ঢাকাMonday , 3 June 2019
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রেকর্ড গড়ে স্বপ্নযাত্রা শুরু

Link Copied!

বাংলাদেশ : ৩৩০/৬ (মুশফিক ৭৮, সাকিব ৭৫; তাহির ৫৭/২;
দ. আফ্রিকা : ৩০৯/৮ (ডুপ্লেসিস ৬২, ডুমিনি ৪৫; মোস্তাফিজ ৬৭/৩
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সাকিব আল হাসান
খেলাটা হয়ে গিয়েছিল ডুমিনি বনাম বাংলাদেশ!

লড়ছিলেন একাই বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। মোস্তাফিজুর রহমানের ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে বোল্ড হয়ে যান। সংগ্রামী ডুমিনি চলে যাওয়ার পর প্রতিরোধটা ভেঙে পড়ে প্রোটিয়াদের। প্রতিটি সেকেন্ড মনে হচ্ছিল বছরের সমান। কখন আসবে জয়, সে অপেক্ষার শেষই হচ্ছিল না। এমন দিনের অপেক্ষা করতে কারই বা ভালো লাগে! আসি আসি বলে, সময়ও পালিয়ে বেড়ায়! মোস্তাফিজ ইউ বিউটি!

উত্তাপ সহ্য করা কঠিন ছিল। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে প্রতিপক্ষের নাম দক্ষিণ আফ্রিকা বলেই এত কথা। বিশ্বকাপ না জেতা সবচেয়ে প্রতাপশালী দল প্রোটিয়া। ৩৩০ রানের সংগ্রহ নিয়ে স্বপ্ন উঁকিঝুঁকি মেরেছে। এত রান! জয় তো প্রাপ্যই, তাই না! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জমানায় সহজ তো নয়। রেকর্ড তো ভেঙে যেতেই আসে। ওভালের গ্যালারিতে ১৬ হাজার বাংলাদেশি, দেশে ১৬ কোটি মানুষ স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। সবার প্রার্থনায় বাংলাদেশ ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচটি খেলেছে। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাণে টান দিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছে টাইগাররা। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতেছিল। সেবার জয় ৬৭ রানে। এবারও জয় এলো সূচনালগ্নে। জয়ের নায়ক কাকে বলা যায়! সেটা না বলে বিশ্ব ক্রিকেটের ফেভারিটদের সামনে দাপট দেখাল বঙ্গসন্তানরা। বিশ্ব ক্রিকেট আবার শুনল বাঘের গর্জন (৩০৯/৮)।

বিশ্বকাপে স্বপ্নের মতো শুরু বাংলাদেশের। জয়-হার যেখানে কর্পূরের মতো উড়ে যায়। বিশ্বকাপে ও ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ স্কোর। সাকিব-মুশফিকের দারুণ জুটি। সাকিবের ২৫০ উইকেট ও ৫ হাজার বা ততোধিক রানের রেকর্ড ছাড়াও বাংলাদেশ শক্তির মাংশপেশি দেখিয়ে দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটকে। লন্ডনের ওভালে ৩৩০ রান করা চাট্টিখানি কথা নয়। স্বপ্নের মতো বোলিংটাও হলো। ষষ্ঠ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ জিতে চমকে দিল বাংলাদেশ

বিশ্বকাপে এত বড় স্কোর তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। ৩৩০ রান বিশাল স্কোর। দক্ষিণ আফ্রিকা তা মাথায় নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে। কুইন্টন ডি কক ও এইডেন মারক্রাম ব্যাটিংয়ে নামেন। শুরুটাও ছিল মসৃণ। ৪৯ রানে উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায়। ডি ককের ক্যাচটি নিতে পারেননি মুশফিক। বল ছুটে গিয়েছিল। দৌড়ে গিয়ে বল স্টাম্পে ছুড়ে মারেন। কক ২৩ রানে আউট হয়ে ফেরেন। প্লেসিস ও মারক্রাম স্কোর বড় করছিলেন। সাকিব তাকে বোল্ড করেন (মারক্রাম)। ৪৫ রানে ফেরেন মারক্রাম। ১০২ রানে ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

সাকিব (১৯৯ ম্যাচ) ৫০০০ বা তারচেয়ে বেশি রান ও ২৫০ উইকেট শিকারিদের তালিকায় চলে যান। তিনি জয়সুরিয়া, আফ্রিদি, ক্যালিস ও আবদুর রাজ্জাকের চেয়ে কম ম্যাচ খেলে এ মাইলফলক স্পর্শ করেন। প্ল

