রুহুল আমিন রুকু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে ঘন কুয়াশা আর হিমেল ঠান্ডা হাওয়া। বিকেল থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত শৈত্যপ্রবাহে কাহিল এ জনপদের মানুষ। গত দুদিন ধরে দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে কুড়িগ্রামে। ফলে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী লোকজন রয়েছে চরম বিপাকে।
রবিবার সকালে কুড়িগ্রামে ও তেতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পরেছে ছিন্নমুল মানুষ। কৃষি শ্রমিক ও সর্বনিম্ন আয়ের সাথে যুক্ত শ্রমজীবীরা কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশার মধ্যে নেমে পরেছে উপার্জনের কাজে। ফলে নাকাল অবস্থা দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষজনের। শহরের উপকণ্ঠে, বাঁধের রাস্তায় এবং চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন তীব্র ঠান্ডায় অসহায়ভাবে জীবন যাপন করছে। একদিকে কাজের সংকট অপরদিকে মাটির বিছানায় সন্তানদেরকে নিয়ে জুবুথুবু অবস্থায় কাটছে তাদের দিন।
নদী ভাঙনের শিকার রিকসা চালক ইব্রাহিম আলী বর্তমানে কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে খোলা জায়গায় প্লাস্টিকের বস্তা টানিয়ে ঝুপড়ি ঘরে সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আক্ষেপ করে তিনি জানালেন, হামাকগুলাক কাঁইয়ো দেখে না। সরকার বলে জায়গা দেয়। কিন্তু মেম্বর-চেয়ারম্যানরা কোন খোঁজখবর নেয় না।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান রহিম আহমেদ রিপন জানান, কুড়িগ্রামে মাঝারি শৈত প্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। সরকারিভাবে যেসব শীতবস্ত্র দেয়া হয়; সেটিও অপ্রতুল। মধ্যবিত্ত আর নিম্ন বিত্ত মানুষদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে শীতবস্ত্রের মূল্য হ্রাস করার দাবী জানান তিনি।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র সরকার জানান, রবিবার সকালে কুড়িগ্রাম ও তেতুলিয়ায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মাসে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে তিনি জানান।
এদিকে জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, জেলার জন্য বরাদ্দ ৩৫ হাজার পিচ কম্বল ৯ উপজেলায় বিতরণ হয়েছে। এছাড়াও মন্ত্রণালয় হতে ৬লাখ করে ৯টি উপজেলায় ৫৪লাখ টাকা শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুকনা খাবার বরাদ্দ মজুদ রয়েছে ৯হাজার প্যাকেট এবং শীত মোকাবেলায় হতদরিদ্রের জন্য আরো এক লাখ কম্বল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।