ভোলা প্রতিনিধি ॥
ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলার সর্ব দক্ষিণে দক্ষিণ আইচা থানার অন্তরগত বঙ্গোপসাগরের কোল গেষে গড়ে রাক্ষুসে মেঘনার বুকে গঠিত হয় ’ঢালচর’ ইউনিয়ন। প্রায় ২ শত বছর আগে মেঘনা নদীর বুকে জেগে উঠে চরটি। পর্যায়ক্রমে শুরু হয় বসতী।
এখানের অধিকাংশ পরিবারগুলোই হতদারিদ্র। বিগত ১৮ বছরের অব্যাহত ভাঙনে উত্তাল মেঘনার গহরে বিলীন হয়েছে এ জনপদের অনেকাংশ এলাকা। মেঘনার তীব্র ভাঙনে ভিটে মাটি হারিয়েছে অনেকে। নিজের শেষ সম্বল হারিয়ে এ জনপদ ত্যাগ করেছেন অধিকাংশ পরিবারগুলো। আবার কেউ কেউ নিজের ভিটে মাটি নদীর মাঝে বিলীন হওয়ার পর আশ্রয় নিয়েছেন খোলা আকাশের নিচে, ঝুঁপিরী ঘরে ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে। তবুও এ জনপদের প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা স্বপ্ন দেখে এখানেই থাকার।
ঢালচরের বাসিন্দা জসিম, হারুন, আবু কালাম,তাছলিমা বেগম বলেন, এখানে প্রায় ৩০-৩৫বছর ধরে জীবন-যাপন করছি। তবে বিগত কয়েক বছরের ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এ চরের অধিকাংশ এলাকা। ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়েছে বসত ভিটা, ফসলী জমি, আশ্রয় কেন্দ্র, স্কুল-মাদ্রাসা, মসজিদসহ সরকারী বহু স্থাপনা। যার ফলে অনেকেই এখান থেকে চলে গেছে অন্যত্র। যদি খুব শিগগিরই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে পুরো ঢালচরই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন ঢালচরবাসী।
ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ সালাম হাওলাদার বলেন, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে অনেক তদবীর করেছি কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। কিছুদিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে শিগগিরই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কবে নাগাদ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। আমি দাবী করছি দ্রুত যেন ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এছাড়াও যাদের ঘর-বাড়ি ও জমি নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে তাদের জন্য সরকারী ভাবে ভূমি ও আশ্রয়স্থলের ব্যবস্থা করা হয়।
এব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ঢালচরের ভাঙন রোধে আমরা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢালচরের ভাঙন রোধে কাজ শুরু হবে।
এব্যাপারে ভোলা পওর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলম জানান, ঢালচরের ভাঙন রোধে আমরা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রকল্পটি পাশ হলে খুব দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। এরপর আর ঢালচরের ভাঙন থাকবে না।