক্টোপাসের সাথে তুলনা করে বড় অবমাননা করেছে।
তবে আন্দোলনকারীদের নেতা মোঃ মশিউর রহমান তাদের বক্তব্যে শহীদ মিনার অবমাননার কোনো সুযোগ দেখছেন না। তাদের মানববন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা শহীদ মিনার না বসার জায়গা না আড্ডা দেওয়ার জায়গা বোঝা যায় না, শহীদদেরকে প্রতিনিয়ত অপমান করা হচ্ছে, প্রতিনিয়ত মানুষ জুতা পায়ে উঠছে, আড্ডা দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নতুন শহীদ মিনার করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমান শহীদ মিনারে শহীদদের অবমাননা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নতুন শহীদ মিনার করলে মানুষের বুঝতে সুবিধা হবে।
শহীদ মিনারকে অক্টোপাস আকার কেনো বলা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে এটা দেখতেতো অনেকটা অক্টোপাসের মতো একারণেই। অক্টোপাসের অনেকগুলো হাত-পা, অক্টোপাসের মতো এটার মিল আছে একটা।
শহীদমিনারকে অক্টোপাসের সাথে তুলনা করাতে শহীদ মিনার অবমাননা করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শহীদ মিনারটা যেভাবে বানানো হয়েছে ওটাতো অক্টোপাসের মতো দেখাচ্ছে। আমরা দৃশ্যমান অবস্থার কথা বলেছি। এখানে কোনো অবমাননা হয় নাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থিত জবির শহীদ মিনারের একটি প্রধানসহ মোট ৮টি বেদি রয়েছে। প্রতিটি বেদি বৃত্তাকারে সাজানো। প্রত্যেকে নিজ অবস্থানে পেছনের দিকের পাদদেশে কোমর ভেঙে হেলানো। প্রধান বেদিটি দাঁড়ানো অবস্থায় সামনের দিকে অর্ধনমিতভাবে রয়েছে। মূলত ভাষার জন্য চার শহীদের দেওয়া রক্তের প্রতি সম্মান জানাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ মিনার একইভাবে তৈরি করা হয়েছে। তবে জবির শহীদ মিনার ভাষা আন্দোলনের দাবিতে ছাত্রদের সংঘবদ্ধ সমাবেশের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে বলে অনেকে মনে করছে।
এ ব্যাপারে জবির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম বলেছেন, আমাদের শহীদ মিনারে কয়েকটি বেদি রয়েছে চারদিকে সাজানো। প্রত্যেকটি বেদি পেছনের দিকে হেলানো থাকলেও এর মাঝখানের বেদিটি দাঁড়ানো অবস্থায় রয়েছে। উপরের একটু অংশ সামনের দিকে নুয়ে পড়েছে। ধরে নেয়া হয় এ থেকে সভা-সমাবেশের কোনো চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপিতে অক্টোপাসের সাথে তুলনার বিষয়ে সরাসরি বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বিষয়টি দেখতে হবে, শহীদমিনার ও শহীদের মর্যাদা অবশ্যই রক্ষা করা উচিত।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, এটা কলেজ আমলের, পরিবর্তনের দাবি সবার। এটা আমারও পছন্দও না। আমরা এটা পরিবর্তনের চিন্তা করছি। এই ক্যাম্পাসেতো স্থায়ী কিছু আমরা করবো না, ছোট একটা নান্দনিক শহীদ মিনার করা যায়। সেক্ষেত্রে যে করেছিলো তার একটা অনুমতির বিষয় আছে।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।