ঢাকাSunday , 24 May 2020
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

করোনাকে পরাজিত করতে মানসিকভাবে শক্ত আমি, র‍্যাব-৪ অধিনায়ক মোজাম্মেল

Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট: গত কয়েকদিন ধরেই করোনাভাইরাস (কভিড ১৯) আক্রান্ত হয়েছেন র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব-৪) অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মোজাম্মেল হক। তিনি নিজ বাসায় আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথা ফেইসবুকে বেশ সক্রিয় তিনি। আজ শনিবার দুপুরে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন করোনাকালের নানা অভিজ্ঞতা ও বাস্তবত কথা।

ওনার ফেইসবুক পোস্ট এর লেখাটি খুবহু নিচে তুলে ধরা হলো-
গত ৩ দিন একাকী আইসোলেশনে আছি । একটি নির্দিষ্ট কক্ষের মধ্যে এখন আমার বিচরন হলেও লক্ষ লক্ষ মানুষের শুভকামনা এবং প্রার্থনার একটি অপার্থিব ভালবাসা আমার তনুমন এবং হৃদয় জুড়ে আছে। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই ভালভাবেই চলছে। আল্লাহর অপার করুণা এবং দয়ায় আমি শারীরিকভাবে এবং মানসিকভাবে সুস্থ আছ। এখন পর্যন্ত করোনার কোন উপসর্গ অনুভব করছিনা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে Prescribed ঔষুধ খাচ্ছি। মসলা চা, গরম পানির গার্গল আর steem inhalation ( নাক মুখে গরম পানির ভাপ) নিচ্ছি। আমি মানসিকভাবে শক্ত মানুষ। আমি করোনাকে খুব দ্রুত পরাজিত করতে চাই। ইনশাল্লাহ আর কয়েকদিন দিন পরেই আবার করোনা টেস্ট করাবো।
আমি করোনা পজিটিভ বন্ধুদের বলবো এটি অন্যান্য ভাইরাল ফ্লুর মতই একটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ।তবে আমি মনে করি করোনা আক্রান্ত হলে উচ্চ মনোবল বজায় রাখা জরুরী। শারীরিক বড় ধরনের অসুখ বিসুখ না থাকলে করোনা আপনাকে পরাস্ত করতে পারবেনা। বাংলাদেশে করোনায়া মৃত্যুহারশ১.৫% এরও কম। অধিকাংশ করোনা পজিটিভ রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। ৭ ০ উর্ধ বয়সের হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত একজন করোনা থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন গতকাল এমন একজনে সংগে আলাপ হলো। তিনি এক সপ্তাহের ঘরোয়া চিকিৎসায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন। কাজেই করোনা আক্রান্ত হলেই ভয় পাবেন না বা মনোবল হারাবেন না। ভয় পেলে বা মনোবল হারালে আপনি অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে করোনা রোগে কিছু মানুষ দুঃখজনকভাবে মারা যাচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ন অন্য রোগে আক্রান্ত এবং স্বল্প ইমুউনিটি সম্পন্ন মানুষ করোনা যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন। তবে ব্যতিক্রমও আছে । অনেক সময় মারত্মক করোনা আক্রান্ত হয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ কিছু মানুষ মারা যাচ্ছেন। আমরা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী মানুষ। কাজেই করোনায় কারো মৃত্যু নির্ধারিত থাকলে শ্রষ্টার ইচ্ছার বাস্তবায়ন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আমাদের কারো নেই। তবে মহামারীর সময় কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলা বাধ্যতামূলেক। বৈশ্বিক করোনা মহামারী প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা অত্যন্ত জরুরী। জরুরীকাজে বাইরে বের হলে অবশ্যম্ভাবি যথাপোযুক্ত মাস্ক পরিধান করতে হবে। কিছু সময় পর পর ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধৌত করা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হ্যান্ডরাব ব্যবহার করতে হবে। করোনা আক্রান্ত হলে তাকে অবহেলা করে দূরে ঠেলে না দিয়ে পরামর্শ দিন এবং তাঁর সাহস ও মনোবল যোগানো জরুরী। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইমুউনিটি আমাদের বড় হাতিয়ার।কাজেই ইমুউনিটি বাড়াতে হলে আমাদের যতদূর সম্ভব কার্বাইডেটের পাশাপাশি দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, ডাল, শাকসবজি এবং দেশী ফলমুল খেতে হবে। শারীরিক সুস্থতার জন্য কায়িক পরিশ্রম বা দৈহিক ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরী। আমি অনেকদিন পর একাকী বদ্ধ ঘরে সময় কাটাচ্ছি। এটা ঠিক সময় কাটছেনা। তবে বই পড়ে, ধর্মকর্ম করে আর আপনাদের সংগে অনলাইনে আড্ডা দিয়ে সময় কেটে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার প্রতি লক্ষ লক্ষ মানুষের আবেগ এবং ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখে সত্যই আমি বিস্মিত, অবিভুত এবং আবেগাপ্লুত।

আমি একজন অতি নগন্য প্রজাবন্ত্রের কর্মচারী।আমার কর্মকালে অসহায় সাধারন মানুষের জন্য তেমন কিছুই করতে পারিনি। অথচ আমার পূর্বের কর্মস্থল জয়পুরহাট, বগুড়া, নওগাঁ এব জন্মস্থান পাবনার কয়েকশত মসজিদ আমার জন্য দোয়া হয়েছে। সহস্রাধিক মানুষ ফোন করায় একসময় আমার ফোন হ্যাং হয়ে যায়। আমার প্রতি আপনাদের এই আবেগ, স্নেহ, মায়া, ভালবাসা সত্যই অবর্ননীয়। আপনাদের এত মানুষের আমাকে নিয়ে আবেগ, উদ্বেগ, উৎকুণ্ঠা আপনাদের নিকট আমাকে চির ঋণী করে রাখলো। আমি সত্যিকার অর্থে চির ঋণী হয়ে গেলাম। অত্যন্ত দুঃখিত ইচ্ছা থাকা সত্তেও আপনাদের অধিকাংশের ফোনকল আমি রিসিভ করতে পারিনি এমনকি মেসেজের উত্তর দিতে পারিনি। দোয়া করবেন কয়েকদিনের মধ্যেই যেন করোনা নেগেটিভ হয়ে আবার আপনাদের মাঝে ফিরে এসে করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে শামিল হতে পারি। আমি এই মূহুর্তে করোনা যুদ্ধের ফ্রন্টলাইন ফাইটার ডাক্তার, নার্স, টেকনোলজিস্ট এবং হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডারদের গভীর ভালবাসা, কৃতজ্ঞতা এবং বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।