ঢাকাTuesday , 8 December 2020
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গোবিন্দগঞ্জের লিটন হত্যাকান্ডের মাষ্টারমাইন্ড ১০ ঘন্টার মধ্যে আটক,চাকু ও মোবাইল উদ্ধার এবং স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান

Link Copied!

এনবি নিউজ ৭১ঃ
সামান্য কিছু টাকা লেনদেনের জটিলতার কারণে নৃশংস ভাবে গলা কেটে ও বুকের মধ্যে চাকু ঢুকিয়ে খুন হতে হয় ভাগদরিয়া গ্রামের যুবক লিটন(২২) কে। লিটন পিতা আশরাফ জীবিকার তাগিদে কখনো রিকশা কখনো কুলিগিরি করতে গিয়ে মাদক সেবনে জড়িয়ে পরে।বৃদ্ধ বাবা ছেলের এমন অবস্থা দেখে চোঁখে সরিষা ফুল দেখতে থাকে, আর তখন পারিবারিক সিদ্ধান্তে লিটন কে বিয়ে দেয়।এরপরে লিটন নেশার জগত থেকে বের হয়ে বাবার সাথে গোবিন্দগঞ্জ জেপি ফিলিং স্টেশনের পাশে চা- সিগারেটের দোকানে বসতে থাকে। কিন্তু তার নেশাগ্রস্ত ঘাতক বন্ধুরা তার পিছু ছাড়ে না। তাঁরা সব সময়ই লিটন কে নেশার জগতে টানতে থাকে। এরই মধ্যে এই হত্যাকান্ডের মাষ্টারমাইন্ড আসামি নুর হোসেন (৩৮) পিতা বাচ্চা মিয়া সাং ভাগদরিয়ার অনুরোধে লিটন রব্বানী নামের এক ব্যক্তির নিকট হতে নিজ দায়িত্বে ৫ হাজার টাকা সুদের উপর নিয়ে দেয় এবং ওপর আসামি রনি মহন্ত(৩০) পিতা বিশু ড্রাইভার সাং বর্ধনকুঠির সাথে ১৫ হাজার টাকার লেনদেন জটিলতায়ও জড়িয়ে পরে।
এসব তুচ্ছতাচ্ছিল্য বিষয়ে ঘাতক নুর হোসেন, রনি ও আর একজন মিলে পরিকল্পনা করে লিটন কে হত্যা করার।সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩ ডিসেম্বর ‘২০ খ্রিঃ সারাদিন দোকানদারি করে রাত ৯ টায় লিটন ও তার প্রতিবেশী চাচা আতিউর মিলে জেপি পাম্পের সামনে হতে রিকশা নিয়ে বাড়িতে যাবার জন্য রওনা দেয়। কিছুদুর যাবার পরই ঘাতক নুর হোসেনের ফোন আসে লিটনের ফোনে। বন্ধু নুর হোসেন জরুরি কথার টোপ দিয়ে লিটন কে দেখা করতে অনুরোধ করলে লিটন সৎ বিশ্বাসে বিয়াই মোড়ে গিয়ে সাথে থাকা কেতলি রেখে খানাবাড়ির হিমুর দোকানের পাশে এসে নুর হোসেন,রনি ও অপর একজনের সাথে একত্রিত হয়। তথায় পাওনা টাকা সংক্রান্তে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হলে পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসাবে তাঁরা লিটনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করে এবং তাদের অনুরোধে লিটন তাদের সাথে গাঁজা সেবনে রাজি হয়। গাঁজা সেবনের এক ফাঁকে বন্ধুবেশি ঘাতকরা পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লিটন কে জুসের কথা বলে ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো জুস পান করিয়ে দেয় । ইতোমধ্যে অপর আসামি আনোয়ার(২২) পিতা জামরুল সাং ভাগদরিয়া তথায় উপস্থিত হলে সকলে মিলে তথ্য যাতে ফাঁস না হয় সেজন্য কৌশলে আনোয়ার কে সাথে নেয়।
এরপর তাঁরা সবাই মিলে লিটন কে নিয়ে বুজরুক বোয়ালিয়ার জনৈক মামুনের প্রাচীর ঘেরা সবজি বাগানের মধ্যে নিয়ে গিয়ে পুনরায় ইয়াবা সেবন করে বেশ কিছু সময় অতিবাহিত করে। এবং ৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাত অনুঃ ১২.১৫ ঘটিকার পর তথা হতে প্রাচীর টপকিয়ে জনৈক আবুলের নিরিবিলি কলা বাগানে ঢুকে পরে। ইতোমধ্যে লিটন বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন করায় নিস্তেজ হয়ে পরার সুযোগে বন্ধুবেশি ঘাতকেরা লিটনের গলা কেটে ও বুকের মধ্যে চাকু ঢুকিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা করে মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা নিজ নিজ বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।

