ঢাকাFriday , 6 April 2018
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লক্ষ্মীপুরে সড়ক নির্মাণ কাজে অনিয়ম আর ধীরগতি

Link Copied!

মুহাম্মদ নোমান ছিদ্দীকী, স্টাফ রিপোর্টার: লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪০ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ যেনতেন ভাবে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সড়কটির লক্ষ্মীপুর অংশের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় ক্ষুব্ধ হয়ে একাধিকবার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল স্থানীয় লোকজন। তাছাড়া সংস্কার কাজ চলছে ধীরগতিতে। সংস্কারের জন্য রাস্তার কার্পেটিং তুলে বড় বড় গর্ত করে রাখলেও কাজ শেষ না করে ফেলে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত করে রাখায় প্রায়ই গাড়ি উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্যস্ততম চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সড়কে দুর্ভোগ নিত্যসঙ্গী করে চলাচল করতে হয় ৩০ জেলার কয়েক লাখ মানুষকে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের যথাযথ তদারকি না থাকায় ইচ্ছেমতো কাজ করছেন ঠিকাদার। এতে অনিয়ম আর ধীরগতিতে চলছে এ সড়কের নির্মাণকাজ, তাতে ভোগান্তি চরমে আকার দারণ করেছে।
সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলার উন্নয়ন সভায় লক্ষ্মীপুর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য বেসরকারী বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামালের উপস্থিতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মো. আবু তাহের ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধার সম্পাদক এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণকাজের অনিয়ম ও ধীরগতি কথা তুলে ধরে লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, সওজের কুমিল্লা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহাব উদ্দিন খান এ কাজের ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে নিজের ইচ্ছামতো প্রাক্কলন তৈরী করেছিলেন। এতে শুধু নতুন মাটির ব্যবহারের জন্যই ১৮ কোটি ৫৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা বরাদ্ধ রয়েছে। অথচ সড়ক থেকে ওঠা মাটি দিয়েই কাজটি করা সম্ভব বলে জানিয়েছে স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকাজে দুই যুগ পুরনো ইটের কণা-খোয়া ও ভিটি বালুর ব্যবহার, সড়কের পারে নতুন মাটি ব্যবহার না করা এবং নিয়ম অনুযায়ী সড়ক প্রশস্ত করণের কাজ করা হচ্ছে না। সড়ক প্রশস্ত করণের সময় পানি ব্যবহার না করায় ধূলাবালিতে চলাচলকারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এ ছাড়া ঠিকাদারের মনগড়া ট্রাফিক ব্যবস্থার কারণে প্রতিদিন তীব্র জানজট ও দুর্ঘটনায় জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সড়কে চলাচলে নষ্ট হচ্ছে বিপুল কর্মঘন্টা। এদিকে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে রায়পুরের রাখালিয়া গ্রামে ওই সড়কের কাজ বন্ধ করে দেয় গ্রামবাসী। পরে গ্রামবাসীকে নিয়মানুযায়ী কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফের কাজ শুরু করা হয়।
সওজ সূত্র জানায়, সড়কটি এখন ১৮ ফুট চওড়া রয়েছে। এটি ২৪ ফুট করা হবে। দুই পাশে ছয় ফুট সম্প্রসারণের পাশাপাশি পাঁচ ফুট করে ১০ ফুট আরো মাটি ফেলে ভরাট করা হবে। চন্দ্রগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ৭৪ কোটি ১৬ লাখ ৯৭ হাজার ৬৯ টাকা বরাদ্ধ হয়। এর মধ্যে নতুন মাটি ব্যবহারের জন্য বরাদ্ধ রয়েছে ৮ কোটি ১৯ লাখ ২৭ হাজার ১১৮ টাকা। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর থেকে রায়পুরের বর্ডার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার নির্মাণের জন্য ৫৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার ৫৭ টাকা বরাদ্ধ হয়। এর মধ্যে নতুন মাটি ব্যবহারের জন্য ১০ কোটি ৪০ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩৯ টাকা বরাদ্ধ রয়েছে। কাজ দুটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুমিল্লার রানা বিল্ডার্স। পরে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যৌথভাবে কাজে চুক্তিবদ্ধ হয় হাসান বিল্ডার্স ও মেসার্স সালেহ আহমেদ। তারা ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কাজ শুরু করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিসেম্বরে সড়কটির ৪০ কিলোমিটারের কাজ শুরু হয়। সড়কের কিছুদূর পর পর এক লেন বন্ধ রেখে অন্য লেন দিয়ে যানবাহন চলছে। শ্রমিকরা নিম্নমানের খোয়া আর বালুর মিশ্রণে ভিত্তি স্থাপন করছে। সড়কের দুই পাশে তিন ফুট করে ছয় ফুট প্রস্থস্ত মাটির বক্সকাটিং করার কথা থাকলেও বিভিন্ন স্থানে ২৭-২৮ ইঞ্চি কাটিং করা হয়েছে। এতে ওই বক্সে রোলার চাপা দিতে গিয়ে আটকা পড়তে হচ্ছে। সওজের কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকায় ঠিকাদারের লোকজন খামখেয়ালিভাবে নির্মাণকাজ করছে। নিয়মানুযায়ী বালু ও মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে না। কাজে দুই যুগ পুরনো ইট-খোয়া ও রাবিশ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সঙ্গে নামমাত্র নতুন মাটি, খোয়া ও বালুর ব্যবহার হচ্ছে। ঠিকাদারের নিয়োগ করা সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিজস্ব ট্রাফিক না থাকায় প্রতিদিনই তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সংস্কার কাজের সময় পানি না ছিটানোর কারণে ধুলাবালিতে খুব কষ্ট পাচ্ছে চলাচলকারীরা। ধুলাবালির কারণে সামনে কী আছে তাও দেখা যায় না। আশপাশের গাছপালা ও ফসলের ক্ষেত অনেকটা বিবর্ণ হয়ে গেছে। যানবাহন চালকরা নিজেদের মতো করে চলাচলের চেষ্টা করলে তীব্র যানজট হয়। এতে প্রায়ই বাস ও কাভার্ড ভ্যান উল্টে পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কটিতে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে।
বক্তব্য জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডাসের স্বত্বাধিকারী মো. আলম ও কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা নাজমুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক সওজের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের দু-একজন কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ অনিয়ম হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা কাজটি তদারকি করছি। কোনো অনিয়মের অভিযোগ কেউ করেনি। বরাদ্ধ থাকা সত্ত্বেও কাজে নতুন মাটির ব্যবহার হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে। সড়ক নির্মাণের পর কোনো সমস্যা হলে তিন বছর পর্যন্ত ওই ঠিকাদারকেই তা সংস্কার করে দিতে হবে। অব্যবস্থাপনার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।