ঢাকাWednesday , 12 June 2019
  • অন্যান্য
  1. আন্তর্জাতিক
  2. করোনা আপডেট
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. জেলার খবর
  6. দেশজুড়ে
  7. নির্বাচনের হাওয়া
  8. প্রচ্ছদ
  9. প্রচ্ছদ
  10. ফিচার
  11. বিনোদন
  12. রাজনীতি
  13. শিক্ষা
  14. সকল বিভাগ
  15. স্বাস্থ্যর খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের মা মনোয়ারা বেগম ছেলেকে পুরস্কৃত করার দাবি জানালেন!!

Link Copied!

উজ্জ্বল রায়, যশোর শহরের চাঁচড় থেকে ফিরে■ যশোর শহরের চাঁচড়া ডালমিল এলাকায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়ি। পৈতৃক দোতলা বাড়িতে ছোট দুই ভাই ও একমাত্র বিবাহিত বোন ও মা থাকছেন। মোয়াজ্জেমের স্ত্রী-সন্তানদের কেউ এখানে থাকেন না।
ওসি মোয়াজ্জেমের সজনরা জানান, আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই তার। কোথায় আছেন, কেমন আছেন, সেটিও তাদের জানা নেই।ছেলেকে পুরস্কৃত করার দাবি জানিয়েছেন ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের মা মনোয়ারা বেগম। মঙ্গলবার মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলে জীবনে কোনো অন্যায় কাজ করেনি। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার ছেলে নিরাপদে ফিরে আসুক, এটাই আমার দাবি। নুসরাত হত্যার বিচার হোক। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। আমার ছেলেকে পুরস্কৃত করা উচিত, আমার ছেলের জন্যই নুসরাতের হত্যাকারীরা ধরা পড়েছে।
নুসরাতের ‘ভিডিও ভাইরাল করার’ অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামি সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন এখন নিরুদ্দেশ। পৈতৃক বাড়ি যশোরেও খোঁজ মিলছে না তার।
ওসি মোয়াজ্জেমের বাবার নাম খন্দকার আনসার আলী। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি বড়। তার এক ভাই সৌদি আরবে ও আরেক ভাই আমেরিকা প্রবাসী। তাদের আদি বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা গ্রামে।
১৯৯৭ সালে উপ-পরিদর্শক পদে পুলিশে যোগদান করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। ২০১০ সালের দিকে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান। প্রায় দেড় বছর সোনাগাজী থানায় ওসির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
যশোর শহরের চাঁচড়া ডালমিল এলাকায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়ি। পৈতৃক দোতলা বাড়িতে ছোট দুই ভাই ও একমাত্র বিবাহিত বোন ও মা থাকছেন। মোয়াজ্জেমের স্ত্রী-সন্তানদের কেউ এখানে থাকেন না।
ওসি মোয়াজ্জেমের সজনরা জানান, আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই তার। কোথায় আছেন, কেমন আছেন, সেটিও তাদের জানা নেই।
নুসরাত যখন চিকিৎসাধীন ছিলেন তখনো আসামিদের গ্রেফতার না করে মামলা দায়ের বিলম্বিত করেছেন ওসি মোয়াজ্জেম। গত ৮ এপ্রিল নুসরাতের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনায় কোনো আসামি ছাড় পাবে না ঘোষণা দিলে ওসি মোয়াজ্জেমের ভিডিও ছড়ানোর বিষয়টি সামনে চলে আসে।
এরপর গত ১৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে ওসির বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করেন। ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
একপর্যায়ে ফেনীর সোনাগাজী থানা থেকে তাকে প্রত্যাহার করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। রংপুর রেঞ্জে যোগ দিলেও ঈদের পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।
গত ২৬ মে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ১৭ জুন পরোয়ানা তামিল-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়।
ওসি মোয়াজ্জেমের ভাই আরিফুজ্জামান খন্দকার বলেন, ওয়ারেন্ট জারির পর আর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি ভাই। আগে নিয়মিত কথা হতো। এখন কোথায় আছেন, কেমন আছেন জানি না।
তিনি বলেন, নুসরাত হত্যার মূল মামলা বাদ দিয়ে ভাইয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা সাইবার ক্রাইম মামলা নিয়ে বেশি তোড়জোড় শুরু হয়েছে। নুসরাত হত্যার মূল আসামিদের অনেকে এখনো গ্রেফতার হয়নি।
ভাই আরিফুজ্জামান খন্দকার বলেন, নুসরাতের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেটি আমার ভাই প্রকাশ করেননি। অন্য একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছে। এ অপরাধে সাইবার ক্রাইমের মামলা দেয়া হয়েছে। অথচ ওই ভিডিওটি নুসরাতের দেয়া বড় ডকুমেন্ট। যার ভিত্তিতে ভাই অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করেছিল। যার জন্য ভাইকে পুরস্কৃত করা উচিত ছিল। সেটি না করে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এলাকার মানুষের কাছে খোঁজ নেন, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। কর্মজীবনে কোনো অপরাধের তথ্য নেই তার। সাধারণ জীবনযাপন করেন। এ ঘটনার পর নানা রকম কথা শুনতে হচ্ছে আমাদের।
তবে ওসি মোয়াজ্জেমের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী উম্মে হানি দাবি করেন, নুসরাতের শ্লীলতাহানির ঘটনায় জড়িতদের আটক করা সহজ ছিল না। ভাই সেটি করতে পেরেছিলেন নুসরাতের বক্তব্যের ভিত্তিতে। আমাদের ধারণা, তিনি সেফটি ডকুমেন্ট হিসেবে ভিডিওটি ধারণ করেছেন। তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেননি। টেবিলের ওপর ফোন রেখে বাথরুমে গিয়েছিলেন। এ ফাঁকে তার মোবাইল থেকে ভিডিওটি হস্তান্তর হয়েছিল।
মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেন তার মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এর আগে নুসরাতের মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ওই সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন। ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পিবিআই।
পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরোয়ানা জারির দুদিন পর মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল ১১ জুন। এরই মধ্যে পালিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম।

এনবিনিউজ একাত্তর ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।