পরের দিন ৪ ডিসেম্বর সকাল অনুঃ ১০ টায় মোবাইলে অজ্ঞাত ব্যাক্তির গলা কাটা মৃতদেহ বুজরুক বোয়ালিয়া আবুলের কলা বাগানে পরে থাকার খবর পেয়ে ওসি মেহেদী, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আফজাল, এসআই মামুন,আরিফ সহ পুলিশের বড় একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এবং খবর পেয়ে এএসপি পলাশবাড়ী সার্কেল জনাব আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

অফিসার ইনচার্জ মেহেদীর নেতৃত্বে ও সিনিঃ এএসপি আসাদুজ্জামানের নির্দেশনায় শুরু হয় নৃশংস হত্যাকান্ডের তদন্ত কার্যক্রম। তদন্ত টিমের সদস্যরা লিটনের পরিবারের সাথে কথা বলে এবং লিটনের ফোন আসা কলের সুত্র ধরে তদন্ত শুরুর ১০ ঘন্টার মধ্যে রাত অনুঃ ৯টায় হত্যাকান্ডের মুলহোতা নুর হোসেন সহ সন্দিগ্ধ আরো দু’জন কে আটক করে। কিন্তু রাতব্যাপি জিজ্ঞেসাবাদে নুর হোসেন কোন ভাবেই হত্যার দ্বায় স্বীকার করে চায়না।পরের দিন ৫ ডিসেম্বর নুর হোসেন ও গ্রেফতার কৃত ইয়াবা বিক্রেতা বুজরুক বোয়ালিয়ার একরাম দ্বয়কে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত দুই আসামির দুদিন করে রিমান্ড মন্জুর করায় আসামি দ্বয়কে পুনরায় জিজ্ঞেসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়।ইতোমধ্যে গাইবান্ধা RAB এর একটি দল আসামি আনোয়ার কে আটক পূর্বক থানায় হস্তান্তর করে।

তখন দুই আসামির মুখোমুখি জিগ্যেসাবাদে আসামি নুর হোসেন ও আনোয়ার দ্বয় হত্যার দ্বায় স্বীকার করে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে। এবং আসামি নুর হোসেনের দেখানো মতে ৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত অনুঃ ২.৪৫ ঘটিকায় হামদার্দ এর উত্তর পাশে আয়েদুলের ভলকানাইজিং এর দোকানের পিছনে ময়লা আবর্জনার মধ্যে হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহ্রত চাকু ও লিটনের টাচ ফোনটি উদ্ধার করা হয়।

পরের দিন ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব পার্থভদ্র এর আদালতে আসামি আনোয়ার নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।এবং ঐ দিন সন্ধায় অপর আসামি রনি মহন্ত কে রাজমতি মার্কেটের পাশে হতে আটক করা হয়।

অদ্য ৭ ডিসেম্বর আসামি রনি কে আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মন্জুর করে ও সন্ধ্যায় রিমান্ডে থাকা আসামি নুর হোসেন নিজে কে জড়িয়ে একই আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

এই নৃশংস ক্লু লেস হত্যাকান্ডের তথ্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার, হত্যাকান্ডে ব্যবহ্রত অস্ত্র ও মৃর্ত লিটনের মোবাইল ফোন উদ্ধার এবং আসামিদের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান নিশ্চিত করণে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ চ্যালেন্জ হিসাবে গ্রহণ করে ছিলো। সেই সাথে সার্বিক মামলা তদন্তে দিক নির্দেশনা প্রদান করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন গাইবান্ধা জেলা পুলিশের কর্ণধর পুলিশ সুপার জনাব মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।