রুহুল আমিন রুকু, কুড়িগ্রাম থেকে: কুড়িগ্রাম কয়েকদিনের টানা বর্ষণে নিম্নাঞ্চলে পানি জমিয়ে থাকায় ধরলা ও ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। এতে জেলার সদর উপজেলা সহ উলিপুর, রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী উপজেলার চর অঞ্চলের নিচু জমিতে আধা পাকা জমির ধান গাছ অর্ধেক তলিয়ে গেছে। কৃষকেরা আরও ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কায় কেটে নিচ্ছে আধা পাকা ধান।এখন ভবিষ্যৎ নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছে তারা । নদী ভাঙ্গনের কান্না না থামতেই চরের নিচু অঞ্চলের কৃষকের স্বপ্নের সোনার ফসল দু-একদিনের মধ্যে কাটা না হলে নদীর পানি বৃদ্ধির আশঙ্কায় আধা পাকা ধান পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের উত্তরের চর অঞ্চল নদ-নদী বিস্তৃত জেলা কুড়িগ্রাম। জেলার বিভিন্ন থানার চর অঞ্চলসহ বিভিন্ন ছড়ার ধান তলিয়ে যাচ্ছে এবার পানিতে। প্রতি বছর ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও অতি বৃষ্টিতে সর্বশ্বান্ত হয়ে যায় চর অঞ্চলের কৃষক। ধান কাটা মৌসুম শুরুর প্রাক্কালে ধূলিৎসাত হয়ে যায় এসব এলাকার কৃষকের স্বপ্ন। রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী, চর ঘুঘুমারী, সোনাপুর, চর কাজাইকাটা, খেদাইমারী, উলিপুর উপজেলার উত্তর দলদলিয়া, খামার বজরা সুখের বাতী, মশালের চর, ফুলকার চর কাজিরচর ফকিরের চর রাজিবপুর উপজেলার কোদাল কাটি, চর সাজাই, মোহনগঞ্জ, নয়ার চর।
চিলমারী উপজেলার নয়ার হাট,অষ্টমির চর, বজরা, খরখড়িয়া, ডাটিয়া পাড়া।
উলিপুর উপজেলায় সাহেব আগলা, বুড়াবুড়ি, হাতিয়া, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা পাঁচগাছী ও যাত্রাপুর বিভিন্ন চরাঞ্চল এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় ধান এখন পানির নিচে পরে আছে। আধাপাকা ধান ডুবে যাওয়ায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন এসব এলাকার কৃষক।
অনেক এলাকার একমাত্র ফসল ইরি ধান ডুবে যাওয়ায় ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছেন তারা। ধান পানিতে থাকায়, পঁচে যাওয়ার আশঙ্কায় আরো ক্ষতি এড়াতে অনেকেই আতঙ্কে আধাপাকা ধান কেটে নিচ্ছেন। এখনো অক্ষত নতুন নতুন এলাকায় যাতে পানি ঢুকে না পড়ে সে লক্ষ্যে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে রাতদিন প্রাণান্তর চেষ্টা চলছে। একদিকে কাল বৈশাখী ঝড় ও অনাঙ্ক্ষিত ভারী বর্ষণ, অপরদিকে আগাম নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আধাপাকা ইরি ধান কেটে নিচ্ছে।
একারণে চলতি মৌসুমে জেলায় ইরি ধানের উৎপাদন ব্যাপকহারে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। চর কাজাইকাটা, সোনাপুর সহ চর অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষকরা জানান, আগাম বর্ষণে ও পানি বাড়ায় তাদের সব জমির তলিয়ে গেছে। অবশিষ্ট জমির ধান এখনও পানির নিছে। উলিপুর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের বেগমগঞ্জ আকেল মামুদ ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাজেদুল করিম এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান গত কয়েক দিনে ব্রি-২৯ ধান বেশিরভাগ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।