সিস ভয়ঙ্কর হয়ে যাচ্ছিলেন। ৬২ রানে তিনি বোল্ড হন মিরাজের বলে। মিলার ও ডুসেন এর পর হাল ধরেন। মিলারকে একবিন্দু স্বস্তি দেননি মোস্তাফিজ। ৩৮ রানে তাকে ফিরতে হলো। সাইফউদ্দিন সুপারম্যান হয়ে এলেন ডুসানকে (৪১) বোল্ড করতে। ৩৯.১ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর তখন ২২৮ রান ৫ উইকেটে। বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান সাইফ। এরপর ম্যাচ যত এগিয়েছে ম্যাচ জয়ের সুবাসও ছড়িয়েছে বাংলাদেশ। ডুমিনি ও ফেলকোয়োয়ো এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে প্রচেষ্টায় কাজ হয়নি। সাইফ আবার স্ট্রাইক করেন। ফেলকোয়োয়োর উইকেট নেন তিনি। ৪২.৫ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৬ উইকেটে ২৫২। এখানেই পিছিয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। বাংলাদেশ জয়ের দিকে যাত্রা শুরু করে। মোস্তাফিজ ৩টি ও সাইফ ২টি উইকেট নেন।

মানুষের জীবনে প্রকৃতি বড় ভূমিকা রাখে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রকৃতির রুদ্র-হাসি দেখেই জীবন কেটে যায়। বাংলাদেশের জন্যও তাই। লন্ডনে ২ দিন আগেই বেশ মেঘলা আকাশ ছিল। কাল বাংলাদেশের ম্যাচে রোদ ঝলমলে আকাশ। মাশরাফি আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ যে উইকেটে হয়েছে, সেখানেই খেলা হবে। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে কাল সেই উইকেটটিই বেছে নেওয়া হয়।

বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা ও দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ ডু প্লেসিস টস করতে নামেন। প্লেসিসের ভ্রু কোঁচকানো ছিল। ডেল স্টেইনকে নিতে পারেননি। হাশিম আমলাও ইংল্যান্ডের ম্যাচে চোট পাওয়ায় খেলতে পারলেন না। লুংগি এনগিডি পূর্ণ ফিটনেস না নিয়ে খেলতে নামেন। পরে মূল্য দিতে হয়েছে। টসে জিতে প্লেসিস ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। মাশরাফির একাদশে চোটগ্রস্ত তামিম ও পিঠের ইনজুরিতে ভোগা সাইফউদ্দিন ছিলেন। সাব্বিরকে বাইরেই থাকতে হলো। মোসাদ্দেক হোসেন স্পিন বোলার ও ব্যাটিংটা ভালো করেন। তিনি দলে জায়গা পেয়েছেন। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে অসাধারণ খেলেছিলেন। ষষ্ঠ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সেরা একাদশই পেয়েছে বাংলাদেশ। চোটের কালো মেঘ সত্ত্বেও সবাই জায়গা পেয়েছেন।

তামিম ম্যাচের দুদিন আগে ইনজুরিতে পড়েন। যদিও ম্যাচের আগের দিন তিনি নেটে ব্যাট করেন। এই ওভালে আগের দুটি ইনিংসে তামিমের ১২৮ ও ৯৫ রানের ইনিংস ছিল। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই দুটি ইনিংস খেলেন। সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে স্বপ্নযাত্রায় পা রাখেন। সৌম্য শুরুতেই স্ট্রোকের পসরা সাজিয়ে বসেন। তামিম ছিলেন ধীরস্থির। ৮.২ ওভারে তামিম ১৬ রানে আউট হন। সৌম্যের সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটি তখন ৬০ রানের। ফেলকোয়োয়োর বাউন্সার সামলাতে পারেননি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। আর সৌম্যও কিছুক্ষণ পর ৯টি ক্ল্যাসিক্যাল চার দিয়ে ইনিংসটি সাজিয়ে ৪৬ রান করে আউট হন। মুশফিক ও সাকিব তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের ইনিংসে হাল ধরেন। ১৪২ রানের জুটি উপহার দেন। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। সাকিব ৪৩তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। জুটিতে সাকিব-মুশফিক রেকর্ড করলেন।

আগের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিল ১৪১ রানের জুটি। ওভালে মুশফিক ও সাকিব তৃতীয় উইকেটে তুলে নেন ১৪২ রান। ৩৫.১ ওভারে সাকিব ৭৫ রানে আউট হন। তাহিরের বল সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন। দলের রান তখন ৩ উইকেটে ২১৭। মিঠুন এসে ঝড় শুরু করেন। তাহিরের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২১ বলে ২১ রান করেন। মুশফিকুর ৮০ বলে ৭৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে ফিরে যান। মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক তিনশ করার মিশন নিয়ে ব্যাটিং শুরু করেন। ৩৩ বলে ৪৬ রান করে উইকেটে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ (৩৩০/৬)। আর মোসাদ্দেক ২০ বলে ২৬ রান করে আউট হন। তাহির, ফেলকোয়োয়ো, মরিস ২টি করে উইকেট নেন।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।