ঢাকাWednesday , 10 June 2020
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাইবান্ধায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিশোরী গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ

Link Copied!

গাইবান্ধা সংবাদদাতা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার এক কিশোরী গৃহকর্মীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত শিক্ষক ইউনুস আলী গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োজিত আছেন। তিনি জেলা সদরের থানাপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে ওই কিশোরী গৃহকর্মীকে উপর্যুপুরি ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর ঘটনাটি কাউকে না জানাতে ধর্মগ্রন্থ ও তার শরীর স্পর্শ করে শপথ করান ওই শিক্ষক। এরপর থেকে তিন মাস বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও ব্ল্যাকমেইল করে কিশোরীটিকে নিয়মিত যৌন নির্যাতন চালাতেন লম্পট শিক্ষক ইউনুস।

শিক্ষক ইউনুস সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের নওহাটী চাচিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। আর ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী গৃহকর্মী লম্পট শিক্ষকের আপন চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে।

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযক্ত ওই শিক্ষকের বিচার দাবি করেন এলাকাবাসি। এদিকে ধর্ষণের বিষয়ে জানতে পেরে গৃহকর্মী কিশোরীকে গাইবান্ধা শহরের বাড়ি থেকে তার স্ত্রী তাড়িয়ে দেন ।

বাড়ি গিয়ে পরিবারের চাপে মা-বাবার কাছে ইউনুসের লালসার নিয়মিত নির্যাতনের বর্ণনা দেন ওই কিশোরী। এরপর ঘটনাটি জানাজানি হলে ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রলোভন দেখায় অভিযুক্তের পরিবার। এতে কাজ না হওয়ায় নানা মাধ্যমে হুমকি দেন ভুক্তভোগী পরিবারকে। এমনকি পরিবারের কেউ যাতে বাড়ির বাহিরে যেতে না পারে সেজন্য তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন ওই শিক্ষকের লোকজন। ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইউনুস আলী তিন বছর আগে চাচাতো ভাইয়ের মেয়েকে পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়ির গৃহকর্মীর কাজ করার জন্য নিয়ে যান। শিক্ষক ইউনুস সদরের থানাপাড়া এলাকায় তিনতলা বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানসহ ওই কিশোরী গৃহকর্মী নিয়ে থাকতেন।

করোনার কারণে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় লম্পট শিক্ষক বাসায় অবস্থান করতেন। বাড়ির লোকজনের চোখেন আড়ালে ওই কিশোরীকে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন পর্ণ ছবি দেখাতেন। সে দেখতে রাজি না হলে জোর করে পর্ণ ভিডিও দেখিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিতেন। এর প্রায় তিন মাস আগে দুপুর বেলায় ওই কিশোরী তার ঘরের গোসলখানায় গোসল করছিল। সেদিন বাড়িতে কেউ না থাকায় ওই কিশোরীর ঘরে যায় ইউনুস। এতে দরজা খোলা পেয়ে বাথরুমের ভিতরে প্রবেশ করেন লম্পট ওই শিক্ষক। ওই কিশোরীকে বিবস্ত্র অবস্থায় বাথরুম থেকে বের করে নিয়ে গৃহকর্মী কিশোরীর বেডরুমে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কিশোরী বাঁধা দিলে তার নাক-মুখ চেপে ধরে নানান ভয়ভীতি দেখায়। পরে ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে না জানাতে বিভিন্ন ধর্মীয় বই‘ ও লম্পট শিক্ষকের শরীর স্পর্শ করিয়ে শপথ করান। এরপর থেকে কিশোরীটির উপর চলতে থাকে ওই শিক্ষকের পাশবিক যৌন নির্যাতন।

বাড়িতে কেউ না থাকলে জোড় করে মোবাইল ফোনে পর্ণগ্রাফি দেখিয়ে শারীরিক উত্তেজনা তৈরি করে চালাতেন যৌন নির্যাতন। কিশোরী মেয়েটি রাজি না হলে নানা রকমের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করাতেন তার সাথে যৌন সম্পর্ক করতে। এমনকি রোজার মাসেও তার পাশবিক নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি ওই কিশোরী।

রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে ওই গৃহকর্মীর ঘরে যেতেন ইউনুস। এরপর মুখ চেপে ধরে জোর করে যৌন নির্যাতন চালাতেন ওই শিক্ষক। অনেক সময় সেহেরি শেষ করে সবাই ঘুমালেও সে মেয়েটির উপর এমন নির্যাতন চালতো।
মেয়েটি পরিবারের লোকজনকে বলে দেওয়ার হুমকি দিলে বেড়ে যেত নির্যাতনের মাত্রা। বাড়িতে কেউ না থাকলে বারবার চালাতেন এমন নৃশংসতা। কাকুতি মিনতি করলেও তার লালসা থেকে রেহায় পায়নি মেয়েটি।

ওই কিশোরীর বাবা জানান, তিন বছর আগে আমার বাড়িতে আসে চাচাতো ভাই ইউনুস ও তার বউ। এসে মেয়েটাকে পড়াশোনা আর বাড়ির টুকটাক কাজ করার জন্য নিয়ে যেতে চায়। আমি রাজি ছিলাম না বারবার ঘুরতে থাকে আর বলে তোর মেয়ে আমার মেয়ের মতোই থাকবে কোন কষ্ট দিব না। পড়াশোনা করিয়ে বিয়ে দিব। মেলা নাটক করি আমার মেয়েটাকে নিয়ে গেলো। কিন্তু কোন কথায় রাখলো না তিনি। তিন বছর পর আমার মেয়েটাকে ধর্ষণ করি বাড়িতে রাখি গেলো। কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, আমার মেয়ে যখন সব ঘটনা খুলে বলে তারপর এর বিচার দিতে যাই চাচার (ইউনুসের বাবা) কাছে। কিন্তু কষ্ট লাগে আমার আপন চাচা হাজী মানুষ এর বিহীত না করে উল্টো বলে তোর বেটিক আরো ৬ মাস ধর্ষণ করবে তারপর বিচার।

তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বিচার নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানে তার (ওই শিক্ষক) লোকজন দিয়ে ঘিরে রাখেন। বারবার রেজাউল নামের এক সেনা সদস্য সেখানে ডিস্টার্ব করতে থাকে। পরে পরিস্থিতি খারাপ দেখে চেয়ারম্যান আমাকে পাঠায় দেয়। আমি জমির হাটু পানি দিয়ে বাড়িতে আসি। এরপর থেকে নানা ধরণের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। বাড়ি থেকে বের হতে পারিনা। আমি গরীব মানুষ তাই বলে কি এমন অন্যায়ের বিচার পাবো না ?

এদিকে সংবাদ কর্মির মাধ্যমে বিষয়টি পুলিশ সুপারের নজরে এলে নির্যাতনের শিকার কিশোরী গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসেন এবং মামলা করার নির্দেশ দেন।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো: শাহরিয়ার বলেন, গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োজিত একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর দাদির করা একটি অভিেেযাগ আমরা পেয়েছি এবং মামলা রুজু হযেছে। মামলা নং ৩৫। বিষয়টি যাচাই-বাচাই করে অপরাধ প্রমানিত হলে অপরাধী যেই হোক তাকে আমরা আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করবো।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক ইউনুস আলীর মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেন। এরপর সাংবাদিক পরিচয় জেনে ফোনটি কেটে দেন। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।